অটোয়া, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪
পেটুক পাচু - তরুণ শিকদার

ছোটবেলা থেকেই পেটুক হিসেবে বেশ নামডাক পাচু মণ্ডলের। গ্রামের বর্ধিষ্ণু মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। বাবার জমি জিরাত বেশ ছিল। এক কথায় থাকা খাওয়ার কোন অভাব কোনদিন হয়নি। আট ভাই বোনের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই পাচু একটু দুরন্ত প্রকৃতির। বানিয়ে গল্প বলার ওস্তাদ। এই বিশেষ কৌশলে সে সবার মন জয় করে নিতো। বিশেষ করে খাওয়া দাওয়ার প্রতি তার ঝোঁক সবসময় একটু বেশী। পাড়ার কোন বাড়িতে মুড়ি ভাজা শুরু হলে পাচু সকাল থেকেই সেখানে হাজির। ধামা ভর্তি চাল মাথায় করে চুলার পাশে এনে দেওয়া। নদীর পাড় থেকে গরম বালি এনে দেওয়া। লবণ জল দেওয়ার জন্য পুকুর ঘাট থেকে বালতি ভরে জল এনে দিতে পাচুর একটুও আলস্য ছিল না। গ্রামের কাকী জ্যেঠিরা এজন্য পাচুকে একটু বেশী খাতির করতো। আর এজন্য মুড়ি ভাজা শেষ হলে লুঙ্গির কোচ ভরে অন্তত সের দুই মুড়ি আর শীতের খেজুরের গুড়ের পুরা একখানা পাটালি সকলেই আনন্দচিত্তে পাচুকে দিতে কেউ কার্পণ্য করতেন না। পাচু পুরো মুড়ি আর পাটালি পুকুরপাড়ে বসে ঘন্টাখানেক ধরে চিবিয়ে আজল ভরে পুকুর থেকে দুই আঁজল জল খেয়ে অত্যন্ত পরিতৃপ্তির একটা ঢেকুর তুলে আস্তে আস্তে বাড়ির দিকে পা বাড়াতো।

এজন্য মায়ের বকুনিও কম শুনতে হয়নি পাচুর। ছোট থাকতে মা অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। আমাদের তো কম নেই বাছা তোর যত ইচ্ছা খেতে পারিস। ঘরে টিন, কোলা ভরা মুড়ি রয়েছে যত পারিস খা কেউ তো মানা করেনি বাবা। কিন্তু অন্যের বাড়ি থেকে এভাবে খেলে মানুষ লোভী ও লালচি বলে। কে শোনে কার কথা। যতই বাড়িতে খাবার থাক না কেন অন্যদের বাড়ি থেকে খাওয়ার মজাই আলাদা। গ্রামের সবাই পাচুকে খুব ভালোবাসে। সকলেই আদর করে তাকে খেতে দেয়। আর সুযোগ বুঝে হাতহারানি কাজগুলো করিয়ে নেয়। যদিও কাজ করতে পাচুর কোনদিন খারাপ লাগেনা।

আস্তে আস্তে কৈশোর থেকে যুবক পাচু। চারদিকে তার বেশ নামডাক। ভাল খানেওয়ালা হিসেবে। বিয়ে, অন্নপ্রাশন, শ্রাদ্ধ বা যে কোন উৎসবে আশপাশের গ্রাম থেকে পাচুকে বিশেষভাবে নিমন্ত্রণ করা হয়। সকলে তার খাওয়া পছন্দ করে। পাচুর সমবয়সী কেউ খাওয়া নিয়ে তার সাথে বাজি ধরতে সাহস করেনা। এ সব অনুষ্ঠানে গোলমালও কম পাঁকায়নি পাচু। তারা চার পাঁচ জনে ফন্দি করতো বাড়িওয়ালাকে জব্দ করার। প্রায়ই খাওয়া শেষ হওয়ার দিকে কোন একটা ছুতো নাতা নিয়ে বচসা তৈরী করতো। তখন বাড়িওয়ালা করজোড়ে মিনতি করে আবার খেতে বসাতো এবং প্রথম থেকে আবার সব কিছূ পরিবেশন করা হতো। তার মানে ছেঁছড়া থেকে শুরু করে আবার মাছ, মাংস, মুড়িঘণ্ট, দই মিষ্টি সব নতুন করে খেয়ে পাচু একটা তৃপ্তির ঢেকুর তুলে খাবার খুব প্রশংসা করতে করতে বন্ধুদের নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হতো।

