অটোয়া, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪
নাজিম হিকমতের কবিতা - হরিশঙ্কর কুন্ডু

কাল রাতে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ এল বন্দরে
তাতে বারুদ টাঁসা অক্ষরে লেখা বই 
স্তরে স্তরে সাজানো ছিল রসদ
একদল ভায়োলিন বাদক সুরের মূর্ছনায় 
অভিবাদন জানাচ্ছিল সেই সেনা প্রতিনিধিকে
ঠিক তখনই পুষ্পবৃষ্টি ঝরছিল স্বপ্নের রাজ্যে

ঘুম ভেঙে দেখি মানুষের অভাব চিরকালের
আমাদের ক্ষুদা মিটলেও অভাব মেটে না কোনদিন 
খোঁজ পড়ে একটুকরো জমির
তারপরই বাড়ে ভূমি দখলের লড়াই
অঞ্চল থেকে গ্রাস করে ফেলি সারা পৃথিবীটা

বলভিয়ায় কিম্বা হুয়ান প্রদেশ 
জলপাইয়ের গাঢ় সবুজ জঙ্গল 
তার মধ্যে আলপনা আঁকছিল 
হলুদ বৌ কথা কও পাখি
মাঝে মাঝে উড়ে এসে বসত বসন্ত বৌরি 
কত রঙ বেরঙের পাখপাখালির শোভা
তবুও আমরা বন্যতা নিয়ে প্রকৃতি নিধন করি
একদিন শূন্যে পড়ে থাকে সব

আট দশক আগের থাবা বসিয়ে
করুন বিধ্বস্ত নাগাসাকি ও হিরোসিমাকে 
চিনিয়েছো তুমি
আর সারা বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদের জাল বুনেছে ঘাতক
আজ আবার লড়াই বেধেছে দেখো 
পাশার ঘুঁটি উল্টে যায়
কে করবে আগামীর প্রভুত্ব 

শুরু হয়েছে অশরীরি এক যুদ্ধ 
ভাইরাসের আক্রমণ ছড়িয়েছে সারা দুনিয়ায়
এশিয়া থেকে ইউরোপ 
ওশেনিয়া থেকে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা 
আফ্রিকা থেকে এন্টার্কটিকা 
বিটোফোনে বেজে উঠছে সর্বদা অসহায় আত্মসমর্পণ 
আমরা শুধু নিরহপায় দেখছি
ক্ষমতার সিংহাসন নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে

বন্দরে ভিরেছে যে বিশাল জাহাজ 
তার থেকে আমায় একটা বই দেবে ক্যাপ্টেন
আমি খুঁজছি ইস্তান্বুলে বেড়ে ওঠা এক কিশোরকে
আনাতোলিয়ার গোপন ডেরায় আবিস্কার করবো
সীমানা পেড়নো বাতুম কিম্বা মস্কোর পরবাসে
মুক্তিকামী মানুষের স্বাধীনতা 

হ্যা আজ একবার সবাই মিলে সারিবদ্ধ হই
বিপন্নতায় খুঁজে নেই আলোর পথ
বড় প্রয়োজন আজ তোমরা এসো 
নাজিম হিকমতের কবিতা পড়ি

হরিশঙ্কর কুন্ডু
কামরাবাদ, সোনারপুর
কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