সাতকর্ণী ঘোষ-এর কবিতা
ঘষা কাচ
একটা ঝড় এসেছে তাকে বিশ্বত্রাস বলি
আমাদেরও নিস্তার নেই জানি
তবু সাবধানে যতটা সতর্ক হলে
তুমি আমি বেঁচে যেতে পারি
তবু কারচুপি লুকোচুরি শাসনে শাসকে
কোন্ অন্ধকার তুমি ঢাকতে চাইছ
কোন্ দিকে ঝড়ের প্রবাহ চাইছ ঘোরাতে
আয়নায় পরিপাটি নিজেকে দেখে
ভেবেছ সব্বাই সেজেগুজে আছে
আনন্দ গ্রাস রোজ তোলে থালা থেকে
অথচ চুলো ধরাতে চেয়ে
দীর্ণ মানুষটি জ্বালানি খুঁজছে
বিবর্ণ সময়
একটা অপরাধ অনেকটা সময় থামিয়ে দিলে
কতটা ক্ষমতা অর্জিত হলে দেশ বড়ো হবে
আয়তনে নয় অর্থে নয় মানুষ মারতে
শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হলে এমন হয়
এই যেমন প্রথম বিশ্ব দ্বিতীয় বিশ্ব
তৃতীয় বিশ্ব সর্বত্র ঘরে থাকার অভ্যেস
যারা কোনোদিন ঘরমুখো ছিল না
তারা আজ শুধু মুখ বাড়ায়
একটু আলোর জন্য প্রতিদিন
একটা অভ্যেস এমনই বদ্ধতা ডাকছে
সব সকাল রং নিলেও তখনও
সমস্ত অন্ধকার ঘিরে ঘিরে অস্থির উঠবে
বন্দি করতে চাইবে আবারও
সমাজ ও মানুষ পরস্পরে মুক্তি চাইবে
অসুখ
মহামারী বলে যা তুমি ভয় পেয়েছ
সে তোমাকে একটুও নিচ্ছেনা
সে তোমাকে কাছেও ডাকছে না
যত আদর সে তো শুধু তোমার সমাজের
রাস্তা চৌরাস্তা সব দাঁড়িয়ে গেছে
ধোঁয়া নেই দূষণ কমেছে বেশ
প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে গাছ
শুদ্ধ বাতাস যা কখনই ভয়ের নয়
কারণ করোনা বাতাসে মৃত
তুমি স্বচ্ছন্দে তাকে প্রেম করো
দূরে থাকো সব প্রতিবেশি
সামাজিক দূরত্ব তোমাকে বাঁচাবে
মানসিক দূরত্ব নয় ও উজ্জল হোক
আমাদের বন্দি জীবনে আলো উঠুক
দূরের ডাক
কিছুটা দ্বিধাহীন হয়েই এসেছি
এক পৃথিবীর একটুখানি ঘরে
এখানে তেমন কিচ্ছুটি নেই
যা থাকার কথা তাও নেই
শুধু একথালা অন্ধকার ভাত
গোগ্রাসে মেখে দিব্যি খাই
ওই দূরে পরিত্যক্ত গ্রাম গাছালি
মেঠো বাড়ি প্রকাণ্ড সব প্রাসাদ
পাখি উড়ে বসে চালে এবং ছাদে
ইঁদুরের বংশেরা দাপিয়ে চলেছে এখন
আরশোলা টিকটিকি মাকড়সারাও
এ-যেন নবজন্মের বারতা ডেকে আনে
দূরে এইসব হয় উল্টোদিকে ওইসব ঘটে
সাতকর্ণী ঘোষ,
হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
-
ছড়া ও কবিতা
-
01-08-2020
-
-