অটোয়া, শুক্রবার ২০ জুন, ২০২৫
যুগান্তরকাল - স্বপঞ্জয় চৌধুরী

তিহাসের বইয়ের পাতা থেকে এখানে প্রতিদিন 
বুক মেলে দাঁড়িয়ে থাকে পলাশীর প্রান্তর। 
আকাশের মেঘগুলো এঁকে ফেলে যোদ্ধার ছবি 
অলেখা কথাগুলো যা বাদ পড়ে গেছে ইতিহাস থেকে। 
সোনালী খঞ্জরে মাখা রক্তের দাগ মুছে গেছে জানি, 
ঘোড়ার চিহি চিহি ডাক এখন আর শুনিনা হয়তো। 
যান্ত্রিক সভ্যতাকে গায়ে মেখে হয়ে উঠি কৃত্রিম নাগরিক । 
আমার নগর জুড়ে দেখি ফসিলের কান্না। 
রাতের আঁধার থেকে ভেসে আসে মৃতদের ক্রন্দন। 
দুঃসহ কাতরতায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা 
ধর্ষিত নারী খামচে ধরে আছে পতাকা। 
সাদা বিছানার চাদর রঞ্জিত হয়ে ওঠে কাচা রক্তে। 
আমি আবার ইতিহাস লিখবো বিজয়ী এবং বিজেতার। 
আমি আবার ইতিহাস লিখবো জন্মকে ঢেলে সাজাবো। 
কদমের পাপড়িতে ভরে দেব রাজপথ।
যে শিশু কন্যা হরিণীর মতো চাতক চোখে 
চেয়ে থাকে সরু পথের দিকে। 
তার জন্যে বাবা কিনতে গেছে 
ছবি আাঁকার কাগজ, স্বপ্নের মলাট। 
প্রহর চলে যায় চোখে ভেসে ওঠে ঘোলাটে মলাট;
প্রতারিত সময়ের দেয়ালে ঝুলে থাকে বাবার স্কেচ।
আমি আবার ঢেলে সাজাবো পথের কবিতা। 
যে পথে শুধু পথিকের পদচ্ছাপ থাকবে। 
যে পথ থেকে আমি আর কখনো কুড়াবো না 
গৃহহীন ভসামান মানুষের ক্রন্দন। 
যে পথ থেকে আমি আর কুড়াবো না 
ভেঙে যাওয়া কাচের মতো স্বপ্নের টুকরো। 
আহত শিশিরের গা থেকে মুছে যেতে দেবনা শিউলির দাগ। 
এমন এক যুগান্তরকাল চাই যেখানে 
পথ থেকে পথে, দেশ থেকে দেশে, যুগ থেকে যুগে 
প্রতিটি মানুষের হাতে খাবারের পাশাপাশি থাকবে 
একটি করে শুভ্র গোলাপ 
নয়তো সদ্য বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া একরাশ কদম ফুল।

স্বপঞ্জয় চৌধুরী। ঢাকা