বাবার নাক ডাকার শব্দ - মোঃ শাহাদাৎ হোসেন
'যুথী, বলতো- এই পৃথিবীতে সবচেয়ে আনন্দের জিনিস কী?'
'বাবার নাক ডাকার শব্দ।'
খুবই ধীরে ও স্নিগ্ধ স্বরে জবাব দিয়ে যুথী মাটির দিকে মুখ করে দাড়িয়ে থাকলো। জবাব শুনে ক্লাসের একদল হো হো করে হেসে উঠলো, একদল মুখভর্তি সীমাহীন পরিপক্বতার ভাব এনে ঠায় বসে থাকলো, যেন অই প্রশ্নের এরূপ উত্তর যে হবে তা তারা আগে থেকেই জানতো। আরেক দলে ছিলাম আমি একা, যারা কি না ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে বরং তার গভীরে ডুব দেয়, কারণ-ফলাফল বিশ্লেষণ না করে সকলের সাথে গা ভাসায় না।
পুরো ক্লাসে আমরা ভিন্ন আরো যে একজন ছিলেন, আমাদের শ্রদ্ধেয় বাংলা শিক্ষক মোবারক স্যার, তাকে যে কোন দলে ফেলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। সাহিত্য পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকে আমাদের জীবনবোধকে উজ্জীবিত করতে প্রায়ই তিনি কঠিন কঠিন প্রশ্ন করতেন।আমাদের দেয়া উত্তরগুলো কখনোই তাঁর মন মতো হতো না কিন্তু তিনি বিরক্ত না হয়ে তাঁর মনে রাখা উত্তরটাই আমাদের পই পই করে বুঝিয়ে দিতেন; আমরা নীরবে জীবন পাঠ নিতাম। আজও হয়তো তার একটা উত্তর তৈরি করাই ছিল কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণির একটা ছাত্রীর মুখে এমন বিস্ময়কর জবাবে তিনি পথ হারিয়েছেন। নীরবে কাঠের চেয়ারটাতে বসলেন তারপর জানালায় তাকিয়ে আমার মতই গভীরতায় ডুবে যেতে চাইলেন তবে কি খুঁজতে তা ঠাহর করতে পারলাম না।
যতক্ষণে স্যারের নীরবতা ভাঙলো- ক্লাসের সমস্ত সূক্ষাতিসূক্ষ শব্দও থেমে গেছে, অট্ট হাসিগুলো অনুতাপে রূপ নিয়েছে, পরিপক্ক মুখগুলো জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। যুথী স্যারের অনুমতি ছাড়াই বসে পরলো তবে মুখ তুলে চাইলো না। স্যার চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে ছেলেদের একক জনকে দাড় করিয়ে প্রশ্ন করতে শুরু করলেন। কী আশ্চর্য, আজ আর যুথীর উত্তরটা তিনি শুধরে দিলেন না, পুরো ক্লাস জুড়ে একবারও সে দিকে তাকালেন না পর্যন্ত! সবার চোখের সামনে তবু সবার অজান্তেই যেন কিছু মেঘ এসে দিনের আলোটাকে ঢেকে দিলো, বাতাসকে বস করে খুব গোলমাল করলো, অতঃপর ইচ্ছেমত জল বর্ষণ করে হারিয়ে গেলো কিন্তু আলোটার মুক্তি হলো না।