পাচুর শরীরের গড়ন বেশ ভালো। হৃষ্টপুষ্ট বেশ তেজী যুবক। ছোটবেলায় একবার ম্যালেরিয়া হওয়ায় দেহের তুলনায় পেটটা একটু লম্বা হয়ে সামনের দিকে ঝুলে পড়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য ভালো হওয়ায় খুব একটা বোঝা যায় না। তবে কোন বিশেষ নিমন্ত্রণ খাওয়ার পর পেটটি চারদিকে প্রশস্ত হয়ে দেহ থেকে বেশ কিছুটা সামনের দিকে ঝুলে পড়ে। যা একটু বিসদৃশ দেখা যায়।

পাচুর চুল কাটার একটা বিশেষ স্টাইল ছিল। যা ওই অঞ্চলে পাচুছাট নামে পরিচিতি পেয়েছিল। সাধারণত একটা প্রমাণ সাইজের বাটি মাথার উপর রেখে নাপিত সোজা চুলগুলো কেটে দিতেন। একদিন সকাল বেলা বাজার থেকে চুল কেটে কেবল বেরিয়েছে। সকাল থেকে কিছুই খায়নি। মা বললেন পাচু চুলটা অনেক বড় হয়েছে যা দোকান থেকে কেটে নদীতে একটা ডুব দিয়ে আয়। আমি ততক্ষণে শিং মাছ আর কাচাকলা দিয়ে গরম গরম ভাত রান্না করে রাখি এস খাবি খন। চুল কাটা শেষ হলে গরম ভাত আর শিং মাছের কথা মনে পড়তেই হন হন করে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছে। পথের পাশেই বদন ময়রায় মিষ্টির দোকান থেকে জোরে হাঁক এলো এই পাচু একবার এদিকে আয় তো? পাচু অনিচ্ছা সত্ত্বেও বদন ময়রার দোকানের দিকে এগিয়ে গেল।
- কি হয়েছে বদন কাকা ডাকছো কেন?
- তোকে বাবু ডাকছেন। বস কথা বল।

পাচু দেখলো তাদের গ্রামের রাম নারায়ন চাটুজ্যৈ মশায় কৌতহলী দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। রামনারায়ণ বাবু খুব রাশভারী লোক। জাত ব্রাহ্মণ অত্যন্ত সুশ্রী ও মার্জিত স্বভাবের মানুষ। কলকাতায় ব্যবসা করেন। কালে ভদ্রে গ্রামে বেড়াতে আসেন। তিনিও খুব মিশুক প্রকৃতির মানুষ।
- পাচু নমস্কার জানিয়ে বলল কাকাবাবু কেমন আছেন? কখন আসছেন গ্রামে।
- প্রত্যুত্তরে তিনিও সম্ভাষণ জানিয়ে পাচুকে বসতে বললেন। তিনি পাচুকে উপহাস করার জন্য তার হেয়ার স্টাইলের খুব প্রশংসা শুরু করলেন।

