অটোয়া, শনিবার ২৭ জুলাই, ২০২৪
আশ্রম এর লেখক, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ –কবির চৌধুরী

মাথার পাশে রাখা সেলফোনের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। চোখ খুলে ফোন হাতে নিয়ে দেখলাম পরিচিত নাম। হ্যালো বলতেই হাসিমাখানো প্রশ্ন! এখনও ঘুমুচ্ছেন? ক্লাস নেই? বললাম, ছিল কিন্তু ফাঁকি দিচ্ছি! আবারও সেই মায়াময়ী কণ্ঠের আবেগ আর সংশয়মিশ্রিত প্রশ্ন- শরীর খারাপ? বললাম, না! শরীর খারাপ না। ব্রাইটস্পেসে আজ রাত ১২টার আগে একটা এসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। দু’সপ্তাহ আগের এসাইনমেন্ট, লিখছি লিখছি করে লেখা হয়নি, গতরাতে লেখা শুরু করেছি, আজ সারাদিন লাগবে মনে হয়- সেজন্য ক্লাসে যাইনি। যাক, আপনার কথা বলেন। আজ, অফিসে যান নাই- না বাসা থেকে অফিস করছেন?
-না, আজ কাজ করছি না। সিক কল মাইরা দিছি!
-তাহলে আপনিও আমার মত ফাঁকিবাজ!
-বলতে পারেন!
-ত, কি মনে করে এত সকাল সকাল ফোন করলেন?
-সুযোগ নিলাম! আপনার সাথে ঝগড়া করুম!
-আমার মত নিরীহ মানুষটির সাথে ঝগড়ার হেতুটা কি?
-আছে, আছে, দেখা হলে বলমু!
-মানে! আমাদের দেখা হচ্ছে?
-হ, রেডি হন, ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আসছি!

আমার এই ফ্রেন্ড যার সাথে আমার আত্মার এক আজব সম্পর্ক, কানাডাতেই পরিচয়। বিপদে আপদে কোন কিছু চিন্তা না করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে দ্বিধা করেন না। আমাকে শুধু প্রয়োজনের কথাটি বলতে হয়। আমার এই অতি প্রিয় বন্ধুটি ঘণ্টা দুই পরে এসে গাড়িতে তুলেই বললেন-
-জানি, আপনার পড়াশোনার ক্ষতি হবে, তারপরেও আপনার সাথে লাঞ্চ করার লোভ সামলাতে পারলাম না, তাই একটু দেরি করে আসলাম। কিছু মনে করবেন না।
-আরে বাবা, ওসব বাদ দেন। আমি ফোনের স্ক্রিনে আপনার নাম দেখেই বুঝেছিলাম আজ ও আমার এসাইনমেন্ট জমা হবে না। প্রফস’র কাছ থেকে সময় নিতে হবে। এখন বলেন, কি নিয়ে ঝগড়া করবেন?
-না, আজ আর ঝগড়া করুম না। আপনার ক্লাস নেই শুনতেই ঝগড়ার মুড চলে গেছে।
-তারপরেও একটু করে বলেন, ব্যাপারটা কি?
-আর কি, আপনার অনুষ্ঠান! টিকেট বিক্রি করতে দিছেন না। 
-টিকেট বিক্রি হচ্ছে না? 
-না- না-, তা হচ্ছে! তবে, নানা জনের নানা মত, নানা প্রশ্ন! বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে শেষ!
-ওহ, তাই! তাহলে বলেন, শুনি কি মত আর কি প্রশ্ন!
-এই তো, এত শিল্পী কেন? এতসব শিল্পী আর আবৃত্তিকার দিয়ে অনুষ্ঠান করার কারণ কী? দু’তিন জন শিল্পী আর তি’চার জন আবৃত্তিকার দিয়েই অনুষ্ঠান সাজানো উচিত ছিল, ইত্যাদি।
-এগুলো কিছু না। আমিও এরকম প্রশ্নের সম্মুখিন হচ্ছি। 

প্রিয় পাঠক উপরের কথাগুলো কোন গল্প বা উপন্যাসের পটভূমি নয়। এই বাক্যগুলো গতকালকে পাওলার সাথে আমার আলাপের অংশবিশেষ, যা অটোয়া থেকে প্রকাশিত বাংলা সাহিত্য পত্রিকা “আশ্রম” এর নিম্নে বর্ণিত অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে।