স্কুল ছুটির পর তাই আর বাসায় ফিরতে ইচ্ছে হলো না; যুথীর পিছু নিলাম। হাটতে হাটতে যুথী এসে থামলো বাজারের শেষ মাথায় যেখানে মস্তবড় এক শপিং মল তৈরী হচ্ছে। এটাই এই এলাকার সবচেয়ে উঁচু দালান হবে; বাবা বলেছেন চৌদ্দ তলা উঁচু হবে আর এর ভিতরে নাকি দুনিয়ার সবকিছুই কিনতে পাওয়া যাবে, সিনেমা দেখা যাবে, পার্কে খেলা যাবে আর যা ইচ্ছা খাওয়াও যাবে। যুথী নিচে দাড়িয়ে ছাদের দিকে বারবার উঁকি দিচ্ছিলো, হটাৎ কেউ একজন চার তলার ছাদ থেকে ইশারা করলেই সে হর হর করে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো এক এক করে। আমি খুব সাবধানে তার পিছু নিলাম- সিড়িতে রেলিং নেই, এখানে ওখানে লোহার টুকরা, তারকাটা, কাঠের টুকরা এসব ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে আছে। ছাদে পৌঁছোতেই দেখলাম হাত দিয়ে ইশারা করা লোকটা যুথীর কাঁধ থেকে স্কুলের ব্যাগটা নিজের কাঁধে নিলেন, ঠিক আমার বাবার মতই। যতটুকু স্নেহে যুথীকে আধকোলো করে ছাদে হেটে বেড়াচ্ছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই উনিই যুথীর বাবা।
যুথীর বাবা এখানেই কাজ করেন; এই মস্ত দালানের কেয়ারটেকার সে, মালিকের বিশ্বস্ত লোক হিসেবে সমস্ত কাজের দেখাশোনার ভার তার উপরই। যদিও আরো চার-পাঁচজন তার সাহায্যের জন্য রয়েছেন, মালিককে সকল হিসাব-নিকাশ, কারণ-প্রয়োজন তাকেই দর্শাতে হয়। সারাদিন তো ভাল কথা মাঝ রাত অব্দি শ্বাস নেয়ার উপায় থাকে না। তাই স্কুলের পর বিকেলের কিছুটা সময় মেয়েকে কাছে রেখে একসাথে খাওয়া-দাওয়া করেন, গল্প করেন, বুকে নিয়ে মনের ক্লান্তি দূর করেন। বাবার এত কাজ এত ক্লান্তি যুথীকে ভাবায় খুব, তাই হয়তো নিশ্চিন্তে ঘুমোনো বাবার ক্লান্তিহীন মুখটাই যুথী ফিরে ফিরে দেখতে চায়, সবার অজান্তেই মাঝ রাতে নিজের বিছানা ছেড়ে চেয়ার পেতে বসে বাবার খাটের পাশে, খুব মনযোগ নিয়ে চেয়ে থাকে। বাবার প্রতিটি ভারী প্রশ্বাসে যেন তার ক্লান্তিগুলো ঝরে পরে বালিশের পাশে, ঝরে পরা ক্লান্তিগুলো যেন একএকটা বীজ- যাতে গুল্ম গজায়, সে গুল্মে ফুল ফুটে আর সে ফুলের মাতাল করা সৌরভেই দ্বাদশী কন্যার হৃদয় সাজে রাতভর!
সূর্য পশ্চিমে ঢলে গেছে, বাসায় ফিরতে আজ বড্ড দেরি হয়ে গেলো! বাসায় এসেই দেখি মা সিড়িতে বসে আছে, হাতে কালো রঙের বাটন ফোনটা নিয়ে নাড়াচাড়া করছে আর এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে। আমাকে দেখেই উঠে দাড়ালো, কিছুটা সময় নীরব থেকে ভারী গলায় জিজ্ঞাসা করলো,
'কোথায় ছিলি এতক্ষণ?'
আমার উত্তরের অপেক্ষা না করে ঘরের ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে-
'তোর বাবা হাজারবার ফোন করে তোর খবর জানতে চায়। হাত-মুখ ধুয়ে তাকে ফোন করে আমাকে উদ্ধার করগে যা।'
-'বাবা এত ফোন করে কেন?’ বলেই কাঁধের ব্যাগটা আছাড় মেরে বারান্দায় ফেলে এক দৌড়ে সোফার উপর গিয়ে শুয়ে পরলাম। মাঝের ঘর থেকে মা গলার আওয়াজ আরো উঁচু করে জবাব দিলো, 'না, ফোন করবে না! সারাদিন তুই যা মন চায় তাই করে বেড়াবি আর তোর বাপ সে খবর রাখবে না?'
