অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
গোলাম কবির এর দু'টি কবিতা

শিরোনামহীন এক একটি সংখ্যা
'ফোটা চোখের জল গড়িয়ে পড়লে
একটা মরা নদী নাব্যতা ফিরে পাবে
কেউ কি জানে? কতোটুকু মাটির গভীরে
খনন করলে লুকিয়ে থেকে একসময়
হারিয়ে যাওয়া কোনো সভ্যতাকে 
আবার ফিরে পাওয়া যাবে?  
কোনো এক অমাবস্যায় সন্ধ্যা থেকে
ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত 
কতোটা জোনাকির দল পৃথিবীর বুকে
আলো বিলিয়ে যায় অকাতরে! 
মানুষের পেট আর পিঠের মানচিত্র 
কতোটুকু মিলিয়ে সমান হলে পরে
 অনাহারে মারা যাবার স্বীকৃতি মিলবে
 ঠিকই কিন্তু খাদ্য মিলবে না সেলফি ছাড়া, 
বলতে পারো? মানুষ কাঁদছে কর্মহীনতায়,
আর্থিক অসহায়ত্ব তাকে মৃত্যুর দিকে 
ঠেলে দিচ্ছে ক্রমশ! কবরখানা আর
 শ্মশানঘাটে মৃত মানুষের এখন 
এতো ভীড় দেখে আর 
ভালো লাগছে না মোটেই! 
মনকে প্রবোধ দিতে পারছি না
স্বজন হারানো ব্যথার!
আহা! প্রতিদিনই এভাবে চলে যাচ্ছে
মানুষ গুলো করোনার কাছে
হেরে গিয়ে যেনো শুধু মাত্রই
শিরোনামহীন এক একটি সংখ্যা হয়ে! 
এভাবে আর কতো লক্ষ কোটি মানুষ 
মারা গিয়ে পরে করোনা অতিমারীর 
করাল গ্রাস শেষ হবে? 
আমাদের বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুল কলেজ
গুলো আবার কবে খুলবে?
এগুলো আবার কবে শিশু ও ছাত্রছাত্রীদের
 কলকাকলিতে মুখর হবে? 
কতোদিন আর এভাবে সবাই থাকবো
আমরা মুখোশ পরে 
এক একজন মুখোশ মানব কেই বা জানে!

জীবনকে ভালবাসি বলেই
জকাল হুটহাট করে সদর দরজা
খুলে বেরিয়ে যাচ্ছে মানুষের জীবন! 
 এখন ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার পর যে
 আবার ভালবাসার সকল মানুষকেই
 দেখতে পাবো এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই।
 হয়তোবা আমিই চলে গেলাম চিরদিনেরই
 জন্য সবাইকে ছেড়ে একদমই গভীর ঘুমে
 যেমন সইফ মামা চলে গেলেন তাঁরই মতো!
 কিংবা  যাকে প্রচণ্ড রকমের ঘৃণা করতাম
 একসময়, এমন কতো লোকও তো 
 চলে গেলো, তার কাছে ক্ষমা চাওয়াই 
হলো না আমার! অথচ এই চলে যাওয়াটাই চিরন্তন সত্যি হলেও জীবনকে 
কতো ভালবাসি সবাই! 
এই একজীবনে জীবনকে ভালবাসি বলেই
অন্যকেও যখন তখন বলে ফেলি,  
"তোমায় খুবই ভালবাসি, জীবনের চেয়েও!"   কাউকে হয়তো বলি, 
" ভালবাসি, তোমায় বন্ধু "! 
তাও হয়তোবা জীবনকে
ভালবাসি বলেই একথা বলা! 
নচেৎ কেনো যে 
এমন বলে ফেলি, 
হুটহাট করে!

গোলাম কবির
মোহাম্মদপুর, ঢাকা।