“আশ্রম” এর ১৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত “আশ্রম সংঙ্গীতানুষ্ঠান”
তারিখঃ ৩ ডিসেম্বর রবিবার
দর্শকদের জন্য হলের দরজা খোলা হবে ৩-৪৫ মিনিটে
অনুষ্ঠান শুরু হবে ঠিক সন্ধ্যা ৪-০০ টায় এবং শেষ হবে রাত ৮-০০ টায় 
স্থানঃ কৈলাস মিতাল থিয়েটার, কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়
টিকেটঃ ১৫ ডলার
ফ্রিঃ গাড়ী পার্কিং (১ নাম্বার লট) আগে আসেন ভিত্তিতে
অংশগ্রহণেঃ অটোয়ার স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ

এবার আমরা অটোয়ার একঝাক শিল্পী ও কলাকুশলি নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছি। প্রথমতঃ দেখতে দেখতে “আশ্রম” এর প্রকাশনার ১৫ বছর পূর্ণ হয়ে গেল। আর দ্বিতীয়তঃ মহামারী কোভিড-১৯ এর ভয়াল থাবা থেকে মুক্তি। ২০২০-২০২২ সময়টা মানবজাতীর জন্য ছিল ভয়ঙ্কর এক সময়। আমরা স্বপ্নেও কল্পনা করি নাই যে, এরকম এক অবস্থার মধ্যে আমাদেরকে প্রায় ৩ বছর সময় কাটাতে হবে। সামাজিক এবং আন্তর্জাতিকভাবে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন এক সমাজে আমরা বাস করেছি, হারিয়েছি বহু আত্মীয়-স্বজন আর বন্ধু-বান্ধব। একবিংশ শতাব্দীর মানব সমাজের প্রাত্যহিক জীবন আর চিন্তার সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে যায় “মৃত্যু” নামক এক অজানা ভয়ের। কখন কি হয় এই নিয়ে তটস্থ ছিল প্রতিটি মানুষ। যমে-মানুষের টানাটানিতে অবশেষে জয় হয়েছে মানুষ আর বিজ্ঞানের। 

৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য “আশ্রম সঙ্গীতানুষ্ঠান” মহামারী কোভিড পরবর্তী সময়ে “আশ্রম” আয়োজিত প্রথম কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যদিও আগস্ট মাসে আমরা বীরমুক্তিযোদ্ধা শাহেদ বখত ময়নুর “আমার মুক্তিযুদ্ধ” গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব করেছি। তাই আমরা যখন “আশ্রম” এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালনের চিন্তা করি তখনই সিদ্ধান্ত নেই যে, পত্রিকার ১৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান আর এই শতকের মহামারী কোভিড-১৯ এর রাহুগ্রাস থেকে মুক্তি পাওয়াকে একসাথে সেলিব্রেশন করবো। আশ্রম সম্পাদক সুলতানা শিরীন সাজির খুব প্রিয় একটি বাক্য “জীবনে বেঁচে থাকাটাই আনন্দের”, প্রায় সময়ই উনি বাক্যটি আওড়ান। আসলেই তো বেঁচে থাকাটা বিরাট আনন্দের।  সে জন্যই শহরের অধিকাংশ শিল্পী ও কলাকুশলিদের নিয়ে আমাদের এই আয়োজন। এখানে আমরা আমাদের মতামত এবং চাওয়াকেই প্রাধান্য দিয়েছি, এবং একজন দর্শক তাতে ভিন্ন মত পোষণ করতেই পারেন। পাওলার সাথে এসব আলাপ করতে করতেই আমি হারিয়ে যাই অন্য এক জগতে, যে জগতে আমি শুধু পেয়েছি আর পেয়েছি… 

