জাহিদ হাসান এর দু’টি কবিতা
ভাবনার খুব গভীরে আছো হয়তো
প্রিয়তমা, খুব বেশি মনে পড়ে তোমায়!
যখন নির্জনতায় মৌনতা ঘিরে রাখে আমায়।
যখন কবিতা লিখি অথবা ছবি আঁকি,
ভাবুক মনে লেখনীর ক্ষণে তোমার উপমার উঁকি।
ভাবনার খুব গভীরে আছো হয়তো!
চারিপাশে যত শব্দ কানে বাজে তোমারই সুরের মতো,
ভাবনার দু'চোখ দেখেনা তোমার কায়াহীন, তুমিময় এ চোখ কায়ায় বিলীন,
ভোরে ফুটন্ত ফুল, শিশিরে সৃষ্ট আয়নায়,
মেঘের ভাঁজে লুকায়িত আবছা কায়ায় তুমি নিশী-দিন।
প্রিয়তমা তোমায় ভিষণ মনে পরে,
যখন বৃষ্টি নামে আমার বিষন্ন শহরে।
নিসৃত প্রতি ফোঁটায় সৃষ্ট রেখা তোমার চুলের মতো,
প্রিয়তমা,ভাবনার খুব গভীরে আছো হয়তো।
তুলির আচরে ছিটকে পড়া রঙের প্রতিটি কণায় কণায় তোমার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অস্তিত্ব,
অনিমেষ দৃষ্টিতে তুমি চেয়ে আছো
আমি তোমারই চোখ-মুখ-ঠোঁট আর চুলে যেন প্রত্যক্ষ তুলির আচর কাটছি তুমি স্তব্ধ।
ভাবনার অনিলে উড়ে এলোমেলো হওয়া তোমার চুল আমার তুলির আচরে গুছিয়ে যাচ্ছে,
অভিমানে চুপটি করে রাখা ঠোঁট আলতো ছোঁয়ায় কামনার দৃশ্যে অনায়াসে রূপ নিচ্ছে।
ক্যানভাসে নিথর কায়ায় আবেগের স্পর্শে সৃষ্ট পিনপতন শব্দও মনে হয় তোমার চুপকথা তোমার হাসি, আমি দৃষ্টিরত,
উষ্ণ ছোঁয়ায় গভীর আবেগে বলছো"প্রিয়তম তোমায় ভীষণ ভালবাসি, ছুঁয়ে দাও ইচ্ছে যত"।
প্রিয়তমা! খুব....খুব বেশি মনে পড়ে তোমায়, ভাবনার খুব গভীরে আছো হয়তো!
স্মৃতির যুদ্ধ
স্মৃতি বড় নিষ্ঠুর আর পাষাণ!
আমার নিরস্ত্র অসহায় হৃদয়ের বিরুদ্ধে তার তীক্ষ্ম অস্ত্র সজ্জিত দলবল নিয়ে আমার অজান্তেই যুদ্ধ ঘোষণা করে।
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে বুক
আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত করে ভাবনা
অঝর শ্রাবণে কেরে নেয় সুখ।
নিঃশব্দ লোনা নির্ঝর, হতাশার মৃদু হাসি আর করুণ মৌনতা আমায় আঁকড়ে রাখে।
হঠাৎ থামিয়ে দেয় সকল চঞ্চলতা
যন্ত্রনায় কাপতে থাকে দু'ঠোঁট
মাছির গতি ন্যায় এলোমেলো হয় দৃষ্টি
নির্ঝর নিসৃত লোনা সে স্রোতে বক্ষ তটিনীর সৃষ্টি।
তার তলদেশ ভেদ করে বেরিয়ে আসে আর্তনাদ,হয়ে ওঠে স্রোতস্বিনীর সৃষ্ট তরঙ্গের নব তান।
অনুতাপ গ্লানি আর হাহাকারে ভরিয়ে দেয় আমার শূন্য পিঞ্জর, ভাবনা নিথর ,
তার পর... তার পর আবার নিরবতা।
চিত্ত লোচনে থাকেনা বাস্তবতা,
আসে উষ্ণ জলাবৃত দৃষ্টির জড়তা,
চোখ দেখেনা কিছু, ভাবনা চিত্তে নিয়েছে শুধু সজ্জিত সব সৈন্যের পিছু।
জাহিদ হাসান
গাইবান্ধা, বাংলাদেশ
-
ছড়া ও কবিতা
-
09-03-2021
-
-