দু’টি কবিতা - ফরিদ তালুকদার
ভুল হয়
ভুল হয়
খুব বেশী ভুল হয়
কারনে অকারনে ভুল হয় আমার
নিজেকে না চিনে ভুল হয়
নিজেকে চিনতে গিয়ে ভুল হয়
অলস মেঘের দেশে
স্বপ্নের ভেলা ভাসিয়ে
ভুল হয়
ভালোবেসে ভুল হয়
ভালোবাসা পেতে গিয়ে
আরও বেশী ভুল হয়
তোমার চরণ ধুইয়ে দিব বলে
পদ্ম পাতার শিশির কুঁড়োতে গিয়ে
ভুল হয়
কষ্টের দহনে বেলা..
বিষাদী বৃক্ষ শাখায়
সান্ধ্য ফুলের উচ্ছ্বাস দেখে
ভুল হয়।
অদৃষ্টের লিখন মাখা শরীর
ঘুঁটে কুড়ানো কিশোরীর
নিষ্কলুষ অনিপাট হাসি দেখে
পৃথিবীকে চিনতে
ভুল হয়
পাগলা গারদে..
গরাদের পিছনে
সুস্থ মানুষ
আর..
লাল কার্পেট, মঞ্চের কাতারে
উন্নত শির উন্মাদ, খুনী ধর্ষক দেখে
সভ্যতাকে বুঝতে
ভুল হয়
নব্য সব জিউসের দরবারে
শৃঙ্খলিত মানবতা আর..
সারিবদ্ধ মানুষের প্রনতি দেখে
ভুল হয়।
স্বপ্ন নয়.. ভালোবাসা নয়..
দানব দেবতাদের কাছে
বর্গা দেয়া এই পৃথিবীতে
ভয় গুলোই শুধু সত্যি হয়
ভয় পেতে তাই ভয় হয়
খুব বেশী ভয়..
তোমাকে হারানোর ভয়
মনের গোপনে লুকানো
সুবোধের মৃত্যুর ভয়
মানুষ রূপী জানোয়ারের হাতে
অর্থ আর..
মারনাস্রের খেলনার ভয়
হন্তারক সময়ের হাতে
নিষ্পাপ শিশুর খুনের ভয়…
কেবল ভয়ের রাজত্বে জীবন...
ঠিক আমার জন্মের মতই সত্যি
হয়তো ওটাও একটা
ভুলের ফসল
ভুলের স্বরলিপিতে বাঁধা জীবনে..!!
জহুরের মাতাল সন্ধ্যা ( আঞ্চলিক উচ্চারণে )
সন্ধ্যা অহন গোলাপি
বোতলের তলায় নাইমা আইছে
মদ..
কিন্তু মাতাল অই নাই..
কলকির দমে ভারী কিছুডা
খুপরির বাতাস
তয় অতডা বেসামাল অই নাই..
মদের ঘোরে আমরা
অতডা মাতাল অই না
যতডা তোমরা অও ট্যাহার ঘোরে
কলকি টাইনা
আমরা অতডা বেসামাল অই না
যতডা তোমরা অও ক্ষেমতার লোভে
এই পৃথিবীডারে সাক্ষী রাইখা কইতাছি
অসুস্থ মাতালদের চাইয়া
সুস্হ মাতালেরা হালায়
অনেক বেশী ক্ষতারনক
না না তাই বইলা তোমরাও সব
ধোঁয়া তুলসী পাতা নও
হর হামেশাই তো চালাইয়া যাও
পাঁচতারা হোটেলের…
ঐ যে কি জানো কও..?
ধুর হালা ভুইলা গেছি…
বার না কি..?
নিভু নিভু বাতির
ঐ ঘুম ঘুম ঘরে..
তোমরাও তো বেশ চালাইয়া যাও
দামী মাল..
তবে পোশাকের তলে
গন্ধডারে তোমরা
ঢাইকা রাখতে হিকছো ভালোই
আসলে তোমাগো হগল গন্ধই
ঢাহা থাহে..!
মদের ঘোরে তোমরা যহন
আরও আরও…
তাজা রক্তের গন্ধ হুঁকতে থাহো
আমরা তহন..
সব কষ্ট..
সব ক্ষোভ ভুইলা গিয়া
ভালোবাসার খোয়াব দেহি
আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসার খোয়াব..!
এই কে আইলারে আবার…?
ওহ্ তুমি…?
তুমি তো….
সেফালি না..?
হুঁ.. হুঁ… মনে পড়ছে অহন
তুমি তো হেই সেফালি
আমার লগে ঘর করবা কি করবা না
হেই ভাবতে ভাবতে
আমার পুরা যৌবনডারে
হুতায় ঝুলাইয়া
হ্যাষে বিদেশি দেনমোহরানার
পিঁড়িতে গিয়া বসলা
তুমি আবার কোত্থাইকা…?
ভুল দেখছি নাতো…?
এই রে…
এট্টু বেশীই চড়ছেরে আজ
ভালো মাল দিছোস রে চন্দ্রমুখী
এই নে পাঁচ ট্যাহা তোর
দ্যাখছোস তো..?
আমরাও হালায় বখশিশ দিবার জানি
এই নে…
এই সারছে…
কারেন্ট গেলোগা আবার…
হালা...
ঝুপড়ি বাসীর কারেন্ট…
দরকার কি..?
কুপি জ্বালিয়ে কি অইবোরে চন্দ্রমুখী
থাকতে দে আন্ধারে..
হারা পৃথিবাডাই মাগার ঢাইকা যাক আন্ধারে...
হালায় লক্ষ বছর ধইরাই
আমরা ভুল মানুষেরা
এই গাড়িডারে
ভুল রাস্তায় চালাইছি..
এডা অহন ক্রাশ হইয়া যাউক
আর এট্টা নতুন পৃথিবীর জন্ম হউক
নতুন সূর্যের নীচে
বাতিডা নিভাইয়া দে চন্দ্রমুখী…!!
ফরিদ তালুকদার
টরোন্ট, কানাডা।
-
ছড়া ও কবিতা
-
07-05-2019
-
-