অটোয়া, সোমবার ৭ অক্টোবর, ২০২৪
ভাঙো অন্যায়ের শৃঙ্খল - ঝন্টু চন্দ্র ওঝা

ছোটো বেলায় এক দূরন্ত কিশোরীর সাথে সহসা পরিচয় হয় আমার। 
মেয়েটির গায়ের রঙ উজ্জ্বল গৌর বর্ণের! ছিপছিপে পাতলা, সুডৌল মাঝারি গড়ন, ওষ্ঠে সদা মিষ্টি হাসি। সে ছিলো দরিদ্র বাবা-মা'র অতি আদরের কন্যা। স্বভাব তার লাজুক প্রকৃতির! এক কথায় সে অনন্য সাধারণ একটি কিশোরী মেয়ে। 

কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তার সাথে আমার আর
দেখা হয় না!
তবু তার কচি মুখখানা
মাঝে মধ্যে আমার অক্ষিপটে অবচেতন মনে বিনা কারণেই ভেসে ওঠে। 

অবশ্য দেখা না হবার 
বেশ কিছু কারণও আছে। 

মূল কারণ হলো :
পঞ্চম শ্রেণির পড়ালেখা শেষ হবার  বড্ড আগেই মেয়েটির বিয়ের হঠাৎ 
সানাই বেজে ওঠে! 
সবাই এ ঘটনায় হতবাক হয়ে যায়। 
নিরুপায় মেয়েটি ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে 
সম্পূর্ণ অনিচ্ছায় চলে যায় তার শশুর বাড়ি।

কিছু দিন পর মেয়েটির বাবা-মার কাছে খবর এলো :
তাদের আদরের মেয়ে শশুর বাড়ির
অসহ্য অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে 
নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে জীবন নাশ করেছে।

তারপর চৌদিকে গুঞ্জন ধ্বনি উঠল:
শশুর বাড়ির লোকদের যৌতুকের 
প্রলোভনের শিকার হয়ে মেয়েটিকে অকালে আত্মাহুতি দিতে হল।

এমনি করে কতো অগণন কিশোরী-প্রাণ প্রতি ক্ষণে ঝরে যায়! 
কেউ নেই তা রোধ করবার।

আজ সময় এসেছে এসবের বিরুদ্ধে 
প্রতিরোধ গড়ে তোলবার।

সময় এসেছে গগণভেদী কণ্ঠে সকলের আওয়াজ তোলবার! 
চিরতরে বন্ধ করা হোক বাল্যবিবাহ,
বন্ধ করা হোক চরম ঘৃণিত যৌতুক প্রথা।

ঝন্টু চন্দ্র ওঝা 
মোহাম্মদপুর, ঢাকা
বাংলাদেশ