বাবার অফিসে সপ্তাহে তিন দিন ওভারটাইম করতে হয়। এই তিন দিন বাবা রাত করে বাসায় আসে আর সারাদিন মা'কে ফোন করে আমার সমস্ত খবর নেয়। এই তিন দিন বাবার শাষণ টা আমি হারে হারে টের পাই; পান থেকে চুন খসবার ও জো থাকে না। খুব সাবধানে থাকতে হয় নয়তো ফোনে অনেক বকা খেতে হয়। কিন্তু বাবা যখন বাসায় থাকে তখন মোটেও আমায় বকে না বরং সন্ধ্যাবেলায় প্রায়ই আমাকে পড়ার টেবিল থেকে ডেকে নিয়ে গল্প করে- অফিসের গল্প, রাস্তায় জ্যামের গল্প আর নয়তো তার কলেজ জীবনের গল্প। বাবা গল্প করে আর হাসে, আমি না হাসলে আমাকে সুরসুরি দিয়ে হাসায়; তখন আমার খুব ভাল লাগে। যুথীর যেমন তার বাবাকে ঘুমোতে দেখতে ভাল লাগে আমার ভাল লাগে বাবাকে হাসতে দেখতে। আচ্ছা, বাবারা যখন ঘুমায় তখন কেমন লাগে দেখতে? কখনো এই দৃশ্য তো দেখা হলো না! আমার বাবা ও কি ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে? আজ দেখতে হচ্ছে ব্যাপারটা। এসব ভাবতে ভাবতেই মা এসে সামনে দাড়ালেন।
-'নোংরা ছেলে একটা! এখনো কাপড় খুলিসনি, হাত-মুখ ধুসনি!’ - বলেই নিচু হয়ে আমার পয়ের জুতা খুলতে টান দিলেই আমি ব্যথায় চিৎকার করে উঠলাম। মা ভয় পেয়ে হাত সরিয়ে নিলো।
-'কি রে, ব্যথা পেলি কেমন করে?'
উত্তরটা আমারো জানা নেই! খুব সাবধানে জুতা খুলে দেখি সাদা মোজাটার এক পাশ রক্তে লাল হয়ে আছে। জুতাটা উল্টে দেখি একটি আলপিন খুব গোপনে আমার জুতার তলি হয়ে আমার পা অব্দি পৌছে গেছে আর আমি টেরই পাইনি; এখনো যে খুব টের পাচ্ছি তাও নয়।
মা লবন পানি গরম করে দিলেন, আমি পানিতে পা চুবিয়ে বেলকনিতে বসে আছি। সামনের বাড়ির রহমান দাদুও বেলকনিতে তার প্রিয় রকিং চেয়ারটাতে বসে বই পড়ছেন। এভাবেই অনেক রাত অব্দি বই পড়েন তিনি- ঘুমের প্রতি লোকটা খুবই উদাসীন। পুরো বাড়ির লোক যতক্ষণ জেগে থাকে ততক্ষণই তিনি বই হাতে বসে থাকেন, কখনো তার বিছানায় কখনো বা বেলকনির এই রকিং চেয়ারটাতে। এই বয়সে এত পড়ে কি হয়? একটু ঘুমালেও তো শরীরটা ভাল থাকে! দূরের লোককে বলেই বা কি, আমার নিজের দাদুটাও তো একই রকম। যতক্ষণ না বাবা এসে তার ঘরের বাতি অফ করবে ততক্ষণ তার বিশ্রাম নেই- এই পুরোনো জিনিস ঘাটবেন নয়তো জানালায় দাড়িয়ে থাকবেন অথবা পান ছেঁচতে বসবেন। এরপর যখন বাবা এসে তার দরজায় দাড়ায় তখন, 'কিরে কখন এলি? খেয়েছিস? তোর শরীরটা ভাল আছে তো?' প্রতিদিন এই তিনটা প্রশ্নের উত্তর জেনেই কেবল বিছানায় তার শরীর ছোয়ানো হয়। দাদুর ঘর হয়ে বাবা আমার ঘরে চলে আসে- আমার মাথায় কিছুটা সময় হাত বুলিয়ে, বিছানার আশেপাশে খুব খেয়াল করে দেখে, জানালার পর্দাটা ভাল করে টেনে দিয়ে তবেই ঘরের বাতিটা বন্ধ করে দেন। এরপর পুরো বাড়িটা কিছুটা সময় হেটে দেখেন, কোথাও কোন অসামঞ্জস্য চোখে পরলেই সাথে সাথে তা ঠিক-ঠাক গুছিয়ে রাখেন। যতক্ষণে তার ঘুমের সময় হয় ততক্ষণে রাত গভীর রাত-এ রূপ নেয়। পৃথিবীর সমস্ত বাবারাই হয়তো এমন হয়- তারা চান তাদের ঘরের বাতিটা সবার শেষেই নিভুক, তাদের চোখের পাতা সবার শেষেই জোড়া লাগুক, সারাটাদিনের সমস্ত দায়িত্বের পূর্ণতাই তাদের চোখে ঘুম হয়ে আসুক!
বাড়ির বাইরে থেকেই বাবার আওয়াজ পেলাম। আমার নাম ধরেই বারেবারে ডাকছে। আমি ধীর পায়ে হেটে এসে দেখি বাবা দরজায়ই দাড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে কাছে ডাকলো। আমি ভয়ে ভয়ে এগিয়ে গেলাম।
-'চল।'
-'কোথায় যাব?'
বাবা আমার হাত ধরে এগিয়ে যেতে যেতে বললেন, 'পায়ে পিন ফুটিয়েছিস! ইঞ্জেকশন দিতে হবে নয়তো পঁচা রোগে ধরবে।'
ইঞ্জেকশন এর কথা শুনে ভয় হওয়ার কথা ছিল কিন্তু আমি বাবার মলিন মুখটাতেই আজ ব্যস্ত ছিলাম। কেন জানিনা বাবার জন্য খুব মায়া লাগছে!
-'কোথায় গিয়ে এই কান্ড বাঁধালি?’
-'অই যে, বাজারে যে নতুন দালানটা হচ্ছে' - এতটুকু বলেই আমি আর বলতে পারলাম না। বাবা আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বললো-'সে কি কথা! ছাদের দেয়াল নেই, সিড়িতে রেলিং নেই; পড়ে যদি হাত-পা ভাঙতি?
আমার কাছে এই প্রশ্নের উত্তর জানা নেই। যেই উত্তরটা জানি, কপাল ভাল, বাবা সেই প্রশ্নটি করে নি- কারণ জানতে চায়নি। জানতে চাইলে কোন মুখ নিয়ে বলতাম যে নিজের ক্লাসের একটা মেয়ের পিছু নিতে নিতে পৌছে গেছি আর সেটা কি বাবা কে বলার মত কোন কারণ হতো?
ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ, পাওরুটি আর কলা নিয়ে বাসায় পৌছাতে পৌছাতে অনেকটা সময় পেড়িয়ে গেল। বাসায় এসে দেখি আম্মুর রান্না করা শেষ- টেবিলে গিয়ে দেখি আমার জন্য মুরগির স্যুপ করা আছে। বাহ, মাঝে মাঝে অসুস্থ হলে মজার মজার খাবারের পাশাপাশি আব্বু-আম্মুর এক্সট্রা যে আদর পাওয়া যায় তার জন্য হলেও একটু আধটু অসুখ ডেকে আনা টা মন্দ না। বেসিনে হাত-মুখ ধুয়ে নিজের ঘরে গেলাম ঔষধ রাখতে, ফিরে আসার সময় চোখ পরলো জানালায়- শপিং মলের কাজ আজ তাড়াতাড়িই বন্ধ হয়ে গেছে-সেখানে কোন আলো জ্বলছে না, রহমান দাদুও বাতি নিভিয়ে ঘুমোতে চলে গেছেন- আজ হয়তো বাসার সবাই তাড়াতাড়িই বাসায় চলে এসেছে। আমার ও ঘুম আসছে খুব, মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে। আমার দেড়ি দেখে মা নিজেই স্যুপের বাটি হাতে আমার ঘরে চলে এলো, আমি বিছানায় উঠে বসলাম, মা আমার মুখে এক চামচ স্যুপ তুলে দিতেই আমি 'ওয়াক' করে ফেলে দিলাম মাটিতে। মা চমকে উঠলো! তারপর আমার গায়ে হাত রেখে চিৎকার করে বাবাকে ডাকলো, 'শুনছো? এই দেখনা, গায়ে যে জ্বর চলে আসছে।' বাবা এসে আমাকে শুইয়ে দিয়ে মাথায় হাত বুলাতে লাগলো। মা চলে গিয়ে আবার এক বাটি জল আর জলপট্টি নিয়ে হাজির হলো। বাবা সে জলপট্টি হাতে নিয়ে জলে ভিজিয়ে ভিজিয়ে আমার মাথায় দিতে লাগলো।
অনেকটা সময় পেড়িয়ে গেলো, বাবা এখনো আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, মা আবার স্যুপের বাটিটা নিয়ে এসে আমার মুখে এগিয়ে দিয়ে বললো, 'একটু খেয়ে নে বাবা, শরীরে শক্তি না হলে রোগ সারবে কি করে?’
আমার একটুও খেতে ইচ্ছে করছে না, ঘুমোতেও না। আজ ভেবেছিলাম চুপি চুপি বাবাকে ঘুমোতে দেখবো- তার নাক ডাকা শুনবো। আর আজ আমার জন্যই আব্বু-আম্মু কারোরই ঘুম হলো না, দাদু টাও ঠায় চেয়ার পেতে বসে আছেন আমার বিছানার পাশে। প্রচন্ড রাগ হচ্ছে নিজের উপর। যুথী'র বাবা হয়তো এতক্ষণে ঘুমিয়ে পরেছেন-নাক ডাকতেও শুরু করে দিয়েছেন। আমি ঘুম ঘুম চোখেও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি বাবার পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে থাকার নাম করে যুথী কেমন হাসিমুখে তার বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে! আসলে রাতের আঁধার কোন বাবার চোখে ঘুম আনে না বরং সন্তান-স্ত্রী-পরিবারের প্রতি যত দায়িত্ব তার পালনেই চোখ জুড়ে ঘুম আসে; সে ঘুমের গভীরতা, উচ্চস্বরে তার নাক ডাকাই বলে দেয়- তার আগলে রাখা পৃথিবীটার প্রত্যেকটা সদস্য কতটা নিরাপদে, কতটা স্বাচ্ছন্দ্যে বেঁচে আছে!
আমি বাবার দিকে তাকিয়ে বললাম, 'বাবা, ঘুমাবে না?' বাবা আমার একটা হাত টেনে তার দুই হাতের মুঠোয় চেপে বললো, 'হ্যা, ঘুমাবো, আগে তুই একটু ঘুমা। আমার এখন ঘুম আসছে না।' তাকিয়ে দেখলাম সত্যিই বাবার চোখে কোন ঘুম নেই, আছে শুধু সীমাহীন দুঃশ্চিন্তা!!
মোঃ শাহাদাৎ হোসেন। বাংলাদেশ
-
গল্প//উপন্যাস
-
29-07-2020
-
-