অটোয়া, মঙ্গলবার ১৭ জুন, ২০২৫
স্বপ্নের ব্যবচ্ছেদ - সুনির্মল বসু

মার স্বপ্নগুলোর কোনো লাগাম ঠিকানা নেই,
সে স্বপ্ন জেগে  বা ঘুমিয়ে যেভাবেই দেখি,
কখনো দেখি, মল্লিক বাড়ির অন্নপূর্ণা পূজোর প্রসাদ পাবার লোভে  ভিখারিদের ভিড়ে আমি আর ভাই প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে আছি,

কোনো কোনো দিন দেখি, বিশাল রাজপ্রাসাদে অগণিত সুন্দরীদের কলহাস্যের পাশে আমি শ্রোতা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি,
এক সে নারী বলে ওঠে,এ এখানে কেন, এখানে কি চাই,

স্বপ্নে দেখি সেই নারীকেও, যে মুখের উপর দরোজা বন্ধ করে অন্য যুবকের হাত ধরেছিল, তাঁকেও,
স্বপ্নে দেখি, উতরোল বৃষ্টিতে কলেজ স্কোয়ারের রাস্তায় রুবি রায়ের হাতে হাত রেখে দুজনে বৃষ্টিতে ভিজে চলেছি,

স্বপ্নে দেখি, মৃত বাবা-মাকেও,
বাবু, আমাদের আর দিন বদল হলো না,
রাজা বদলায়, দিন বদলায়, দিন বদলায় না,
কার্জন পার্কের পাশে মাটির হাঁড়িতে ভাত ফুটছে,
চারপাশে অভূক্ত শিশু কুল, স্বপ্নে দেখি সে দৃশ্য,
স্বপ্নে দেখি, দূর্গা পূজার প্যান্ডেলে অজস্র সুবেশ নর-নারী,অসুস্থ ভাইকে কোলে নিয়ে সাত বছরের বিমর্ষ দিদি,

কোনো কোনো দিন স্বপ্নে দেখি, কোন ধর্ম স্থানে
অতি দীন অবস্থায় পথের পাশেই শুয়ে আছি,
এক অভিজাত  ভদ্রমহিলা গাড়ি থেকে নেমে আমাকে মাড়িয়ে গেলেন, তারপর বললেন, সরি,
তাকিয়ে দেখি, নীলাঞ্জনা,
কতদিন আগে আমার ভালোবাসাকে দু'পায়ে মাড়িয়ে সে চলে গিয়েছে,

আমার স্বপ্ন গুলোর কোন লাগাম ঠিকানা নেই,
চারদিকে এত উন্নয়নের প্লাবন,
তবুও স্বপ্ন দেখি, বেকার যুবক-যুবতী,
আমি জেগে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখি,
এদের স্বপ্নগুলো প্রতিদিন কেড়ে নেয় কারা,
কেন আজ ওরা ভাগ্যহারা,

আমার স্বপ্ন গুলোর কোনো লাগাম ঠিকানা নেই,
স্বপ্ন যায়, ভাসায় খেয়া, পথ নেই, সামনে মোহনা,
এভাবেই প্রতিদিন ভরে যায় জীবন, এভাবেই আলো-আঁধারিতে দিন কেটে যায়,
আকাশের রঙ বদলায়, চোরাবালির স্রোতে জীবন প্রতিদিন বয়ে যায়,
আর আমি, এরইমধ্যে খুঁজি জীবনের সুষমা,
এভাবেই বেঁচে আছি প্রতিদিন,
এরইমধ্যে পাচ্ছি জীবনের নতুন  দ্যোতনা,

আমার ভোঁতা অনুভবের কাছে আজকাল কোনো স্বপ্নই আর বেশি তাৎপর্য বহন করে আনে না।

সুনির্মল বসু
নবপল্লী, বাটানগর 
দক্ষিণ 24 পরগনা, কলকাতা
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত