জাতীয়তাবাদ ও এথনিক অভীপ্সাঃ যুগ ও সময়ের একটি সন্দর্ভ
জয়প্রকাশ মণ্ডলঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-৪৫) পর তৃতীয় বিশ্বের সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশগুলি উন্নত বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশক শক্তির বিরুদ্ধে লাগাতার দীর্ঘ জাতীয় আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে সদ্য স্বাধীনতা লাভ করেছিল, সেই রাষ্ট্রগুলির অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও জাতিগঠন প্রক্রিয়া আজও সম্পন্ন হয়নি। বহুসংস্কৃতবাদের আদর্শ কাঠামো এখানে প্রায় অনুপস্থিত। উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া কিছু সরকারী নির্দেশাবলী ও আইনের অনুশাসনের (Rule of Law) দ্বারা প্রভাবিত প্রায় প্রতিটি দেশের সমাজব্যবস্থা বহুত্ববাদী বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক (Symbolic Statr of Integration) হয়ে উঠতে পারে নি। বরং বারংবার উত্থাপিত হয়ে চলেছে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর দ্বারা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর শোষিত হওয়া কিংবা উন্নয়ন ও অন্যান্য মানবাধিকারের ন্যায্য দাবির ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর প্রতি উপেক্ষার নানা ঘটনা। দেশের মধ্যে সরকার কর্তৃক অবচেতন কিংবা সচেতনে বা বর্জিত জনগোষ্ঠীকে একপ্রকার বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দেয়। দেশের দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রতি ঔদাসীন্য এবং গৃহীত বৈষম্যমূলক নীতির কারণে এথনিক সংকট অনিবার্য হয়ে উঠেছে(ব্রাইস,২০২০)। যেমন ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা অর্জন, ১৯৪৯ সালের চৈনিক বিপ্লবসহ তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য জাতীয় আন্দোলনগুলি বে-উপনিবেশিক প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করেছে বটে, কিন্তু সকল ক্ষেত্রে প্রতিফলিত এবং প্রকাশিত হয়েছে স্ব স্ব রাষ্ট্র বা অঞ্চলের বৃহত্তর নৃ-কুলগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব অর্থাৎ এক প্রকার একাধিপত্য(রাফায়েল,২০০১)। এমনকি, ১৯৭৫ সালের ভিয়েতনামিদের বিজয় Large Scale Natonalism - এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক পর্বের সাক্ষ্য বহন করে। শুধু তাই নয়, বর্তমানকালের ৫৪ টির বেশি দেশ দেশের অভ্যন্তরে (Domestic) এথনিক দ্বন্দ্বে, হিংসায়, চাওয়া-পাওয়ায় জর্জরিত। বিশেষ করে উত্তর-উপনিবেশিক জাতীয়বাদের ধারণায় তৃতীয় বিশ্বের আলোচনার ক্ষেত্রে এথনিক বিষয়টি একটি Common আলোচনার টেবিল হয়ে উঠেছে।
এথনিক গোষ্ঠী এবং জাতীয়তাবাদ:
সামাজিক এবং রাজনৈতিক সচেতনতায় জাতি, উপজাতি ও সম্প্রদায়গত তারতম্যে এমনকি, ভূখন্ডগতভাবে এথনিক গোষ্ঠীর ধারণা তৈরি হয়। এই এথনিক ধারণার মধ্যে রয়েছে জাতিগত, সংস্কৃতিগত, ভাষাগত, সামাজিক প্রভৃতি পৃথকীকরণ। এইভাবে একটি গোষ্ঠী আর একটি গোষ্ঠীর থেকে পৃথক সত্তা অনুভব করে। এমনকি দেখা যায়, বৃহত্তর গোষ্ঠীর দ্বারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর বঞ্চনা। সামাজিক ব্যাপ্তিতে সকলগোষ্ঠীর অভিযোজন ঘটে না। পৃথক পৃথক সত্তা ও জাতীয়তাবোধ নিয়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বাধীন গণতান্ত্রিক সার্বভৌম দেশে অধিকাংশ জনজাতি বহু অসহায় ও নিজভূমে পরবাসী হয়ে নিরন্তর মুক্তির পথ খুঁজে যাচ্ছে(উইলিয়ামস, ২০০১)।
এই এথনিক ধারণা ও তার জাতীয়তাবাদের ভিত্তি বড়ই বিচিত্র, কারণ রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদের যে ধারণা, যেমন আরবীয়, ব্রিটিশ, চাইনিজ, ভারতীয় প্রভৃতি, তা ভূখন্ডগত এলাকার অন্য মান ও মাত্রায় প্রতিফলিত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তথাকথিত ভারতীয় জাতীয়তাবাদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম পৃথক জাতিসত্তার অনুভবে একপ্রকার অবিশ্বাসের চোরাস্রোততো আজও ফল্গু। আবার এর মধ্যেও রয়েছে নাগা, মিজো, আদিবাসী, সাঁওতাল, গোর্খা প্রভৃতি জাতিগোষ্ঠী এবং তাদের উত্তরোত্তর স্ব স্ব ভাবনা। একইভাবে তথাকথিত ব্রিটিশ ন্যাশানালিজম-এর অন্দরে ওয়েলস, আইরিশ, স্কট প্রভৃতি আ্যাংলো স্যাক্সন গোষ্ঠী রয়েছে। এইভাবে পর্যালোচনা করলে পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের জাতীয় ভূখন্ডের মধ্যে উপজাতীয় গোষ্ঠীগত সমস্যার বিদ্যমানতা স্পষ্ট উপলব্ধি করা যায় এবং সকলক্ষেত্রে কোন একটি বিশেষ বৃহত্তর জাতিগোষ্ঠীর পরিচালন ব্যবস্থায় অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীগুলির আশা-আকাঙ্খা অনেক ক্ষেত্রে জলাঞ্জলি দিয়েও বেঁচে থাকতে হচ্ছে। তাই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলি নিজেদে র আশা-আকাঙ্খা, অভাব-অভিযোগ, চাওয়া-পাওয়া, আয়োজন-প্রয়োজন, বঞ্চনা-প্রবঞ্চনা এবং সর্বোপরি, জাতিগত সংস্কৃতি সত্তাকে পাথেয় করে নিজস্ব জাতীয়তাবাদে সামিল হচ্ছে(স্পেন্সার,২০০৬)। উদাহরণ হিসেবে শ্রীলঙ্কার তামিল সমস্যা, বাংলাদেশের চাকমা, ইথিওপিয়া, জাইরে প্রভৃতি এথনিক গ্রুপের কথা বলা যায়। বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে এথনিক কনফ্লিক্টকে কেন্দ্র ক’রে বিভিন্ন সংগঠনও গড়ে উঠেছে যেমন ভারতের GNLF, থাইল্যান্ডের মুসলিমদের NFLPR, ফিলিপিন্সের MNLF, মায়ানমারের KNDO প্রভৃতি সংগঠন প্রভাব বিস্তার করেছে। এই সংগঠনগুলি শুধু ভূখন্ডগত জাতীয়ক্ষেত্রে নয়, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতেও তাদের পরিচিতির জবান প্রতিষ্ঠা করতে সর্বদা তৎপর।
এথনিক পরিচিতি এবং মনো-এথনিক স্টেট:
নৃ-কুলগত এথনিক পরিচিতি তৈরি হয় এই জনগোষ্ঠী বৃহত্তর জৈব পরিবেশে, মৌলিক সাংস্কৃতিক মূল্যবোধে পারস্পরিক যোগাযোগ ও মিথষ্ক্রিয়াতে অন্য জনগোষ্ঠী থেকে যখন নিজেদের পৃথক বলে উপলব্ধি করতে থাকে এবং তার প্রেক্ষিতে এই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে জেগে ওঠে এথনিক পরিচিতি আর তার মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয় একধরণের জাতীয়তা। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে পর্যালোচনা করলে এইধরণের বহু ও বিভিন্ন এথনিক গ্রুপের পরিচয় পাওয়া যাবে, যারা ট্রাইবাল, কাস্ট, ল্যাঙ্গুয়েজ, রিজিয়ন প্রভৃতি গ্রুপের বহুরূপতায় বিরাজমান। এই গোষ্ঠীগত সদস্যদের ভিত্তিতে রয়েছে সংস্কৃতিগত অভিন্নতা, বিশেষ ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা, ভাষাগত একরূপতা, ধর্মীয় ছোঁয়াচ কিংবা ভৌগোলিক পরিবেশ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এথনিক আন্দোলনের মধ্যে কমিউনিটি অব কালচার বিশেষভাবে কাজ করে। ভাষা-ধর্ম-সংস্কৃতির তারতম্যে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে এথনিক সীমারেখা বা Demarcation-এর বেড়াজাল তৈরি হয়(স্পেন্সার,২০০৬)। বিশেষ করে এথনিক পরিচিতির মধ্য দিয়ে একাত্মবোধের যে জাতীয়তা সৃষ্টি হয় এবং তার মধ্যে রাজনীতিকরণ ঘটে। এমনকি, সেই বিমূর্ত ভাবনা The Sole Criterion of Statehood-এর পর্যায়ে পৌঁছায় এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের চূড়ান্ত দাবি জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে কাজ করে। যেমন পশ্চিমী উপনিবেশিক শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রান্তীয় অর্থনীতির চিনা, ভারতীয়, ইজিপ্ট প্রভৃতি জাতিগোষ্ঠীর বৌদ্ধিক সচলতা সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু এই Large Scale Nationalism-এর মধ্যে আভ্যন্তরীণ জাতিগোষ্ঠীর চূড়ান্ত প্রভাব রয়েছে। যেমন বৃহত্তর ভারতীয় জাতীয়তাবাদের মধ্যে গোর্খা, নাগা প্রভৃতি জাতীয়তাবাদের বাড়বাড়ন্ত। আভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে এই ধরণের জাতীয়তাবাদের ফল্গুধারা হয়ে থাকে কোন বিশেষ ব্যক্তিত্বের দ্বারা। তাঁরা হয় কোন প্রাক্তন সৈনিক কিংবা কবি অথবা কোন ধর্মগুরু উদাহরণ হিসেবে গোর্খা ন্যাশনালিজমের সুভাষ ঘিসিং, নাগাদের ফিজো, তিব্বতি দলাই লামার কথা উল্লেখ করা যায়।
ফলত, উপনিবেশোত্তর বা বিপ্লব পরবর্তী সমাজে রাষ্ট্রগঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও জাতিগঠন প্রক্রিয়ার মধ্যে সমান্তরাল প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রকেও প্রভাবিত করতে সমর্থ। একথা সত্য যে, রাষ্ট্রীয় ভূখন্ডের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রগঠন ও শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তো রয়েছে। যেমন একটি বৈধ রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা এবং Top Level Decision Making Process কোনো বিশেষ এথনিক Elite Group-এর দ্বারা সম্পন্ন হচ্ছে (ল্যান্ডিস,২০১২)। উদাহরণ হিসেবে সমালোচকরা চীনের হ্যান, ভারতের উচ্চবর্ণের হিন্দু, রাশিয়ার শ্বেত লেনিনবাদী প্রভৃতি Dominant Group-এর প্রশ্নকে সামনে এনেছেন।
একথা অনস্বীকার্য যে, সমসাময়িক বহু জাতীয়তার রাষ্ট্রে Upper Class/Caste Dominant Ethnic Group-এ পৌছাতে পারেন-
i.যাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে উচ্চতর ক্ষমতায় Top Bureaucratic এবং মন্ত্রীত্বের পদমর্যাদা রয়েছে।
ii.যে গোষ্ঠীর মধ্যে থেকে সেনাবাহিনীর উচ্চতর পদগুলি রয়েছে।
iii. পুলিশের উচ্চপদ রয়েছে এবং অবশ্যইভাবে অধিকাংশ Entire Staffing of Intelligence offices বর্তমান।
বহু জাতিগোষ্ঠী ভিত্তিক সমাজের মধ্যে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর থেকে যারা এলিট, তারাও কিছু উপরিউক্ত উচ্চপদ অর্জনে সমর্থ হয়ে থাকে বটে। কিন্তু বৃহত্তর গোষ্ঠীর অর্থোডক্স প্রবণতায় তাদের সঠিক কার্যকারিতা সেভাবে প্রকাশ পায় না। এইভাবে গণতান্ত্রিক সমাজে More Complex Situation তৈরি হয়। আধিপত্যকারী Ethnic Group-এর দ্বারা এবং তাদের নির্বাচনী গণতন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা পরিচালিত হয়। এইভাবে মনোপলি স্টেটের কার্যকলাপ Majority Ethnic Group-এর বৈধতার খেলায় পলি-এথনিক সোস্যাল সিস্টেমের মধ্যে রাজনৈতিক Domination তৈরি করে।
এথনিক জাতীয়তাবাদের চরিত্র:
বহুজাতিগোষ্ঠী ভিত্তিক সমাজব্যবস্থায় আধিপত্যকারী গোষ্ঠীর দ্বারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিচালনার একচেটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে বহুজাতিগোষ্ঠী ভিত্তিক রাষ্ট্রে নেতিবাচক এথনিক ন্যাশানালিজমের জন্ম দেয়। অধিকাংশ জাতিরাষ্ট্রের প্রকৃতি হল পলি-এথনিক। ফলত স্বাভাবিকভাবে আমরা অনুধাবন করতে পারি, জাতীয়তাবাদের ভবিষ্যৎ প্রবণতা এথনিক ন্যাশনালিজমের দিকে এগোতে থাকবে। যেকোন এথনিক দ্বন্দ্বে নিদান বিশ্লেষণ করলে বিশেষ কতকগুলি ঘটনা উঠে আসে। যেমন-
১.মনো-এথনিক স্টেট এবং পলি-এথনিক সোশ্যাল সিস্টেমের মধ্যে Basic Contradiction;
