অটোয়া, মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
শেখ জলিল এর দুটি কবিতা

১) মৎসকুমারীর অভিলাষে--
মেঘ থেকে খসে পড়া শুভ্র জলকণা
তোমার কপালে জমা বিন্দু বিন্দু ঘাম
হৃদয়ে ঝরাচ্ছে কত না-বলা কথার বান-
এই মুহূর্তে এই বৃষ্টির বুনো শব্দোচ্ছাসে
নড়েচড়ে উঠছে বাঁধা ময়ূরপঙ্খী নাও
নিশীথে কুহক ডাকে দূর দারুচিনি দ্বীপে!

সেই দ্বীপের এক মৎসকুমারী জলে
সারাদিন ঘুরে ঘুরে স্থলে, কাশবনে
পাড়ের বেলাভূমিতে লিখেছে তার কাহিনি-
সাঁতার বিনা হয় না কোনও সমুদ্র রোমন্থন
ঘোর নীলজলে দেহটা বাড়িয়ে দিয়ে আগে
তবেই না বুঝতে হয় প্রণয়ে জোয়ারের টান!

নৌকা ভাসিয়ে চলো যাই দারুচিনি দ্বীপের দেশে
এই রাতে সাগর সঙ্গমে মৎসকুমারীর অভিলাষে৷

২) ছিলো না ভাবের প্রেম--
সারাক্ষণ পেরেশান, শান্তি নাই মনে
এত সন্দেহের কথা কও যে কেমনে!
চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষে গেলো দাদাজান
অভাবের সংসারে আব্বা যে হয়রান!
কেমনে শৈশব গেলো, কেমনে কৈশোর
সখ আহ্লাদের কিছু ছিলো না খবর!
পরের বাড়িতে থাকলাম সাত সাল
কপালের ফেরে এই সংসারের হাল!

ছিলো না ভাবের প্রেম, ছিলো না হাউস
ভাতের অভাবে যার থাকে নাই হুঁশ!
এখন দেখছো যারে সে নয় আসল
সারি গাছ বোঝা যায় তুললে বাকল!
কখন ফাগুন ছিলো, কখন যে শীত
দুর্ভিক্ষের বালকের আসেনি পিরীত!

শেখ জলিল
এডমন্টন, কানাডা