দুই হাজার নয় থেকে দুই হাজার তেইশ। হিসাব করলে এক যুগের বেশি, না করলে মনে হবে এই তো সেদিন! আমার কাছে হিসাবের জটিল এই মারপ্যাচ সবসময়ই জটিল। যাপিত জীবনের লম্বা সময়ে এখনও হিসাবটা ঠিকমত বুঝে উঠতে পারিনি। সেজন্যই হয়তো এখনও সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখি- চলার পথে অনেক কিছু মিলানোর চেষ্টা করি। এধরনেরই এক স্বপ্ন ও জীবনের সহজ-সরল হিসাব-নিকাশ ছিল খৃষ্ট্র্রীয় ক্যালেন্ডারের ২০০৯ সাল। ঐ সময়টায় অটোয়া থেকে বাংলা সাহিত্য পত্রিকা “মাসিক আশ্রম” প্রকাশিত হতে শুরু করে। মাসিক আর কাগজের পত্রিকা হিসেবে “আশ্রম” এর আত্মপ্রকাশ হলেও এখন তা অনলাইনে “ashrambd.com” হিসেবে প্রকাশিত হচ্ছে। এবছর ডিসেম্বরে “আশ্রম” প্রকাশের পনর বছর পূর্ণ হবে। সময়ের হিসাবে “আশ্রম” প্রকাশের সময়কাল পনর বছর আগে হলেও আমার কাছে মনে হয় এই তো সেদিন পত্রিকাটি প্রকাশিত হল। এখনও স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে সেই সময়ের কথা। কানাডার রাজধানী অটোয়ায় “আশ্রম” নামক একটি পত্রিকার জন্মের কথা। বিশেষ করে প্রথম দিন প্রেস থেকে পত্রিকা নিয়ে আসার কথা মনে হলে নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হয়। আমার মনে আছে, প্রেস থেকে পত্রিকা আনতে হাজার খানেক ডলারের প্রয়োজন ছিল। মনে করেছিলাম কোন না ভাবে ব্যবস্থা হয়ে যাবে। কিন্তু হয় নাই। মন খারাপ করে বাসায় বসে আছি। ছোট ভাই শাহীন জিজ্ঞেস করলো- “আজকে না পত্রিকা পিকআপ করার কথা? তুমি দেখি এখনও ঘরে?” বললাম, “দেখছছ না, বাইরে খুব স্নো পড়ছে। আজ আর পত্রিকা আনতে যাইরাম না। কাইল আনমু।“ শাহীন প্রতোত্তরে বললো, “বুজরাম, টাকা নাই। যাও গাড়ী স্টার্ট দেও। আমি আইরাম।” এই যে দু’ভাই গিয়ে পত্রিকা আনলাম, তারপরে স্থানীয় বাঙালি দোকান, পরিচিত বন্ধুবান্ধব, মন্ট্রিয়েল, টরন্টোসহ বিভিন্ন শহরে দেওয়া শুরু করলাম- যা বিরতীহীনভাবে চলেছে “আশ্রম” অনলাইনে ২০১৭ সালে প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত। 

২০১৭ থেকে পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে নতুন আঙ্গিকে আর নতুন ভাবধারায়। এখন অনলাইনে যখন “আশ্রম” দেখি তখন মনে হয়, কেমন করে কি হয়ে গেল? শুরুতেই যে পত্রিকা হারিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সে পত্রিকা এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের চোখের সামনে প্রতিনিয়ত ভেসে উঠছে। এইজন্য আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ ওয়েব ডিজাইনার, আমার মামাতো ভাই রাজু (রাজ্জাকুর রশীদ, বাংলাদেশ),বন্ধুবর আবেদ ভাই (ইঞ্জিনিয়ার আবেদুর রহমান, বাংলাদেশ) এবং মামাতো ভাই জাবেদ (জাবেদুর রশীদ, ইংল্যান্ড), এবং লেখক শাহীনূর ইসলাম প্রমুখদের কাছে। তাদের উৎসাহ আর অনুপ্রেরণায় পত্রিকাটির অনলাইন ভার্সন করা। বর্তমানে “আশ্রম” অনলাইন নির্ভর পত্রিকা হলেও তার শুরু কাগজের পত্রিকা হিসেবে। কাগজের পত্রিকাতে অনেকেই তাদের শ্রম দিয়েছেন, বুদ্ধি-পরামর্শ, উৎসাহ দিয়েছেন। এই শুভক্ষণে আমি তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানাই। বিশেষ করে, “আশ্রম” এর একঝাক লেখকের কাছে আমি ঋণী। তাঁদের লেখা ছাড়া কোন অবস্থাতেই “আশ্রম”-কে বর্তমান অবস্থায় নিয়ে আসা যেত না। “আশ্রম” এর সুখে-দুঃখে সাথে থাকার জন্য সবাই আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন এবং আশা করবো সবসময় আপনাদের মূল্যবান লেখা দিয়ে পত্রিকাটিকে পাঠকনন্দিত ও সৃজনশীল সাহিত্য পত্রিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহযোগিতা করে যাবেন। 