পাচু বুদ্ধিমান ছেলে প্রশংসার আড়ালে উপহাসটুকু বুঝতে সমর্থ হলো। মনে মনে এই কলকাতার কিপটে বুড়োকে জব্দ করার মতলব আটতে থাকলো। এর মধ্যে বদন ময়রা লোহার কড়াইয়ে এক চড়া গরম বড় রসগোল্লা এনে পাচুর পাশের টেবিলে রেখে গেল। গরম রসগোল্লা দেখেতো পাচুর চোখ ছানাবড়া। লোভে জিহ্বা লকলক করে উঠল।
- রামনারায়ণ বাবু অবস্থা আন্দাজ করতে পারলেন। তিনি বললেন, কি হে পাচু খাবে নাকি রসগোল্লা? বলেই বদনকে হুঙ্কার দিয়ে বললেন বদন পাচুকে এক হালি রসগোল্লা দাওতো। আর আমাকেও একটা দিও। দেখি তোমরা কেমন মিষ্টি বানাও।
বলতে বলতে চারটি রসগোল্লা সমৃদ্ধ একটি সুদৃশ প্লেট পাচুর সামনে এস হাজির। পাচু ইতস্তত করতে লাগলো। রাম নারায়ণ বাবু বললেন, কি হে বাপু খাও? তোমাকে টাকা দিতে হবে না আজ আমিই খাওয়াব। কলকাতায় আমার কত বড় ব্যবসা জানো।
- পাচু বললো, না বলছিলাম কি কাকাবাবু সকাল বেলা মানে চারটি রসগোল্লা খেয়ে মুখ এটো করবো তাই ভাবছিলাম। আর আমিতো প্লেটে খাই না। সাধারণত পুরো কড়াই ধরে খেতে অভ্যস্ত কি না?
- রাম নারয়ণ বাবু আশ্চর্য হয়ে বললেন, তাই না কি পারবে তুমি পুরো কড়াই ধরে সাবাড় করতে?
- পাচু বললো, সে আপনি যদি আজ্ঞা করেন।
- তা বেশ বেশ খাওনা যে কটা পারো। এই বদন দে দে পাচুকে আরো রসগোল্লা দে।

পাচু আস্তে আস্তে এগিয়ে কড়াই এর দিকে যেয়ে টপাটপ রসগোল্লা তুলে মুখে পুরতে লাগলো। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো কড়াইয়ের ১২৫টি রসগোল্লা খেয়ে শেষ করে কড়াই তুলে পুরো রসটুকু চুমুক দিয়ে পেটে চালান করে দিল। তারপর একটা ঢেকুর তুলে পেটে হাত বুলিয়ে রাম নারায়ণের চাটুজ্যের দিকে তাকিয়ে বললো তাহলে আসি কাকাবাবু। মা আবার বাড়িতে শিংমাছ আর কাচাকলা দিয়ে গরম ভাত রেঁধে বসে আছেন। বলে পাচু নিজের পথে পা বাড়ালো। মনে মনে ভাবলো থাক কলকাতার বুড়োকে আচ্ছা মত জব্দ করেছে।

রাম নারায়ণ অপলক দৃষ্টিতে তার চলার দিকে চেয়ে রইলেন। বদন অনেক সময় ধরে ডাকাডাকি করেও রাম নারায়ণ বাবুর সম্বিত ফেরাতে পারলো না। শেষে গায়ে হাত দিয়ে ধাক্কা দিতেই ধড়মড়িয়ে সোজা হয়ে বসলেন।
- বদন বললো বাবু আমার টাকা। রাম নারায়ণ বাবু হ্যাঁরে কত হয়েছে তোর বদন?
- বদন এক চড়ায় আমরা ৫ কেজি বানাই প্রতি কেজি সোয়া পাঁচ আনা করে হলেও আপনি ছয় টাকা দিলেই হবে। রাম নারায়ণ বাবু আর বাক বিলম্বিত না করে নগদ ৬ টাকা আক্কেল সেলামী দিয়ে বের হয়ে এলেন।

