পদ্মফুল - সুলতানা শিরীন সাজি
আমি তোমাকে দু'টো শব্দ দেবো।
তুমি কবিতা লিখবে।
নাহ, ভাব-সম্প্রসারণ নয়।
ধরো, বললাম,
অপেক্ষা।
তুমি লিখবে,
প্রতিদিন কাঠের সাঁকোর প্রান্তে বসে,
অদ্ভুত শান্ত লেকটার ঝকঝকে পানিতে পা ডুবিয়ে,
মাছেদের চোখের দিকে তাকিয়ে, নিজের ভিতর পাড় ভাঙার শব্দ শুনি!
তোমাকে মনে পড়ে,আর কত নামে যে ডাকি!
তোমাকে মোনালিসা বলতে ইচ্ছে করে, আবার কাদম্বরীও।
রহস্য আমাকে টানে!
আমি লেকের পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকি,
আর মনেমনে আমাজনের গভীর জংগলের মধ্যে হেঁটে বেড়াই।
মনে হয় দূরের কোন সবুজ থেকে হলুদ শাড়ি পড়ে তুমি হেঁটে আসবে।
আমি চোখ বন্ধ করে সেই ক্ষণটার জন্য অপেক্ষা করি!
পরের শব্দটা হলো,
চোখ।
তুমি বলবে, একটা প্রাচীন গল্পের কথা,
এক কবি ভালোবেসেছিল এক রাজকন্যাকে।
নদীর জলে পড়েছিল যার ছায়া।
দু'জনের ভাষা ছিল ভিন্ন, ওরা শুধু চোখের ভাষায় কথা বলতো!
চোখের ভাষার শক্তি যে কি অপরিসীম!
একটা জীবন কেটে গেলো ওদের শুধু চোখের সাঁতারে!
একদিন চোখে চোখে কবি বলেছিল,অপেক্ষায় থেকো!
পরদিন রাজকন্যা লেকের বুকে পদ্মফুল হয়ে গেলো।
চোখের ভাষায়, অপেক্ষাকে সে পদ্মফুল ভেবেছিল!
(সে বললো, তোমাকে আমি আর কোনদিন কবিতা লিখতে বলবোনা!)
দূরে কোথাও গান বাজছিল,
“আমরা এমনি এসে ভেসে যাই
আলোর মতন, হাসির মতন
কুসুমগন্ধ রাশির মতন
হওয়ার মতন, নেশার মতন
ঢেউয়ের মতন ভেসে যাই"
সুলতানা শিরীন সাজি
অটোয়া, কানাডা
-
ছড়া ও কবিতা
-
25-12-2023
-
-