“আশ্রম” প্রকাশের শুরু থেকেই আমি আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, ব্যবসায়ী, এবং কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী বাঙালি লেখক ও পাঠকদের কাছ থেকে অফুরন্ত ভালবাসা পেয়েছি। তৎকালীন সময়ে হাজার দুয়েক বাংলাদেশি অধ্যুষিত শহর অটোয়া থেকে পত্রিকা প্রকাশের সময় তাঁদের সহযোগিতার কথা লিখতে গেলে এই দু’চার পাতা বা কয়েক হাজার শব্দে লিখে শেষ করা যাবে না। তারপরেও কিছু মানুষের আন্তরিক সহযোগিতার কথা লিখতে হয়। না লিখলে হয় না। এরকম কিছু মানুষ যেমন, অটোয়াপ্রবাসী লেখক প্রয়াত ড. মীজান রহমান, প্রয়াত লেখক মোঃ আইয়ূব খান, ইংল্যান্ড প্রবাসী লেখক প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক কাজল, আমেরিকা থেকে দীপিকা ঘোষ, বাংলাদেশ থেকে ইরানী বিশ্বাস, আকমল হোসেন নিপু, মনিরা জেসি, গুয়েলফ থেকে সুকেশকুমার ঘোষ, অমল রায়, মন্ট্রিয়েল প্রবাসী লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোস্তাইন বিল্লাহ, গবেষক তাজুল মোহাম্মদ, অটোয়ার লেখক, মহসীন বখত, রাশেদ নবী, আব্দুল হাসিব, ব্যোমকেশ দেব, অনিন্দ্য রায়হান, মাহমুদা নুপূর, সুলতানা শিরীন সাজি, মুস্তফা চৌধুরী, সুপ্তা বড়ুয়া, ড. মনজুর চৌধুরী, বজলুশ শহীদ, দেওয়ান সেলিম চৌধুরী, গুলজাহান রুমি, সৈয়দ মনজুর অপি, হারুনূর রশীদ, সৌরভ বড়ুয়া, শাহীনূর ইসলাম, শাহ বাহাউদ্দীন শিশির, প্রচ্ছদ শিল্পী, গোলাম রব্বানী মিঠু ও জামাল চৌধুরী,  টরন্টোর ফরিদ তালুকদার, অনিরুদ্ধ আলম, ও সাস্কাচুয়ানের ফারজানা শান্তাসহ অসংখ্য লেখক। এছাড়া ছিলো আদিব বখত, অরনী বখত, নাহিদা চৌধুরী তাম্মি, বর্ষা দেব, সানজিদা চৌধুরী উমা, ও ফাহমিদা চৌধুরী সাম্মীসহ এদেশে জন্ম নেয়া একঝাক ক্ষুদে লেখক যারা “আশ্রম গার্ডেন” নামে ইংরেজি সেকশানে নিয়মিত লিখত। কানাডার পত্রিকা হিসেবে তাদের লেখা কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ এবং প্রচ্ছদগুলো বাংলাদেশ বা ইন্ডিয়ার লেখকদেরকে “আশ্রম”-এ লিখতে উৎসাহিত করেছে। “আশ্রম” এর প্রতি তাদের এই ভালবাসাকে আমি আজীবন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি। আমি বিশ্বাস করি গত এক যুগের অধিক সময় তাদের এই সহযোগিতা না পেলে কানাডার একটি ছোট শহর অটোয়া থেকে এতদিন “আশ্রম” প্রকাশ করা সম্ভব হত না। আর এখন অনলাইনে পত্রিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে, কানাডা, বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিদিনই অসংখ্য লেখক তাদের গল্প, উপন্যাস, কবিতা দ্বারা “আশ্রম”-কে সমৃদ্ধ করছেন। তাই আমি শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যত লেখক লেখা দিয়ে আমাদের পত্রিকাটিকে পাঠকনন্দিত করতে সহযোগিতা করেছেন, তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি দ্ব্যার্থকণ্ঠে বলতে চাই, আমার কাছে আপনারা সবসময় স্মরণযোগ্য।  