২.Particular Ethnic Identity -কে অস্বীকার করা;
৩.প্রান্তীয় এথনিক সোসাইটির মধ্যে Indigenous Authority Structure-কে স্থানচ্যুত করার প্রবণতায় উত্তর-উপনিবেশিক জাতি রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়া চলে।
এমন কি, নেশন বিল্ডিং, ন্যাশনাল রি-কনস্ট্রাকশন, ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট আক্টিভিটিজ প্রভৃতি ধারণার বাতাবরণে রাজনৈতিক কেন্দ্রীকরণ এবং জাতীয় একরূপতার ধারণায় মাইনরিটি এথনিক গ্রুপ-এর উপর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ জারি হয় (কেলাস, ১৯৯১)। উদাহরণ হিসেবে ১৯৪৭ এর পরে হিন্দু পাওয়ার এলিটের ইন্টিগ্রেশনের প্রচেষ্টা নাগা, মিজোদের ক্ষেত্রে, বার্মাতে মিলিটারি এলিটের ‘Sawbwa’দের উপর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ। তিব্বতীদের উপর হ্যান আর্মির নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি।
অভিমুখ
রাষ্ট্রের মনো-এথনিক চরিত্র এবং এর জাতি গঠন প্রক্রিয়া এথনিক ন্যাশনালিজমকে যে প্ররোচিত করে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই(ল্যান্ডিস,২০১২), তা ভারত-চিন-ইরান সকল রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়। অবশ্য ভারতবর্ষ কম্পোসাইট কালচার, ইউনিটি অব ডাইভার্সিটি সম্পর্কে প্রগতিশীল সংস্কৃতিকরণের বার্তা সমাজজীবনে রাখতে চায়। আবার ভাষাগত ক্ষেত্রে হিন্দিকে জাতীয় ভাষারূপে প্রজেক্ট করে অধিকাংশ জাতিগোষ্ঠীর পলিটিক্যাল প্লাটফর্মকে একটি দিকে এনে বৃহত্তর ন্যাশনাল ইন্টিগ্রেশন-এর ব্যবস্থা করতে চেয়েছে। কিন্তু তা অঞ্চলগত ক্ষেত্রে অন্যান্য এথনিক ন্যাশনালিজমের উদ্ভবের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এথনিক ন্যাশনালিজম-এর উপর লারজ স্কেল ন্যাশনালিজমের প্রভাব কখনও অবমূল্যায়িত হতে পারেনা ব’লে অনেক সমাজতাত্বিক, নৃ-তাত্ত্বিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রমুখ মনে করেন। যে কোনো রাজনীতিতে এথনিক গ্রুপ তাদের সংস্কৃতিকে সংরক্ষিত এবং চালিত করতে পারে। তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থকে রক্ষা এবং এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, যদি তাদের নিজস্ব স্বাধীন রাষ্ট্র থাকে অর্থাৎ যেখানে তাদের ডমিন্যান্ট এথনিক গ্রুপ-এর হেগিমনি কাজ করতে পারে, বলা বাহুল্য।
তথ্যসূত্র
1.উইলিয়ামস, আর এম (২০০১), “এথনিক কনফ্লিক্ট”, ইন “ইন্টারন্যাশনাল এনসাইক্লোপিডিয়া অব দি সোস্যাল ও বিহাভিয়ারাল সায়েন্স”, ইউ এস এঃ সায়েন্স ডিরেক্ট, পৃষ্ঠা- ৪৮০৬-১০
2.কেলাস, জেমস জি (১৯৯১), “দি পলিটিক্স অব ন্যাশনালিজম অ্যান্ড এথনিসিটি”, ইউ এস এঃ ম্যাকমিলান, পৃষ্ঠা- ৫১-১৪৬
3.স্পেন্সার, স্টিফেন (২০০৬), “রেস অ্যান্ড এথনিসিটিঃ কালচার, আইডেনটিটি, রেপ্রেজেন্টেশন”, লন্ডনঃ রুটলেদ
4.ব্রাইস, এমা (২০২০), “ডিফারেন্স বিটুইন রেস অ্যান্ড এথনিসিটি”, লাইভ সায়েন্স, নিউ ইয়র্ক
5.রাফায়েল, ই বেন (২০০১), “এথনিসিটি, সোসিওলজি অব”, ইন “ইন্টারন্যাশনাল এনসাইক্লোপিডিয়া অব দি সোস্যাল ও বিহাভিয়ারাল সায়েন্স”, ইউ এস এঃ সায়েন্স ডিরেক্ট, পৃষ্ঠা- ৪৮৩৮-৪২
6.ল্যান্ডিস, ডন & রোসিতা, ডি অ্যালবার্ট (২০১২), “হ্যান্ডবুক অব ইন্টারন্যাশনাল কনফ্লিক্টঃ ইন্টারন্যাশনাল পারস্পেকটিভস”, বোস্টনঃ স্পিনজার
জয়প্রকাশ মণ্ডল । পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
(লেখকঃ বিভাগীয় প্রধান, সহকারী অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, বঙ্গবাসী ইভনিং কলেজ, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
-
নিবন্ধ // মতামত
-
18-07-2020
-
-