অটোয়া, বৃহস্পতিবার ১২ জুন, ২০২৫
শাহ্‌ বাহাউদ্দিন শিশিরের দু’টি কবিতা

সময়ের ক্লান্তি  

নেক গুলো স্বপ্ন ছিল, 
আশার আভায় ছড়িয়ে গেল।   
গুচ্ছ ফুলের মতন জীবন,
ফুটেছিল কী সম্ভারে।   

ভালবাসায় গা ভিজিয়ে,
চেয়েছিলে অনন্ত সুখ।
বয়ে গেল সুখের সময়,
ধীরে ধীরে সব নিভিয়ে।

সুদূর পথের পথিক বটে,
হঠাৎ করেই পৌছে গেছে।
ঘড়ির সময় চলছে বয়ে,
আঁধার যে গ্রাস করল তারে।

পাথর আঁটা শক্ত বাঁধন,
যায় ছুটে আজ একে একে।
শেষের বেলা হারিয়ে আলো,
ক্লান্ত জীবন যায় যে ঘুঁচে।             

সময়ের পথে   

প্রভাতী শৈশবে সোনালী রোদের সন্ধানে পথ চলা হয় শুরু কোন এক শুভক্ষণে, 
আধাঁর উপেক্ষা করে ছোট্ট পায়ের পথ চলা হয় শুরু; আলতো অথচ দৃঢ। 
প্রাণোচ্ছ্বল মৃগয়ার চঞ্চলতায়, কত আশা প্রতিশ্রুতি, রঙিন স্বপ্নের চাদরে ঘেরা, 
জমে থাকা কষ্ট আর গ্লানির কাছে পরাজয় না মেনে, চলার শুরু অনেক ভোরে।      
প্রভাতী আবীরের ছটায় প্রজ্জ্বলিত ধূমকেতুর মতোই জ্বলে উঠে ক্ষুদ্র জীবন সমর প্রাঙ্গণে,
আবছা আঁধার ঘুচিয়ে আলো যখন ছড়াতে শুরু করে, কত পথের হয় শুরু কিবা শেষ। 
দীক্ষার হয় শুরু গুরুজনের কাছে বিশ্বলোকের অভিধানে, কত চড়াই উতরাই দিয়ে পাড়ি, 
বহু শ্রমে, বহু ত্যাগে বিবর্তিত ও বিবর্ধীত অর্জন দ্যুতি বেগে এগিয়ে চলে মধ্যাহ্নের পানে ।

রোদেলা দুপুরে আমরা থামিনি অবসাদে, চলেছি এগিয়ে সময়কে হেলা না করে,  
শুধু হেঁটেছি গন্তব্যের আর কাজলা দীঘির জলে মিটিয়েছি তৃষ্ণা আঞ্জুলি ভরে। 
মেঘমেলা দেবে দুদণ্ডের আশ্রয় এই আশায় করিনি কোন দাবী নীল আকাশটার কাছে,
খাঁখাঁ রোদে আর আষাঢ় শ্রাবণের অত্যাচারের পুরস্কার আপরাজিত সৈনিকের খেতাব।
আলোকিত পথে মরীচিকার হাতছানি আর চোরাবালি চর এখানে ওখানে আছে ছড়িয়ে,
ভুল করতে মুহূর্তমাত্র আর তার মাশুল দিতে সারা জীবন যায় কেটে হিসেবের খাতা খুলে। 
আত্মশুদ্ধির লোভে আগ্নিপুজারি হয়ে মিছেই উঠেছি রথে ঘূর্ণিঝড়ের আধাঁর কালো রাতে,
অতৃপ্তি আত্মা ধুলায় শয্যা নিয়েও মানিনি হার, পথ চলায় ঠিকই উঠে দাঁড়িয়েছি সোজা হয়ে। 

পালা বদল করেই চলতে থাকে এক একটি অধ্যায়, পথের মাঝে একে একে খেলার হয় শেষ, 
কত রূপে রঙে জীবনের প্রতিটি বেলাইনা সাজানো, প্রতিটি স্বাদই কতনা ভিন্ন অন্যটির থেকে।    
অবিশ্বাসী আধাঁরে পথ হারিয়ে খুঁজেছি আলোর ঠিকানা, শেষে মেলে আশ্রয় বট তলার মেলায়,
মাটির টানে, প্রাণের সুরে বেঁধে গান বাউল কতনা সুরে, ভালবাসার স্বপ্ন ছায়ে অপরাহ্নের অবসরে।
প্রতিটি শাখায় আর উপশাখায় সময়য়ের সাথে ধরে বাজি চলে গান নানান লয়ে আর তালে, 
চড়াই উতরাই চলতেই থাকে সান্নিধ্য কালে, এই রং বদলের রচনায় কত ফুল যায় ঝরে অকালে।    
দিন শেষে সূর্য যখন পুরোটাই ঢলে পড়ে, পথ চলার হয় শেষ আর অবসান ঘটে রং বদলের,
ততক্ষনে ক্লান্তি সপ্তর্ষিমণ্ডল ছোঁয় শরীরের প্রতীটি তারে বেজে ওঠে সমাপণী গান শুধুই ধূসরে। 

শাহ্‌ বাহাউদ্দিন শিশির 
অটোয়া, কানাডা।
shah@royallepage.ca