এতো গেলো লেখকদের কথা। এখন আসা যাক কিছু আপন মানুষের সাহায্য-সহযোগিতার কথায়। “আশ্রম”কে টিকিয়ে রাখার জন্য দীর্ঘ্য পনর বছর থেকেই ওরা আমাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। ওরা সংখ্যায় এত বেশি যে কার কথা লিখি আর কার কথা বাদ দেই ভেবে পাচ্ছি না। তারপরেও কিছু বন্ধুদের কথা লিখতে হয়। যেমন, নুরুল আমীন চৌধুরী খসরু, জাহিদা বেগম মিতা, গুলজাহান রুমী, শাহ বাহাউদ্দীন শিশির, সৌরভ বড়ুয়া, আব্দুল মান্নান মিঠু, সুলতানা শিরীন সাজি, মহসীন বখত, ঝলক মজুমদার, আছিয়া বেগম, মুস্তফা চৌধুরী, ডালিয়া ইয়াসমিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন এবং এনায়েতুর রহমান আঙ্গুর সহ আরো অনেক। তবে এখানে তিনজন মানুষের কথা আলাদাভাবে না বললেই নয়। তাঁরা হলেন যথাক্রমে, আব্দুল মান্নান মিঠু, মুস্তফা চৌধুরী, এবং গুলজাহান রুমি।

শুরুটা শ্রদ্ধেয় মুস্তফা চৌধুরীর ফোন কল দিয়েই করি। খুব শীঘ্রই অটোয়া থেকে “আশ্রম” মাসিক বাংলা পত্রিকা প্রকাশিত হবে লিখে দু’টি পোস্টার তৎকালীন অটোয়ার বাংলাদেশিদের প্রিয় গ্রোসারী স্টোর “দেশ গ্রোসারী”তে লাগানো হয়েছে। “আমি” পত্রিকা প্রকাশ করবো, অটোয়া থেকে, তা ও আবার “বাংলা ভাষায়” তা ও আবার “আশ্রম” নামে! “দেশ গ্রোসারী”তে লাগানো পোস্টারটি নিয়ে যখন শহরের অনেকেই মুখরোচক আলোচনায় ব্যস্ত তখনই আমার কাছে একটি ফোন কল আসে, “কবির, আমি মুস্তফা চৌধুরী বলছি, দেশ গ্রোসারিতে একটি পোস্টার দেখলাম। তুমি বাংলা পত্রিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছ। খুব ভাল উদ্যোগ। তোমার কোন সাহায্য লাগলে আমাকে জানিও।“ মুস্তফা ভাইয়ের এই কলটি পত্রিকা নিয়ে পাওয়া প্রথম কল। ২০০৯ সালে মুস্তফা চৌধুরীর সেই টেলিফোন কল এখনও আমাকে উৎসাহিত করে, অনুপ্রাণিত করে। ধন্যবাদ মুস্তফা ভাই।

