অটোয়া, বুধবার ২২ মে, ২০২৪
পিয়ানিসিমো - ফরিদ তালুকদার

পথটায় এখনো আমি হাঁটি
হাঁটি প্রায়শই---

একটা নবীন পাতার দৃষ্টিকে ছুঁয়ে যাই
রাতের শূণ্যতাকে উসকে দিতে ঝরা পাতার গুঞ্জন, কিংবা তারও চেয়ে অনেক বেশি কিছু যারা-
ওরাই আমার সাথী তখন
আমি হেঁটে যাই জন্ম-মৃত্যুর মিমাংসিত দুই সীমান্তের পথ ধরে!

একমাত্র অনুভূতিই তো জানে-
মানুষ মঙ্গলগ্রহে পা রাখার স্বপ্ন দেখলেও-
কিছু বোধ, কিছু অনুভূতিকে তুলে ধরার যথার্থ কোনো শব্দ এখনো তারা আবিস্কার করতে পারেনি
অথবা-
এ-ও কি কেবল আমারই আরেক ব্যর্থতা? 
জানি না!

স্মৃতির দুঃশাসনকে কে কবে উপেক্ষা করতে পেরেছে?

একটা প্লেটে গোটা চারেক সিঙ্গারা, দু'কাপ চা, এই নিয়ে শাহবাগের কোহিনুরে মুখোমুখি দু'জন 
অথবা তুলে আনতে পারি-
টিএসসি, তিন নেতার মাজারের উল্টো পাশ, একাডেমি বটতলা, দোয়েল চত্বর...
কিছু না বলেই উতল করে দিয়ে যাওয়া মদ্যপ ফাগুন হাওয়া, আর তারই পাশাপাশি চলা-
নকশাল বাড়ি আন্দোলন, চরু মজুমদার, সিরাজ শিকদার...
দেয়াল চিকায় লেনিন কিংবা মাও, উত্তপ্ত রাজপথ...

নাহ্---
ওগুলো-ও এখন খুবই মামুলি বিষয়
বুকের জমিনে পরিত্যাক্ত কোনো পোড়ো বাড়ির ধুন!

জরিপ বলে পৃথিবীতে দু'পায়ীদের সংখ্যা এখন সাত বিলিয়নের  উপর
তবে হৃদয়ের সংখ্যা কতো ও আমি এখনো সঠিক জানি না 
প্রয়োজন-ও বোধ করি না আর!

একটু একটু করে গভীর থেকে গহীনে-
পথ হাঁটি আমি নির্বাক নিঃসঙ্গতার হাতে হাত রেখে
নিশি নিঝুম হ'লে-
টুপটাপ জলফোঁটার মতো অমৃতের অনল হয়ে-
ঝরে পড়ে কোথাও পিয়ানোর সুর
যার উৎস আমি খুঁজে পাই না কিছুতেই!

আলোকবর্ষ দূরত্বের কোনো গন্তব্যকে সামনে রেখে, অভিযাত্রী এ মন তখন বলে উঠে-
কেন তুমি ফিরে আসো সঙ্গীত!?---
দুর্বিনীত মহাকাল তার নির্দয় ডানায়-
এ জীবন থেকে তোমাকেও যে নিয়ে গেছে বহুদূর!---

ফরিদ তালুকদার
টরন্টো, কানাডা