ড. শামসুল আলমের ‘গতিময় অর্থনীতি’ - মিল্টন বিশ্বাস
অর্থনীতি, উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক দর্শন সাধারণ পাঠকের কাছে সহজ বিষয় নয়। কিন্তু যাঁর লেখনিতে বিষয়গুলো সহজ-সরলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে তিনি নিঃসন্দেহে অনন্য। কেউ যদি মুদ্রানীতি, শেয়ারবাজার, প্রবৃদ্ধি প্রভৃতি নাও জানেন তাতেও কোনো সমস্যা হবে না বোধগম্য করে লেখা প্রবন্ধগুলো পড়ে। প্রকৃতপক্ষে ২৯৫ পৃষ্ঠার ‘‘গতিময় অর্থনীতি নির্বাচিত প্রবন্ধ সংকলন(২০২১)’’ পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলমের চিন্তন মনস্কতা ও উন্নয়ন অভীপ্সার অন্যতম প্রকাশনা। মুজিববর্ষে প্রকাশিত এই গ্রন্থে তিনি দ্রুত পাল্টে যাওয়া বাংলাদেশের পুরো ছবিটি পাঠকের সামনে এনেছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশেষ করে বাংলাদেশের অগ্রগতির ক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারাক্রমিক চিত্র রয়েছে এ গ্রন্থে। তুলে ধরা হয়েছে উন্নয়নের বিভিন্ন রূপকল্পের চিত্র এবং উন্নয়নের পথে শেখ হাসিনা সরকারের পদক্ষেপসমূহ। গত এক যুগে বাংলাদেশের অর্থনীতি কতটা এগিয়েছে এবং বর্তমান সরকার প্রধান সেই পথে কতটা শ্রম দিয়ে উন্নয়নকে গতিময় করেছেন সেসব চিত্রও রয়েছে আলোচ্য গ্রন্থে। বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা জানার জন্য এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে আলোচনার জন্য এই বইটি খুবই দরকারি। তাই এই বইটির বহুল প্রচার কাম্য।
ড. শামসুল আলম মনে করেন দেশের অর্থনীতি গত এক যুগে অনেক গতিময়তা পেয়েছে। তার জন্য দরকার হয়েছিল সরকারের ইচ্ছা আর উন্নত পরিকল্পনা। এসব উন্নত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও অর্থনীতির উন্নয়নের পথে যা যা করা হয়েছে সেই বিষয় বিভিন্ন প্রবন্ধে সুন্দরভাবে উপস্থাপিত। তিনি ৪৮ টি প্রবন্ধের মাধ্যমে উন্নয়নের চিত্র ও অন্যান্য কথামালা ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি যেসব প্রবন্ধের মাধ্যমে এগুলো তুলে ধরেছেন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- "বাঙালি জাতির বিস্ময়কর উত্থানে বর্ণিল সুবর্ণজয়ন্তী", "শিল্পায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু", "অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা: দারিদ্র দূরীকরণে ও অসমতা হ্রাসে যে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি", "বাংলাদেশের বিস্ময়কর উত্থান: ২০০৯-২০২০", "বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের কৃষি", "অর্ধশতাব্দীর বাংলাদেশ: মসৃণ থেকে ফিনিক্স পাখির উত্থান," "উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্নযাত্রায় যা করণীয়", " একবিংশ শতাব্দীর কৃষি : চাই প্রযুক্তিনির্ভর টেকসই রূপান্তর," প্রভৃতি।তথ্যবহুল প্রবন্ধগুলো গবেষকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক ড. শামসুল আলম নিজে কৃষি অর্থনীতিবিদ হওয়াতে কৃষি ও কৃষকদের নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসেন। এই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি আজ বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে নিয়োজিত। তিনি বাংলাদেশের কৃষি, কৃষি অর্থনীতি এবং বাংলাদেশের কৃষির ইতিহাস ভালো করেই জানেন। কারা, কীভাবে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি কামনা করেছেন তা তাঁর অজানা নয়। বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নে বিশেষ করে কৃষির উন্নয়নে, বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নে, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের কথাও তিনি অবগত। বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনা জানতে পেরে তিনি অভিভূত হন এবং বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য নিজেকে কৃষি ও কৃষি অর্থনীতির দিকে নিবেদিত করেন এবং সে ক্ষেত্রে তিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে সফল। মূলত তিনি বাংলাদেশের মানুষের অর্থনীতির ইতিহাস এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ অর্থনীতি কোন পথে হাঁটছে সেসব বিষয় সুন্দর ও তথ্যবহুল আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন ‘‘গতিময় অর্থনীতি নির্বাচিত প্রবন্ধ সংকলন(২০২১)’’ বইয়ের প্রত্যেকটি প্রবন্ধে, বাংলাদেশের অর্থনীতির জানা-অজানা নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কোন পথে বাংলাদেশের অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে এবং কোন ভস্ম থেকে উঠে