অটোয়া, শুক্রবার ৯ মে, ২০২৫
আশিস চক্রবর্তীর দু’টি কবিতা

নীরব ঘাতক
তোমাকেই ছুঁয়ে আছি দেখো অদৃশ্য স্পর্শে
ও শরীরে নাই বা দিলাম হাত।
তোমারই জন্য  ঘূণ ধরা এ দেহে সঞ্চিত
মুছে যাওয়া নক্ষত্রের উত্তাপ।

আগে বেশ ঘুম হতো নির্জন রাতে, ছিল
ক্লান্ত শরীরে ঘুমের জমাট আশ্রয়।
এখন মৃতপ্রায়  কালি ধরা দুচোখের তলায়
জমে আছে রাষ্ট্রের অবক্ষয়।

তোমার আকাশে আঁধারের খেলা
সূর্য্যেরা পেয়েছে অনন্ত ছুটি।
শহর জুড়ে ডাস্টবিনের মেলায়
অভুক্তরা খুঁটে খায় রুটি।

যৌবন কেটেছে আমার, প্রতীক্ষার
পিচ মোড়া নিষ্ঠুর রাস্তায় শুয়ে।
সময়ের শেষে আসে, শাসকের লুকোচুরি।
শীতল তরলে শরীর গেছে ধুয়ে।

তবুও তো তুমি আছো, খড় কুটোর মতো
পুড়ে যাবে অনুর্বর এই শতক।
আমারই আঙুলে ওৎপেতে আছে।
স্পষ্ট বুঝি সে এক নীরব ঘাতক।

ক্ষয়
শুকনো ঘাসেরা এখানে নামিয়েছে মাথা।
বাতাসে দোদুল্যমান ধ্বংসের কালো ছাই
মাসের শেষে ছেড়া বুক পকেটে ওষুধের পাতা
বিষাক্ত আকাশের বুকে উজ্জ্বল নক্ষত্রেরা নাই।

কার্নিশে লেগে আছে কবেকার ফাটা ডিম,
ফুরিয়ে এসেছে ঘর ফেরা সব পাখিদের রং।
চৌকাঠ পেরোলে আজ পায়ে ঠেকে জবর হিম
মন ছুঁয়ে দেখি হাতে লেগে গেছে বিস্তর জং।

দেয়ালের কান থাকে তাই খাদে নেমে গেছে স্বর।
বাতাসের স্রোতে উষ্ণতা, যেন তার ঘুষ ঘুষে জ্বর
পাতা খসে খসে সবুজেরা দেখো হয়ে এলো ক্ষীণ
সূর্য্যের ক্ষয় হবে জানি পৃথিবীতে কমে আসে দিন।

আশিস চক্রবর্তী। পশ্চিমবঙ্গ