এখন গুলজাহান রুমি’র গল্প বলি। পত্রিকা প্রকাশের ৩ মাস পরের কথা। প্রতিমাসেই হাজার ডলারের উপরে প্রিন্টিং কস্ট- তারপরেও সংখ্যায় নগণ্য। ইচ্ছা করলেই “মন যত চায়” তত ছাপানো যায় না। তাই মনে মনে ভাবলাম নিজে একটি প্রিন্টিং মেশিন কিনে নিলে কেমন হয়? যেই ভাবা সেই কাজ। ছোট ভাই শাহীনকে নিয়ে চলে গেলাম অটোয়ার “কেনন” অফিসে! মেশিন দেখেই ভাল লেগে গেল। ষ্টেপল মেশিনসহ বিরাট বড় প্রিন্টিং মেশিন ($!) কিনে নেই। তখন আমরা এপার্টমেন্ট বিল্ডিং এ থাকি। সপ্তাহ খানেক পরে মেশিন নিয়ে আসার পরে দেখা দেয় বিরাট এক সমস্যা। মেশিনে পুরো ডাইনিং রুম খেয়ে ফেলে। কি করবো। কোন অবস্থাতেই মেশিন ফেরত দেয়া যাবে না। বড় ভাই বললেন- আপাতত উনার বাসায় রাখতে পারব। বড় ভাইয়ের কথামত তার বাসায় মেশিন নিয়ে যাওয়ার জন্যে মেশিনের ডেলিভারী ম্যানদের অনুরোধ করছি, তখনই আমার মনে পড়ে বন্ধুবর লেখক মহসীন ভাইয়ের ঘরের কথা। আরে মহসীন ভাইয়ের বাসায় তো রাখা যায়। ইতিমধ্যে যিনি “আশ্রম” পত্রিকাকে সৃজনশীল পত্রিকা হিসেবে পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ, লন্ডনসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে বসবাসকারী লেখকদের সাথে যোগাযোগ করে ভাল ভাল লেখা এবং লেখকের ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া মহসীন ভাইয়ের বাসায় মেশিন থাকলে রাত-বিরাতে কাজ করা যাবে। উনিও মাঝে-মধ্যে সাহায্য করতে পারবেন। সবকিছুর পরে একজন লেখক তো! মহসীন ভাইকে ফোন দিয়ে সমস্যার কথা বলতেই উনি রাজি হয়ে গেলেন। তাই বড় ভাইয়ের বাসায় মেশিন না নিয়ে আমরা মহসীন ভাইয়ের বাসায়ই মেশিন নিয়ে যাই। ডেলিভারীর লোকগুলো মেশিনটি ঘরে ঢুকিয়ে বক্স খুলেই চলে যায়। ডেলিভারি ম্যানদের এমন অবস্থা যে মহসীন ভাইয়ের ঘর থেকে বের হলেই যেন তারা বাঁচে। এত বড় মেশিন- উনার ড্রয়িং রুমের অর্ধেকই মেশিনের নীচে। আমার মনে হয় আমাদের বাড়ীতে মেশিন আনার আগ পর্যন্ত প্রায় ৩/৪ মাস উনার বাসায় মেশিনটি ছিল। এই ৩/৪ মাসে কয়বার যে মেশিনের স্থান পরিবর্তন হয়েছে, আল্লাহই মালুম। এই জায়গা পরিবর্তনের কারণে ঘরের মেঝের অনেক জায়গা ভেঙ্গে যায়। মেশিন নিয়ে আসার পরে মহসীন ভাইয়ের ঘরের ফ্লোর ঠিক করতে হয়। আর এই জায়গাটাতে রুমি ভাবীর কথা আসে। রুমি ভাবী মহসীন ভাইয়ের স্ত্রী। উনি প্রায় সময়ই বলেন- “আশ্রম”র জন্য আমার দশহাজার ডলার লস। আমি বলি ভাল তো। এক উছিলায় ঘর ঠিক করলেন। আসলেই আমি রুমি ভাবী ও মহসীন ভাইদের কাছে কৃতজ্ঞ। বাই দা ওয়ে, রুমি ভাবী এখন কিন্তু একজন ইউটিউবার। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের নাম- Rumi’s Vlog Ottawa Canada. 

প্রিয় পাঠক, লেখাটা লম্বা করার কারণে ক্ষমা চাচ্ছি। কি করবো, কিছু মানুষের কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা না জানালে নিজে নিজের কাছে ছোট হয়ে যাব। আরেকজনের কথা বলেই আপাতত “আশ্রম”-কে নিয়ে আমার পুরনো কাসুন্দি শেষ করবো। এখন যে মানুষটির সাহচার্য্য আর সহযোগিতার কথা বলবো, তিনি হলেন “আশ্রম” এর বর্তমান সম্পাদক সুলতানা শিরীন সাজির স্বামী। তাঁর নাম আব্দুল মান্নান মিঠু। আমাদের সবার প্রিয় মিঠু ভাই। তিনি বর্তমানে প্রয়াত। মরনব্যাধী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি ২০২০ সালে আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন। তার সাথে “আশ্রম”, আর আমার সম্পর্কের গল্প বলার আগে আমি মিঠু ভাইয়ের আত্মার শান্তি কামনা করি এবং ভাল কাজের প্রশংসা করি। আমরা সবসময়ই বলে থাকি- মানুষ মরে যায়, কিন্তু তার রেখে যাওয়া ভাল কাজগুলো থেকে যায়। সময় পেলেই মানুষ তার রেখে যাওয়া ভাল কাজের প্রশংসা করে। যেমন এখন আমরা মিঠু ভাইয়ের ভাল কাজের কথা স্মরণ করছি, আলোচনা করছি। 

আব্দুল মান্নান মিঠু ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় অনেকটা নাটকীয়! টরেন্টো আর কিংস্টনের পাঠ ছুকিয়ে অনেক বছর পর আমি অটোয়ায় ফেরত এসেছি। আসার দু’দিন পর আমার পরিচিত এক বন্ধুর রেস্টুরেন্টে আড্ডা দিতে গিয়েছিলাম। মিঠু ভাইও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমার সেই বন্ধু আর মিঠু ভাইয়ের কথা-বার্তায় বুঝা গেল, ওরা একে অন্যের খুব পরিচিত। আমার সাথেও হাই, হ্যালো হল। কিছু সময় পরে সিগারেট খাওয়ার পালা। মিঠু ভাইসহ আমরা সবাই কিচেন দিয়ে রেস্টুরেন্টের বাইরে যাব। ডাইনিং রুম অতিক্রম করে কিচেনে গিয়েই আমি সিগারেট ধরিয়ে নেই। রেস্টুরেন্টের ভিতরে সিগারেট জ্বালানোটাকে মিঠু ভাই পছন্দ করেননি। তার পছন্দ না হওয়াকে উনি লুকিয়ে রাখেননি। আমাকে সরাসরি বলে দিলেন- “ভাই আপনি কিন্তু কাজটি ভাল করলেন না। আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, রেস্টুরেন্টের ভিতরে সিগারেট খাওয়া ঠিক না!” আমি কথা না বাড়িয়ে সিগারেটটা দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা তান্দুরীতে ফেলে দেই। সিগারেটটা তান্দুরীতে ফেলে দিতেই উনি বললেন- “ভাই আমি কিন্তু আপনাকে সিগারেটটা ফেলে দিতে বলিনি”। এভাবেই শুরু। ঐদিন মিঠু ভাইয়ের প্রতি আমার প্রচণ্ড রাগ হয়েছিল, কিন্তু প্রথম পরিচয় আর অনেক দিন পর অটোয়াতে ফিরে আসা, তাই কিছু বলিনি। বিষ খেয়ে হজম করার মত। মনে মনে ভেবেছিলাম এই ভদ্রলোকের সাথে আর কখনও কথা বলবো না। আমার এই প্রতিজ্ঞা ঘন্টা দুয়েক, রেস্টুরেন্টে আড্ডা দেয়া পর্যন্ত মোটামোটি অক্ষুণ্ণ ছিল, এদিন উনার সাথে আমার খুব কম কথাই হয়েছে। জ্বী, না, খুব ভাল, এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এর পরদিন থেকেই মিঠু ভাই আস্তে আস্তে আমার খুব ভাল ফ্রেন্ড হয়ে যান। এই ফ্রেন্ড হওয়ার মাঝেও ছিল কিছুটা রাগ, কিছুটা অভিমান! অথবা চিন্তার বহিঃপ্রকাশের একই ধরণ! 

কয়েক বছর পর অটোয়ায় ফিরে আসা। রাস্তা ঘাটে গেলে মনে হয় এ শহরে আমি নতুন এক আগন্তুক। বেড়াতে বা নতুন ঠিকানার খুঁজে এসেছি। অথচ এ শহর আমার হোম টাউন। কানাডায় আসার পর প্রথম রাতটা এই শহরেই কাটিয়েছি। অথচ ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ৩/৪ বছরের ব্যবধানে নিজেকে নিজের শহরেই আগন্তুক মনে হচ্ছে! কাম কাজ নাই। ঘরের পাশে টিম হরটন থাকার কারনে সময়ে অসময়ে টিম হরটনে যাওয়া আসা। মিঠু ভাইয়ের সাথে পরিচয়ের পরের দিন বিকালে টিম হরটনে গিয়ে একটি কফি নিয়ে বাইরে বসে আছি। গরমের সময় আমি সাধারনতঃ বাইরেই বসি। বাইরে বসে সিগারেট আর কফি একসাথে পান করা যায়। সাদা-কালো-বাদামী অনেক রঙের মানুষই আসা যাওয়া করছে। অনেকের গঠনগড়ন আমার মতই। হয়ত বাংলাদেশি। পূর্ব পরিচয় না থাকায় জিজ্ঞাসা করা যায় নি কে কোথাকার। আর এসব দেশে সবাই নিজেকে নিয়ে এত ব্যস্ত যে আগ বাড়িয়ে কেউ কারো পরিচয় জানতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। হাই আর হ্যালোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে বা থাকতে চায়। আমিও অন্য সবার মত নিজের মনে একাগ্রচিত্তে কফি আর সিগারেট পান করে যাচ্ছি। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামছে। সামারের সন্ধ্যা। মনোমুগ্ধকর। এমন সময় হঠাৎ করে পাশের পার্কিং স্পটে সিলভার কালারের একটি টয়োটা গাড়ি এসে থামলো। আমার মোহভঙ্গ হল। দেখলাম গতকালকের পরিচিত ভদ্রলোক গাড়ি থেকে নামছেন। চোখাচোখি হতেই জিজ্ঞাসা করলেন, “কেমন আছেন?” উত্তরে বললাম, ভাল আছি। তারপরে বললেন, “বাইরে কেন? ভিতরে আসুন।“ বললাম, আপনি যান, আমি আসছি। আমার ভিতরে যাওয়ার আগেই উনি কফি নিয়ে বাইরেই চলে আসলেন। এভাবেই শুরু হয়েছিল আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। মিঠু ভাইয়ের অনেক কিছুই আমার ভাল লাগতো। উনার চিন্তা এবং আমার চিন্তার ধরণ ছিল প্রায় একইরকম। সেকারণেই হয়ত প্রতিদিন উনার সাথে আমার দেখা হত- বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হত। এই আলোচনার মাঝেই তার সাথে আমার আত্মার নিবিড় এক সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। এইসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আলোচনার মাঝেই আমি খুঁজে পাই “আশ্রম” এর ঠিকানা। তাইতো আমি অনেক সময় বলি, টিমহরটন্স হলো “আশ্রম” এর আঁতুড়ঘর। 