পাচুর খুব একটা অসুখ বিসুখ হতো না। ছোট বেলায় একবার সেই ম্যালেরিয়া রোগ ছাড়া আর কোনদিন অসুখ করেছে বলে মনে পড়ে না। সেবার হঠাৎ করে চারদিকে খুব টায়ফয়েড রোগ দেখা দিল। পাচুর একদিন প্রচুর জ্বর। গ্রামের বাজারের একমাত্র ডাক্তার বাবু নাড়ি টিপে সব লক্ষণ দেখে বললেন মনে হচ্ছে টাইফয়েড। তবে ভয়ের কিছু নেই এই ঔষধ লিখে দিচ্ছি। ঠিক মতো খেলে জ্বর কমে যাবে। একটা বড় বোতলে লাল এ্যালকালাইন মিকচার করে কাগজে কেটে দাগ দাগ দিয়ে পরিমান নির্ধারণ করে দিলেন। প্রতিদিন তিন বার। এভাবে ৭ দিন চলল। জ্বর কমে না। জ্বর গায়ে কোনক্রমে স্নান করা যাবে না। দানা জাতীয় কোন খাদ্য খাওয়া যাবে না। শটি, সাগু, বার্লি আর দিনে একবার একগ্লাস দুধ। এই পথ্য খেয়ে আর জ্বরের প্রকোপে পাচু একেবারে কাহিল হয়ে পড়লো। আস্তে আস্তে কঙ্কালসার দেহ হয়ে গেল। বুকের পাজরের হাড়গুলো যেন গোনা যায়। তখন ধারণা ছিল রোগীকে বেশী খেতে দিলে রোগের জীবানুরা আরো শক্তিশালী হবে। তাই রোগী ও জীবানু দুটোকেই না খাইয়ে টাইট দেওয়া হত। তখন টাইফয়েডের জন্য এক ধরণের ক্যাপসুল অবিস্কার হয়েছে। প্রতিদিন দুটো করে ক্যাপসুল আর প্রায় ১০ লিটার এ্যালকালাইন মিকচার খেয়ে টানা ৩৭ দিন পর পাচুর জ্বর পড়লো। প্রথম দিন স্নান করে মায়ের হাতে রান্না করা নরম জাও ভাতের সাথে শিংমাছের ঝোল দিয়ে দুটো ভাত খেতে পেরে পাচু যেন জীবনে প্রাণ ফিরে পেলো। আস্তে আস্তে একটু সুস্থ্য হয়ে ডাক্তার সাহেবের কাছে দেখাতে গেলো পাচু। বুদ্ধি করে এবার বাড়ির কাউকে সাথে না নিয়ে একাই গেলো ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার সব কিছু দেখে বললেন বড় বাঁচা বেঁচে গেছো বাবা এখন থেকে খুব সাবধানে চলতে হবে। এক মাসের মধ্যে কোনরকম গুরুপাক কিছু খাওয়া চলবে না। কোনক্রমে বেশী বেশী খাওয়া চলবে না। আমি যা লিখে দিচ্ছি এর বেশী কিছু খাবে না কেমন। পাচু ঘাড় নেড়ে সম্মতি দিল। ডাক্তার বাবু লিখলেন:
     সকালে- এক ছটাক চিড়ে জলে ভিজিয়ে রেখে লেবু দিয়ে চটকিয়ে জলটা খাবে।
     দুপুরে- ১০০ গ্রাম চালের ভাত, সামান্য পেপে ভর্তা, আর কাচাকলা দিয়ে ২ পিচ শিং মাছের ঝোল, ঝাল মশলা কম খাবে।
     রাতে- বার্লি বা সাগু দুধের সাথে মিলিয়ে এক গ্লাস। ১৫ দিন পর আবার আসবে শরীর ঠিক হলে খাবার বাড়িয়ে দেবো।

