ছড়াগুচ্ছ - বিমল মণ্ডল
আয়না
বিপিনবাবু বাজার থেকে
কিনেছিলো একটা আয়না
রোজভোরে বিছানাতে দেখে
কতই না সামনে করে বায়না।
বিপিনবাবুর বেশ ইচ্ছে কথা
তালে তালে ধরে গান
হঠাৎ করে পেয়ে যায় সে
কোটি কোটি টাকার সম্মান
বিপিনবাবু বেজায় খুশি
আয়নাটার সামনে
মেঘ আড়াল থেকে দেখে
ভাবছে মনে মনে
অন্ধকার ঢেকে সকালের মেঘে
অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ে
বিপিনবাবুর আয়নার ঘরে
স্বপ্নগুলো যায় যে নড়ে।
বিপিনবাবু কাঁদতে থাকে
আয়নার কথা শুধুই ভেবে
স্বপ্নগুলো একটু একটু করে
উড়ে গেল তার সমানভাবে।
বিপিনবাবুর আয়না ঘিরে
কতশত মজা করে
প্রতিবেশীরা জ্বলে পুড়ে
আয়নাটা চুরি করে।
লম্বা সুতো
লাটাই থেকে দুরত্বে নয়
ছিলো খুব আসে পাসে
হঠাৎ দেখি টেনে টেনে
নিয়ে গেল ঐ আকাশে।
আকাশে বিছিয়ে পড়ে
লম্বা সুতো চারদিকে
সব রাস্তা বন্ধ হয়
সহজ সরল প্রাণ ডাকে।
আকাশ রাজা ডেকে বলে
এসব হবে না এ রাজ্যে
সুতো টানলে কত সুতো
লাটাই থেকে ভিন্ন সাজে
চমৎকার জব্দ হয়
সুতো থেকে সুতোতে
আকাশের সব শক্তি
বাঁধা পড়ে ক্ষমতাতে।
ও পাখি শোনে যা
ও পাখি শোনে যা
আমার বাড়ির কথা
কাল থেকে পাচ্ছি আমি
বুকের মধ্যে ব্যথা
স্বাদ করে মা কে যে আমি
কাছে রেখেই ছিলাম
হঠাৎ করে চলে গেল
আমি একা হলাম
তাই তো আমি তোমার সাথে
ভাগ করে নেবো কথা
তাই একবার দাঁড়োও তুমি
দেখে যাও আমার ব্যথা
সত্যি করে বলো তুমি
কেন তোমার তাড়া
তোমায় দেখে মনে হয়
যেন তোমার থেকে ছাড়া
ও পাখি তুমি এদিক পানে
এসো না একবার
মা যে আমার কোথায় গেল
বলো না এসে এবার।
আমার কথা শুনে তুমি
কেন এতো তাকাও?
রোজ সকালে ডাকলে তোমায়
চোখ কেন বাঁকও।
এবার তুমি এলে কাছে
আনন্দে তাই নাচি
দুঃখ ভুলে এবার থেকে
তোমায় নিয়ে বাঁচি।
খোকার মজা
খোকার ছিলো মাটির বাড়ি
মায়ের সাথে সাথে
দুষ্টু দুটি ইঁদুর ছিলো
ভয় পেয়ে যায় তাতে।
খোকা এবার বড়ো হয়েছে
ভয় পায়না কাউকে
মা কে রেখে যায় সে দূরে
ভুলে যায় অতীতকে।
খোকার এখন চারিদিকে
কত পাখি ঘিরে
তাই তো খোকা আনন্দেতে
মজা বেশ করে।
চাঁদ ধরা
ইচ্ছে ছিল আমার খোকা
চাঁদ ধরতে যাবে
স্বপ্নটা পূরণ হলে
সোনার চাঁদ গড়বে।
এই না বলে খোকা সবে
নিজের জন্য ইচ্ছেটুকু
সাজিয়ে রাখে নিজের মনে
অপেক্ষায় সময়টুকু।
খোকার মনে কত প্রশ্ন
মাকে বলে সেই কথা
একটু পরে চাঁদ ডুবে যায়
খোকা তাই পেলো ব্যথা।
খোকার মনে দুঃখ হলো
চাঁদ তো গেল চাঁদের বাড়ি
স্বপ্ন পূরণ হলো না বলে
চাঁদের সাথে খোকার আড়ি।
বিমল মণ্ডল
কাঁথি, পূর্বমেদিনীপুর
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
-
ছড়া ও কবিতা
-
04-08-2020
-
-
অটোয়া, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