অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
গোলাম কবিরের একগুচ্ছ কবিতা

     ভালোবাসলে
ভালোবাসলে সবাই পাখি হয়ে যায়, 
ভালোবাসলে সবারই হৃদয় 
অসীম নীল আকাশ হয়ে যায়, 
ভালোবাসলে সবারই বুকের মধ্যিখানে 
একটা নদী বয়ে যায়, 
ভালোবাসলে সবাই রঙিন প্রজাপতির 
মতো সুন্দর হয়ে যায়! 

ভালোবাসলে হঠাৎ করেই কারো 
হৃদয়ের জমিনে অবিরাম তুমুল বৃষ্টি হতে থাকে, 
কখনো মিষ্টি রোদে ঝলমল করে 
হৃদয়ের শুভ্র আকাশ আবার কখনো  
অকারণে হঠাৎ করেই হৃদয়ের আকাশটা
ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যায়, 
গুড়গুড় করে মেঘ ডাকে আবার 
একসময় আকাশটা ভীষণ ফর্সা হয়ে যায়
কিশোরীর নরম চালধোয়া হাতের মতো।

     একটা মাত্রই দোষ আমার
মি নদীকে ভালোবাসি এই একটা
মাত্রই দোষ আমার, এছাড়া আর কোনো 
দোষ তো চোখে পড়েনি কোনোদিন। 
আমার একটা মাত্রই কষ্ট ওকে ছাড়া
নিজেকে অসম্পূর্ণ মনে করি! 

ভালোবাসা ছাড়া আর কোনো 
পাগলামি স্বভাব আমার মধ্যে নেই, 
সেজন্য কেউ যদি আমাকে পাগল বলে 
আমার কোনো দুঃখ নেই, বিকারও নেই! 

আমার বুকের মধ্যেই সেই নদীটার 
বয়ে চলা নিরবধি, তাই কেউ
দেখতে পায় না সেই নদীকে, 
ওর সাথেই সারাক্ষণ কথা বলা বিড়বিড় করে,  
ভাবের আদানপ্রদান, আনন্দ বেদনার 
দীর্ঘ সাঁকো পার হওয়া রাত্রিদিন, 
ওর নরম বুকে সাঁতার কাটা, 
চিৎ সাঁতারে ভেসে থাকা কখনো আবার 
ওর ভালোবাসায় ডুবে থেকে 
ডলফিনের মতো হঠাৎ ভুস করে ভেসে ওঠা। 

লোকে বলে - পাগলে কী না করে,
বলুক না সবাই! 
আমার তাতে কী-ই বা আসে যায়! 
ভালোবাসলে তো মানুষ অনেকটা 
পাগলামিই করে, ভালোবাসার জন্য 
আমি নাহয় একটু পাগলই হলাম! 

কারো তো কোনো ক্ষতি করিনি 
কোনো কালেই, তাই আমাকে কেউ পাগল
বললে বলুক না, বলতে থাকুক আমৃত্যু!

     মৌনতায় ভালোবাসার চারুপাঠ
না, আজ আর কোনো কথা হবে না,
দিনটি হোক শুধুই নীরব মুখোমুখি
বসে থাকা পরষ্পরের দিকে তাকিয়ে থাকার। 

এভাবেই আজ হোক মৌনতায়
ভালোবাসার কথা বলা চোখের ভাষায়!

দুপুর গড়িয়ে লাজুক সন্ধ্যা নামুক
তোমার চোখে, লজ্জা পাওয়া লাল রঙের
সূর্যটা ডুবে যাক, হেমন্তের কুয়াশা 
চাদর বিছিয়ে পথঘাট ঢেকে দিক, 
আজ কোনো কথা নয়!

শুধুই চুপচাপ বসে মুখোমুখি তাকিয়ে 
কেটে যাক সারাবেলা, বকুলের গন্ধে
মাতাল হাওয়ায় উড়তে থাকুক 
তোমার অবাধ্য এলো চুল গুলো।

নীরব থেকেই আজ হয়ে যাক 
বলতে চাওয়া অনেক না বলা কথা, 
মৌনতায় আজ হোক ভালোবাসার চারুপাঠ।

গোলাম কবির। বাংলাদেশ