মিঠু ভাই সবসময়ই খুব পজিটিভ মানুষ। জীবনকে জয় করার অদম্য এক গুণের অধিকারী ছিলেন মিঠু ভাই। অন্যকে উৎসাহ দেয়ার কোন কমতি ছিল না তার মাঝে। সবকিছুতেই বলতেন, হবে না কেন? অবশ্যই হবে। বহু সময়ই আমি তার এই পজিটিভনেস লক্ষ্য করেছি। যেমন, আমি যখন অটোয়া থেকে একটি সাহিত্য পত্রিকা বের করার কথা উনার সাথে আলোচনা করি, তখন উনি খুব আন্তরিকতার আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। পত্রিকার ব্যাপারে তার উৎসাহের কোন কমতি ছিল না। এখানে একটি ঘটনার কথা উল্লেখ না করলেই নয়। আসলে সুযোগ পেলেই আমি এই ঘটনার কথা সবাইকে বলি। বিষয়টা বলারই। হুজুগের কারণেই হোক, বা প্রয়োজনের কারণেই হোক, আমি যখন পত্রিকা প্রকাশের ঘোষণা দেই, তখন কম্পিউটারে “অভ্র”, “ফনেটিক” কোন কিছু সম্বন্ধে কোন ধারণাই ছিল না- কম্পিউটারে তখন “বিজয়” নামে সফটওয়ার আর “সুতনী” নামক বাংলা ফন্টের রাজত্ব। আমি তার কিছুই জানি না। বাংলাদেশ থেকে লেখা কম্পোজ করে পত্রিকা করার কথা। তারপরেও চিন্তা করছি অটোয়াতে কিভাবে পত্রিকার লেখা কিভাবে কম্পোজ করা যায়, বা কম্পিউটারে কিভাবে বাংলা টাইপ শেখা যায় তা নিয়ে আমি যখন খুব চিন্তিত, তখন মিঠু ভাই বলেছিলেন, “কোন চিন্তা করবেন না, সাজি সব করে দেবে। ও ফনেটিকে লিখতে পারে।“ এই ছিল আমাদের মিঠু ভাইয়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। পত্রিকা প্রকাশের শুরু থেকে তার মৃত্যুর আগপর্যন্ত উনি পত্রিকার সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন এবং বিভিন্ন বিষয়াধি নিয়ে সুচিন্তিত মতামত দিয়ে গেছেন। কালের আবর্তে আমরা যোগাযোগহীন হয়ে যাচ্ছি ঠিকই কিন্তু ফেলে আসা স্মৃতি ভুলতে পারি না। যুগযুগ পরেও তা আলোচনা করি। পৃথিবী এভাবে চলে- এবং ভবিষ্যতেও চলবে। পাওলার ডাকে বর্তমানে ফিরে এসে দেখি সন্ধ্যা প্রায় ৫টা বাজে। পাওলার সাথে কাটানো সময় কিভাবে যে চলে যায় তা এখনও বুঝতে পারি না। 

সবাই ভাল থাকুন। ডিসেম্বরের ৩ তারিখ “আশ্রম সঙ্গীতানুষ্ঠানে” দেখা হবে। জয়তু আশ্রম

কবির চৌধুরী
প্রকাশক, আশ্রম
অটোয়া, কানাডা