অটোয়া, শনিবার ২০ এপ্রিল, ২০২৪
দালান জাহানের পাঁচটি কবিতা

দাঁড়িয়ে থাকি একা
এমনই এক উজ্জ্বল রাতে
হৃদপিণ্ড হলো সোডিয়াম লাইট
চকচক জ্বলে উঠলো 
মন ভাঙা গিটারে গেয়ে গেল গান
জলের তলে নড়ে উঠল জলজ মহাপ্রাণ। 

একদিন এই শহরে 
আমি ছাড়া তার অপেক্ষা ছিলো না
রাতের সরুগলি আমাদের পদশব্দে
ফিরে পেত আকস্মিক মানুষের দেখা। 

আজ কতো মানুষ 
তার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকে 
শুধু আমি দাঁড়িয়ে থাকি একা।

ঘর বাঁধলেই সংসার হয়না
তুমি এখানে তাকাও 
জ্বলন্ত চোখের সরুভূমিতে
দেখো সাগর আছে নদী আছে ! 
তুমি এখানে তাকাও 
ঠিক যেভাবে তাকাতে হয়
মাখনের একটু উপরে 
এখানে পর্বত আছে শৃঙ্গ আছে! 

ডায়রি কলম অথবা অস্তরাগ সন্ধ্যার কবিতা
কিছু কি দেখতে পাচ্ছ তুমি? 
দেখো খালি চোখে সব দেখা যায় না 
তার জন্য তাকাতে জানতে হয় ভেতর থেকে
উপর থেকে যদি ভেতর না দেখতে পার
তবে তুমি ডোবে যাবে
সিফিলিস গণোরিয়ার স্রোতে 
এবং শেষ পর্যন্ত নিজেকে আবিস্কার করবে
কোন এক রোবটিক্স ক্যাসিনোয়।

ডেট ফেল গমে আর পেট পুরে না
শ্রমিক ও এখন দুর্ভিক্ষ মুছতে জানে
শোন পাগলী মেয়ে
এতযে প্রেম প্রেম কর 
ঘর বাঁধলেই সংসার হয়না-
যেমন সন্তান জন্ম দিলেই হয়না জননী ।

অন্ধকারে মুখ চেনা যায়
রাত হলেই ঢুকে যাই সিরামিকের কৌটার ভেতর
একটি হিমাঙ্গ হাত
আমাকে বের করে খাওয়ায় সকালের রোদ
আমি টনটন করে জেগে উঠি
কোন এক ধূলো পড়া হৃদয় বীণায়।

বস্তায় ভরা অভিযোগ নিয়ে প্রতিদিন যাই
জীবনের হাঁটে
সোনার তেলে ভেসে যায় ইজারাদারের মুখ
সস্তায় বিক্রি করি অনাহূত সকাল-বিকাল।

সন্ধ্যা সময়টা প্রার্থনার
দাদু বলতেন এ সময় পৃথিবীর দেয়াল ফেটে
নির্গত হয় অন্ধকার অশ্রু
এসময় মানুষের মুখ চেনা যায়।

নরসুন্দর
দৃশ্যের আড়ালে লুকিয়ে যায় বিড়াল 
অভিনেতার ক্লান্তি যেন হয় না আর শেষ
সিংহ মামা কেশের জোরে 
এক প্লেটে ভাগ করে দেয় তিনটি আকাশ হাজারটা ছায়া দৌড়ে চলে নভোমণ্ডলে। 

রাহুল স্টাইলের ব্রেকআপ শেষে 
এখন পর্যন্ত সুস্বাদু কাস্টমার নেই
ভবিষ্যতে ফেলে আসা অতীত দেখতে 
ঘটমান বর্তমান স্ক্রিনে 
যুগের পর যুগ তাকিয়ে থাকে নরসুন্দর। 

ধ্যান ভাঙার পর বোঝতে পারো
অবচেতনে বেশি ভাবলে মানুষ কঙ্কাল হয়ে যায়।

সন্ধ্যার গল্প
আজ সন্ধায় যে শিশুটি এসেছিল
একটি লোহার শিল্পালয়ে কাজ করে সে
আগুনে জ্বলা লোহার মতোই
জ্বলন্ত তার হাত।

বাদামী নিঃশ্বাসের একটি নিঃশব্দ গল্প
রক্তক্ষরণের সাথে ঝরেছিল আয়ুতে
একজন পথিক গল্পটি তুলে নিতে চাইতেই
রক্তের দেয়ালে অঙ্কিত হয় পদচিহ্ন।

পর্বত ছুঁয়ে যায় অসুস্থ লালা
নিঃশব্দ অন্ধকারে দাঁড়িয়ে শিশুটি ভাবছে
কাল সন্ধায় গল্প নিয়ে কার কাছে যাবে।

দালান জাহান । টাঙ্গাইল