অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
বাদশা সোলাইমানের রথ - সুজন শান্তনু

সারি সারি চাঁদের বিপরীতে একটি বাঁশ (আদতে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঘাস) নির্লিপ্ত তাকিয়ে প্রকাশিত সকল কবির কাব্যকে উপহাস করছে;
এই স্বপ্ন আমি বহুবার দেখেছি।
বাদশা সোলাইমানের রথে চড়ার সৌভাগ্য আমার কোনদিন হয়নি। 
পিঁপড়ের কাছে সমরবিদ্যা শেখার মৌসুমে কামসূত্রকে অস্বীকার করি।
বলে রাখা ভালো, আমি কিন্তু নপুংসক নই।
আমারও কামনার পারদ উষ্ণতা পেলে বাড়ে,
মাংসের যোগান দিতেই নিরামিষ কিটের মত
আমার রক্ত রগে রগে হামাগুড়ি দিয়ে চলে।
ভাওয়াল গড়ের বৃক্ষের মত আমি কোন কোন 
সময় নিজের ভেতরকার রূপ বদলাই,
লাল মাটির ভেতর কেঁচো হয়ে খুঁড়ি সভ্যতা।
যা বলছিলাম, বাদশা সোলাইমানের রথে চড়তে না পারার ব্যর্থতা আমাকে বড় মুশকিলে ফেলে দিল।
ওদিকে রানি বিলকিসের কাছে পাঠানো আমার কবিতা হুদহুদ পাখি পৌঁছুতে পারলো না।
স্বপ্ন বলে কথা! 
কিন্তু কিছুই যদি বাস্তব না হবে, উপত্যকার পাশে নির্জন সরাইখানায় এখনো কেন কেউ আমায় কবিতার আসরে ডাকে?
কে ডাকে?
রুমী কি শামসের খোঁজে কোনদিন বাঙলায় আসেননি?
একপাশে মদ, একপাশে কবিতা
সামনে নাচে নর্তকী বালা
আমি সম্রাট নাকি কবি?
পকেট থেকে মোহর ছিটাতে গিয়ে দেখি সেগুলো কবিতার পালক হয়ে উড়ছে।
আমাকে স্বর্গের মোহ দেখিয়ে পররাত্রের অন্ধকারে মিলিয়ে যাচ্ছে ধর্ম।
আমি নাস্তিক নাকি কবি?
নয়তো আমার বিশ্বাসের বৈয়ামে পুরে রাখা ঈশ্বর কেন আমাকেই দিকভ্রান্ত বলে?
ও ভয়- নরকের
ও লোভ- স্বর্গের
কে এমন আছে ভালোবেসে ঈশ্বরকে ডাকে?
ও বাদশা সোলাইমান, এখন কে আমার স্বপ্নের তা'বীর করে দিবে?
প্রকাশিত সকল কবির কাব্যকে উপহাস করার ক্ষমতা আমার কি আছে?
আমি তো লাঠিতে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক মৃত কবির উপমান।

সুজন শান্তনু
ঢাকা, বাংলাদেশ