অটোয়া, মঙ্গলবার ১১ মার্চ, ২০২৫
অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন শুনলেই - সুজন শান্তনু

অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন শুনলেই বুকের ভেতরটা কেঁপে ওঠে,
এই বুঝি কোনো ছেলেহারা মা আর্তনাদ করছে
এই বুঝি কোনো সদ্য বিধবা আহাজারি করছে
এই বুঝি কোনো প্রেমিক তার প্রেমিকার মৃত্যুতে রোনাজারি করছে
এই বুঝি কারো কপাল পুড়ল, কারো শূন্য হলো ঘর
আকাশের নিচে আকাশ, জমিনের উপরে জমিন
যুদ্ধশিশুর মত কেঁদে উঠছে অনিচ্ছুক বিচ্ছেদ 
শূন্য মাঠ, টঙের রঙচা কাপ ঠোঁপের স্পর্শের অভাবে ঠাণ্ডা হয়ে আছে
শূন্য সড়ক, পার্কের বেঞ্চিতে শ্যাওলা, শিশিরে ভিজে আছে ঝরাপাতার ঝাঁক 
শূন্য রেস্তোরাঁ,  কংক্রিটের পথে পড়ে আছে ছেঁড়া স্যান্ডেল।

অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন শুনলেই বুকের ভেতরটা হাহাকার করে ওঠে
এই বুঝি বিরান শ্মশানে চিতার আগুন গিলছে সজীব বাতাস
এই বুঝি হতভাগা মুয়াজ্জিন মাইকে জানান দিচ্ছে মাইয়্যেতের আখেরি সবক
এই বুঝি হাসপাতালের পাতালে পচছে লাশের হাড়
এই বুঝি ধেয়ে আসছে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম।

অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন শুনলেই বুকের ভেতরটা স্তব্ধ হয়ে যায়
শরীরের শেষ সুতোটাও খসে পড়ে যায়
মনে হয় উত্থান দিবসে কোটি উলঙ্গের মাঝে আমি একা
কেউ তাকাচ্ছে না কারো দিকে, কারো নেই অযাচিত কৌতুহল 
হঠাৎ তুফান আসে, শহরে বন্যা হয়, দুর্ভিক্ষে মরে পড়ে আছে খাদ্যগুদামের প্রহরী
ওয়াক আউট করে সংসদে ঝিমিয়ে পড়ছে পুনর্বাসনের অধ্যাদেশ 
ওভারব্রিজের উপর ধ্যানে বসে আছে ল্যাংটা শাহ্।

অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন শুনলেই চোখের সামনে চারপাশ শূন্য হয়ে যায়
মনে হয়, ফ্যাটম্যান বিস্ফোরিত হচ্ছে, পুড়ছে নগর আর আমার আমিকে তুলে দিচ্ছি রাক্ষুসের পাতে। 

ওহ্ মহামারী,  ইসরাফিলের শিঙ্গা বাজাইস্ না আর।

সুজন শান্তনু 
ধানমণ্ডি, ঢাকা