অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
শীতের রাতে - কিরণময় নন্দী

রাতের শহর গভীর ঘুমে
তবুও হাজার আলোকরাশির মেলা,
আমার গাঁয়ে সবাই এখন কাজের মাঝে
হয়তো কোনো শিশু মায়ের কোলে ঘুমিয়ে দুপুরবেলা।

হয়তো শীতের রোদে গা এলিয়ে সাধন জেঠু
কিংবা নতুন কাকি গুঁড়ি বানায় হামান-দিস্তা ঠুকে,
পৌষ-পাবনে খেজুর গুড়ে ডুবিয়ে
জমিয়ে খাবে নানান স্বাদের পিঠে।

জানো মা এখানে ভীষণ শীতের কামড়
বরফ জমে চারিদিক শুধুই শুভ্র শীতল,
দেখতে দেখতে প্রায় দুটো বছর পার
কি জানি ফিরবো কবে? মন ভীষণ চঞ্চল!

জানি তুমি হয়তো ভীষণ অভিমানি
ভাবছো খোকা হয়তো ভুলেই গেছে অন্য খোকার মত,
সারাদিনে নানান কাজের শেষে
খুঁজে বেড়ায় শৈশবের মিষ্টি স্মৃতি যত।

উল্টোদিকে অভাব আর উপহাসের জোড়াফলা
আজও বুকের মাঝে মৃদু মৃদু বাজে,
টাকাপয়সা বদলে দেয় জীবন পথের গতি
"অর্থ মূল্যহীন "এসব কথা কাব্যে উপন্যাসে সাজে।

আমারও কি ইচ্ছে করে মাগো
তোমায় ছেড়ে আর গাঁয়ের অনেক প্রিয় মানুষ ভুলে?
শীতের রোদে ইচ্ছে করে কাটায় আলসে দুপুর
সন্ধ্যেগুলো বন্ধুদের সাথে ক্যারাম আর আড্ডা-মশগুলে।

যাবো মা ফিরে যাবো আর কটা মাস 
ছুটকির বিয়ে হবে ধুমধাম করে,
আমাদের ছুটকির হবে নতুন ঘর
বাবাও উপর থেকে পাঠিয়ে দেবে আশীর্বাদ প্রাণভরে!

রাতের শহর এখনও গভীর ঘুমে
বরফ চাদরে ঢাকা চারিপাশ,
আমি আজ একা জেগে বিদেশভূমে
অতীতের স্মৃতি খুঁজে চলি একরাশ।

কিরণময় নন্দী
 খানাকুল, হুগলী