অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
বিকাশ চন্দ-র দুটি কবিতা

১) হিম ঘুম
বুঝিনি নিঃসঙ্গ জীবন অরব আলোর কথা 
বেপরোয়া যন্ত্রণা ছুঁয়ে গেছে শস্যের বিছানা 
আশ্চর্য পাতাগুলো বুঝে গেছে বিনিদ্র খিদের কথা
প্রীতিময় আত্মার কথা জানে সকল প্রাণের মানুষ 
ছেঁড়া শাড়ির দায় নেই ঢাকনা খোলা গোপন কিছু
অজস্র কান্নায় আনমনে কাল ঘুমে সৌজন্য সুখ
বংশ লতায় জড়িয়ে আছে নশ্বর সোনালী ফসল 
দু' হাতে চেপে আছি কণ্ঠ নালী ঊর্ধ্ব মুখে আলো শিহরণ 
কারা যেন ছিঁড়ে ফেলে শরীরের জ্যোৎস্না কাঁচুলি
চুইয়ে পড়ে ভেতরে বাইরে অনাহুত রক্তের অঞ্জলি 

কালো চুলে কেউ অপেক্ষায় রাতে চন্দ্রমুখী কথা 
ভেসে যাচ্ছি প্রতিদিন নিশ্চিত অসহায় ঈশ্বর  ছোঁয়া 
মহার্ঘ্য কোন শরীরের প্রতি কোষে তখন রক্ত প্রবাহ
অজস্র নীল পাতায় চকচকে লাল ছোপ অরণ্য ক্ষুধায়
বুঝিনি তো বুকের ভেতর স্মৃতি স্পন্দন জন্মের অঙ্কুর কথা
এমন যাপন কালে অস্থির বেঁচে থাকা কী অমৃতময়
সকল গরিমা কাল ছুঁয়ে আছে ঝলসানো শব্দমালা 
তবুও জীবন চক্রে ঝুলে আছে সহস্র মুখ অনন্ত ছায়ায় 
কেউ চায়নি বিরহ ক্ষমাহীন হিংস্রতা জানে অবক্ষয়
আর কত যন্ত্রণায় মাতৃমূর্তির সম্ভ্রম হারিয়ে যায় দখে হিম ঘুম

২) প্রণয় জলের ক'ফোঁটা
লাল পদ্ম দুটির নম্র আলোয়
কথা শব্দের মুক্ত গানের অনিন্দ্য নিনাদ
পাঁপড়ি কোরকে খুলেছে উষ্ণ হৃদয় পুলক
সঞ্চিত যত বন্দিত কথা গান আনন্দ ভেলায়
প্রজাপতি ওড়া উড়ি প্রাণ কত পরাগ রেনু ঢালো 
উজ্জীবিত পুরুষ পাগল নীল ছায়া তার
শরীর থেকে শরীর খসে পড়ে মোহন রূপ
সবুজ বাসরে উৎস খোঁজে জন্ম দিনের আলো 
উদ্ধতস্বভাব স্তব্ধ একাকী স্তবের কালে
অমল আত্মার সেতু হয়ে ঝুলে আছি জীবন্ত শরীরে 

বৈরাগী সময়ে ডেকেছে চূর্ণ কথামালার অভিমান 
সকল ঐতিহ্য বাঁচে শিরায় শিরায় ধমনির টানে
বহুকাল বেঁচে থাকে অশরীরী জীবন কথা 
হীনতম সময়ে পথে ঘাটে হাটখোলা অমূল্য যৌবন 
অভাবনীয় প্রণিপাত অঞ্জলিপুটে ঋদ্ধ দুটো হাত
সবেদন বিদ্বজন মনীষা আছেন নিরাপদ ছত্র ছায়ায়
শুধুই অপরাধ বোধ বোঝে রাতের প্রকৃতি চন্দ্রকলা 
নক্ষত্র সংসারী দল বৃত্তে আপনিও আশ্চর্য পক্ষপাতী 
কে জানে আত্মবলিদান চেনে শব বাঘিনীর চোখ
তবুও করতলে ঝরে পড়ে প্রণয় জলের ক'ফোঁটা সঞ্চয় 

বিকাশ চন্দ
পূর্ব মেদিনীপুর 
পশ্চিম বঙ্গ,  ভারত