এসে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ বিশ্বের ৪৩ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ সেই চিত্র বর্ণনা করা হয়েছে। যে দেশটি বিশ্বের কাছে তলাবিহীন ঝুড়ি ছিল সেই দেশটি আজকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশ্বের বুকে এশিয়ান টাইগার আর এসব সম্ভব হয়েছে একযুগের পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর হলেও আজকের বাংলাদেশে শিল্পের অবদান অনেক। শ্রমিক রপ্তানি, পোশাক রপ্তানি, মৎস্য রপ্তানিতে বাংলাদেশে আজ অনেক এগিয়ে। অতীতে বিদেশ থেকে উন্নয়ন সামগ্রী আমদানি করা হলেও আজকে দেশেই উৎপাদন করা হচ্ছে এমনকি বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে সেসব।
লেখক, কলামিস্ট, গবেষক শামসুল আলম বাংলাদেশের অগ্রগতির কারণ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন, সেসাথে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রজ্ঞামণ্ডিত কাজের প্রশংসা করেছেন। আশা আর স্বপ্ন না থাকলে মানুষ বাঁচতে পারে না বঙ্গবন্ধুও সে কথা বলে গেছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করেন। ‘‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের কৃষি’’ প্রবন্ধে লেখক বঙ্গবন্ধুর কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘‘অর্থনীতি অবশ্যই পুনর্গঠন করতে হবে। খাদ্য, আশ্রয় ও বস্ত্র অবশ্যই দিতে হবে মানুষকে। কৃষকের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ‘‘এই স্বাধীনতা আমার কাছে সেদিনই প্রকৃত স্বাধীনতা হয়ে উঠবে যেদিন বাংলাদেশের কৃষক, মজুর, দুঃখী মানুষের সকল দুখের অবসান হবে।" সেই দুঃখ আজ অবসান হয়ে বাংলার কৃষক আনন্দে ও সুখে দিন কাটাচ্ছে।’’
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশকে উন্নত হতে দিবে না বলে হাজার হাজার শিক্ষককে হত্যা করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে যায়। তারা জানতো একটি দেশের উন্নয়নের জন্য শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কতটা গুরুত্বপূর্ণ । লেখক ‘‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’’ প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, ৯০০ কলেজ ও ছয় হাজার হাইস্কুল কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সময় লেগেছে অল্প সেটা একমাত্র বঙ্গবন্ধুর কারণে।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ৫০ বছর পেরিয়ে এসেছে।এত অল্প সময়ে বাংলাদেশ যতটা অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সক্ষম হয়েছে সেটা করতে অনেক বড় বড় দেশ সক্ষম হয়নি, বিশেষ করে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ। তারমধ্যে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতি ছিল মন্থর।বাংলাদেশের অর্থনীতি রূপান্তরিত হয় ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে। সেখান থেকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ এবং মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় তিনগুণ । বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সম্ভাবনা দেখে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউবিএসের মতে বাংলাদেশ ২০৫০ সালে ১২ তম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। শেখ হাসিনা সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ গ্রহণ করে। তার মধ্যে একটি হলো মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া। মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে পদ্মা বহুমুখী সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রভৃতি- এগুলো থেকে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সুফল পাওয়া শুরু হবে। একসময় কৃষির উপর নির্ভরশীল থাকলেও বাংলাদেশে শিল্প-কারখানা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কৃষির উপর চাপ কমছে, মাথাপিছু আয় বাড়ছে। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন করা গেলে মাথাপিছু আয় হবে ১২৫০০ মার্কিন ডলার ।
