অটোয়া, মঙ্গলবার ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
শহরটা অচেনা হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন - কানুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়

ই শহরটা কেমন যেন অচেনা হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন,
যে ঘুম ঘুম রাস্তায় তুই টুংটাং রিক্সায় চেপে
পাটভাঙ্গা চুল উড়িয়ে কলেজে আসতিস,
সেই ঘুম ঘুম রাস্তাটা ভুগছে অনিদ্রা রোগে।
আজ সারা শহর খুঁজলেও
একটাও টুং টাং রিক্সা নজরে পড়ে না,
সত্যি, এই শহরটা বিচিত্র হয়ে যাচ্ছে দিন দিন!

আমাদের শরীরগুলোতে অসংখ্য রোগব্যাধি
সার্কাসের ত্রিপল ফেলেছে,
কাল ফেসবুকে যে ফটোটা তুই আপডেট দিয়েছিস
তাতে তিনটে সাদা চুল।
আমিও আজকাল রাত্রি দুটোয় অন্ধকার গুনতে গুনতে
একটু অবচেতনে মনটাকে নিয়ে যাই,
ভোর চারটেয় মনে মনে দৌড়ঝাঁপ করি
সেই রেলিং ঘেরা হাঁসদিঘীর সেতুতে,
যেখানে শেষ সন্ধ্যায় উল্কাপতন দেখেছিলাম আমরা দুজনে।

তোদের প্যারিসের রাস্তায় অটো নামক আকাঠ বস্তুটা
চলে কি না জানিনা,
তুই যদি আবার কখনো এই শহরে আসিস,
তোকে দেখাব
কি ভাবে রিক্সাহীন শহর
সময় কেড়ে নিচ্ছে প্রেমিকদের জীবন থেকে।

গত বসন্তে হাঁসদীঘির সেতুতে রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম,
বেশ মৌজ করে হাতে নিয়েছিলাম একটা নেভি কাট,
দীঘির পাড়ে, হয়ত এই শহরের একটাই,
শালগাছ থেকে মরা পাতা রেলিংএ উড়ে পড়ছিল।
সারা সন্ধ্যাতে একটাও উল্কাপতন হয় নি,
হয়ত এই শহরে আর উল্কাও পড়ে না!

এই শহরটা কেমন যেন অচেনা হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।

কানুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