অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
দুইটি কবিতা - মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ

১) প্রত্যাহার
সিদ্ধ হয়ে যাওয়া টি-ব্যাগের দুঃখটা
পুঁজি করে অবিরাম সুখপান চলমান। বাইরে টিকে থাকে
বর্ষণমুখর বৈষম্যের ভোর।

পোড় খাওয়া হৃদয়
খলবলানো নদীর সহোদরা স্রোত;
যাচ্ছেতাই ডুবসাঁতার খেলে।

খুলে যাওয়া কবরীতে জুলজুল করে তাকিয়ে থাকার কলকাসুন্দার মেয়েরা
আমার,
অনৈতিকতার জালে বন্দিনী,
মানবিকতা  প্রদাহ নিয়ে বেঁচে আছে
খুনসুটির হরেক সিলেবাসে।
আর কিছু বিগলিত কিংবা তরল সোহাগ,
গ্লিসারিনের মতো অধরা থেকে গেল।

গার্হস্থ আলোছায়ায় মিশেল আস্বাদনে
এবং প্রাণপণে সূর্যের মুখ ঢেকে 
বেলা যায়,
চিরায়ত মধ্যবিত্তীয় অভ্যাসটা ছেড়ে থাকতে পারিনা কেউই।

২) গোগ্রাসে গিলছি সিরিজকষ্টের অন্ধকার 
প্রজাপতিরা পাখনা মেলে উড়তে ভুলে যাচ্ছে।
নিভতে বসেছে অলস মোমবাতির সুতীব্র দহনশিখা।
আরক্তিম সূর্যকে অস্পৃশ্য  হাতের ছায়ায়  ঢেকে দিলাম।
বন্ধ করে দিলাম অবারিত রোদ,তার নিরবচ্ছিন্ন আনাগোনা।

নদীগুলোর গতরে পাহাড়ের গান আর নানান শৈলীতে ভরপুর ছিলো।
এখন নদীও দেখছি নিরাপদ দুরত্বে চলে গেছে,ঝর্ণাজল জৌলুসহীন।
বিস্তীর্ণ দুপাশের জীবনে কারুকাজ থেকে ফিরিয়ে নিয়েছি মুখ।
পাখিসব করেনা রব,উদার অন্তরীক্ষে ঝরেনা নিঃশব্দে পালক।
পাখি হবার সাধ ছিলো বহুকালের উচ্ছ্বসিত সুখের আশায়।

গিয়েছে থেমে পাথরের মতো। মৃত্তিকার জঠরে নবজন্মের শোরগোল শুনছি না তো। বর্ণিল শস্য ভরা ছবিগুলো কেউ কালো পর্দায় দিচ্ছে ঢেকে।জেনেশুনেই সবুজ পৃথিবীর নিরব মার্সিলিয়াকে মেরে ফেলার খেলা হরদম দেখি,জীবনটা পড়ে থাকতে দেখি।ক্ষেপণাস্ত্রে,মারণাস্ত্রবাহী ড্রোনের গায়ে গায়ে ঘেঁষাঘেঁষি,ঠেসাঠেসি।
প্রতিদিন উঁকি দিয়ে যায় হারানোর শোক,না পাওয়ার কর্কশ গলার চর্চা কতিপয় অশুভ শব্দের অনৈতিক  কোলাহল ঘিরে দৈন্যতার চাষবাসে অভ্যস্ত হতে হতে হয়েই গেলাম কয়েদী নিয়তির ঘোলাটে সময়ের গরাদে বন্দী গোগ্রাসে গিলে খাচ্ছি অন্ধকার।

মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