স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই শিল্পায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে দৃষ্টি দেন এবং যেসব প্রকল্প পরিকল্পনা হাতে নেন সেগুলো ড. শামসুল আলম ‘‘শিল্পায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু’’ প্রবন্ধে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন । বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফেরার ২১ দিনের মাথায় বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন প্রতিষ্ঠা করেন, যা ভারতের লেগেছিল তিন বছর এবং পাকিস্তানের লেগেছিল ছয় বছর এবং এক বছরের মধ্যেই প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। এতে শিল্পায়ন শুরু হয় এবং ব্যাপক অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনঃনির্মাণ করা হয়। স্বাধীনতার শুরুতে রাষ্ট্রীয় কোষাগার শূন্য থাকা সত্বেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দূঢ় মনোবল নিয়ে প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভিত তৈরি করেন। সেই ভিতের উপর আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল,-‘‘এশিয়ান টাইগার’’। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বাংলাদেশে একইসাথে বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০, রূপকল্প ২০৪১ এবং পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা চলমান। এ তিনটি পরিকল্পনায় অবদান আলোচ্য বইয়ের লেখক শামসুল আলমের পরিকল্পনা। এত বড় পরিকল্পনা বাংলাদেশের প্রথম এবং বিশ্বের অতুলনীয় পরিকল্পনা। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা কালীন ২০২৫ সালের মধ্যে কর্মসংস্থান হবে ১০.৩৩ মিলিয়ন যার মধ্যে দেশজ কর্মসংস্থান হবে ৮.০৮ মিলিয়ন আর এর বেশিরভাগই অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে। আগামী ১০ বছরে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন হবে অল্পসময়ের মধ্যেই। তখন বাংলার মানুষ সুফল পেতে শুরু করবে। ‘‘বাংলাদেশের বিস্ময়কর উত্থান : ২০০৯ থেকে ২০২০’’ প্রবন্ধে লেখক বিভিন্ন অনুপাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেছেন। এজন্য একযুগে বাংলাদেশের মানুষের জীবন যতটা উন্নত হয়েছে বিশ্বের উন্নত দেশে সেটা হয়নি। বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে, শিল্প ক্ষেত্র উন্নত হয়েছে, শিল্প-কারখানা বৃদ্ধি পেয়েছে, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূর হয়েছে, সন্ত্রাসবাদ দুর্নীতি দূর হচ্ছে, বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হচ্ছে, দেশের সকল স্তরে প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে, যা ১২ বছর আগে ছিল শুধুই কল্পনা। চিকিৎসা সেবা খাত উন্নত হয়েছে। করোনা মহামারি মোকাবিলায় ২০২০ সাল থেকে সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপসমূহ আজ বিশ্বজুড়ে নন্দিত।
অর্থনীতি উন্নত করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ভূমিকা রেখেছিল। তাঁর নেতৃত্ব মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছে তাই মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। প্রাবন্ধিকের মতে, বঙ্গবন্ধুর সুদুরপ্রসারী চিন্তা ও গ্রামীণ উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপ আমাদের কাছে অনুসরণীয়। বঙ্গবন্ধুর কৃষি বিপ্লব ও সবুজ বিপ্লব কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশ বর্তমানে চাল উৎপাদন করে খাদ্য চাহিদা পূরণ করছে, মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন তৃতীয়। লেখক মনে করেন আমাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা, বাংলাদেশের উন্নতি, উন্নয়ন, মানুষের জীবনচিত্র সবই ‘‘গতিময় অর্থনীতি নির্বাচিত প্রবন্ধ সংকলন(২০২১)’’ গ্রন্থে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।গত এক যুগে মানুষের উত্তরোত্তর উন্নতি ঘটেছে যা আগে বাংলাদেশে ছিল শুধুই কল্পনা- এসবই সুন্দর তথ্যবহুল উপস্থাপনায় লেখক বিবরণ দিয়েছে, বিশ্লেষণ করেছেন। আর তুলনামূলক আলোচনা লেখকের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য।
অধ্যাপক ড. শামসুল আলম মনে করেন আমাদের উন্নয়নের জন্য কৃষি অর্থনীতি উন্নত করতে হবে। তার জন্য দরকার প্রযুক্তি। শেখ হাসিনা সরকার সেলক্ষ্যে কৃষিকে প্রযুক্তি নির্ভর করতে বিভিন্ন সেবা চালু করেছে। কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে সাহায্য করছে। উন্নত কৃষি প্রযুক্তি তৈরি করা হচ্ছে।শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থকরী ফসল উৎপাদন করতে বিভিন্ন সহায়তা প্রদানও অন্যতম ঘটনা।
এভাবে একটির পর একটি প্রবন্ধে সাবলীল ভাষায় সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম নিজস্ব চিন্তার জগৎ নির্মাণ করেছেন। আলোচ্য গ্রন্থটি তাঁর মৌলিক স্বরের জন্য পাঠককে সবসময় আকৃষ্ট করবে বলে আমি মনে করি।
(গতিময় অর্থনীতি নির্বাচিত প্রবন্ধ সংকলন’ ২০২১, ড. শামসুল আলম, আলোঘর প্রকাশনা, ২০২১, প্রচ্ছদ: শতাব্দী জাহিদ, মূল্য: ৮৫০ টাকা)
মিল্টন বিশ্বাস। বাংলাদেশ
-
ছড়া ও কবিতা
-
02-10-2021
-
-