পাচু ডাক্তার সাহেবের ফিস চার আনা দিয়ে বাসার দিকে পা বাড়ালো। পথে আসতে আসতে চিন্তা করলো এই একমাস ধরে জ্বর আর না খাওয়াতে সে মৃত প্রায় হয়ে গেছে। আবার যদি না খেয়ে থাকতে হয় তাহলে আর তার জীবন ধারণ করা দায় হয়ে যাবে। যে ভাবেই হোক মাকে এই প্রেসক্রিপশন দেখানো যাবে না। বাসায় এসে সে মিথ্যা বলবে যাতে অধিক খাওয়ার ব্যবস্থা করা যায়। বাড়িতে আসতেই মা আগ্রহভরে এগিয়ে এলেন ডাক্তার বাবু কি বললেন জানতে। পাচু মাকে অভয় দিয়ে বললো, মা ডাক্তার বাবু বলেছেন আর কোন ভয় নেই। এখন বেশী বেশী করে খেতে হবে। তিনি খাবার একটা তালিকা করে দিয়েছেন। বলে পকেট থেকে অন্য একটা কাগজ বের করে গড় গড় করে পড়ে শুনালো।
- সকালের নাস্তা এক পোয়া চিড়ে আধা কেজি দই আর এক পোয়া কাচাগোল্লা দিয়ে ভালো করে মেখে খেতে হবে।
- দুপুরের খাবারে অন্তত চারটি কই মাছ, ও এক পোয়া পরিমান শিং বা মাগুর মাছ সহ শাকসব্জি ইচ্ছামত খেতে হবে।
- রাতে একইভাবে কই, মাগুর বা যে কোন তাজা মাছ সহ ভাত এবং ঘরে পাতা আধা কেজি দুধের টক দই ও চারটি রসগোল্লা।

মা আহ্লাদে আটখানা এতদিন পর তার পাচু প্রাণ ভরে দুটো খেতে পারবে। সোৎসাহে সব খাবারের জোগাড় করতে লাগলেন। প্রতিদিন নিজে বসে থেকে পাচুকে পেট ভরে খাওয়ান। দেখতে দেখতে পাচুর গায়ের কালসিটে ভাব কেটে গেলো। কয়েক দিনের মধ্যে তার শরীর নাদুস নুদুস ভাব ফিরে এলো। পনের দিনের মধ্যে পাচু পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে উঠলো। মা বললেন চল আর একবার ডাক্তার দেখিয়ে আসি। কিন্তু পাচু যেতে রাজি নয়। তার কথা আমিতো ভালো হয়ে গেছি খালি খালি আবার চার আনা ভিজিট দিয়ে ডাক্তার দেখাবো কেন। তার আসল ভয় ডাক্তার যদি তার খাদ্য তালিকা জেনে ফেলে তাহলে আবার খাবার কমিয়ে দিতে পারে। কিন্তু মায়ের পীড়াপীড়িতে একদিন ডাক্তারের কাছে যেতে বাধ্য হয়। ডাক্তার সাহেব সব কিছু দেখে খুবই খুশী। এত তাড়াতাড়ি রোগী সুস্বাস্থ্য ফিরে পারে তিনি আশা করেননি। তিনি বললেন তাহলে খাবার একটু বাড়িয়ে দেওয়া যায়। তিনি জানতে চাইলেন বাবা পাচু এখন তুমি কি কি খাও বলো আমি পথ্যটা একটু বাড়িয়ে এ্যাডজাস্ট করে দিই।

পাচু এবার মিথ্যা না বলে গড়গড় করে যা যা খেয়েছে তা বলে চললো। ডাক্তার কলম তুলে বসেছিল। সব শুনতে শুনতে এক সময় হাত থেকে কলম পড়ে গেল। সব শুনে এক সময় চেয়ারে গা এলিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল। কম্পাউন্ডার তাড়াতাড়ি ধরাধরি করে তাকে খাটে শুইয়ে দিল।

এই সুযোগে পাচু বের হয়ে বাড়ির দিকে চললো। বাড়িতে এসে মাকে বললো ডাক্তার সাহেব খুব খুশী হয়েছেন মা। আগের পথ্যের সাথে সপ্তাহে তিনদিন কবুতর আর কচি এক সের পাঠার মাংস যোগ করতে বলছেন।

তরুণ শিকদার। ঢাকা
(ছোটবেলায় বাবার কাছে শোনা একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে লিখিত)