অটোয়া, সোমবার ৭ জুলাই, ২০২৫
বিকাশ চন্দ'র দু’টি কবিতা

সূর্য ভাসে চোখের তারায়
ড়ো হাওয়ার দাপট ছিল নষ্ট পাখির বাসা
মাটিতে শুয়ে গেছে সারা গ্রাম ধ্বস্ত সাজানো বাগান 
কেউ বোঝেনি ভবিতব্য লিখে গেছে  ঝড়ের সংকেত, 
দুর্বোধ্য জড় অসুখ ছড়িয়েছে ত্রস্ত পৃথিবীর গর্ভগৃহে
ডানে বামে চতুর্দিকে বিষণ্ণ কাল রঙ বিহীন মৃত্যু ইশারা
দিশেহারা সময়ে স্তব্ধ উপাসনা রক্ত বর্ণা গোধূলি বেলা। 

তবুও ইচ্ছে ছিল আকাশময় শান্তি দূত পায়রা ওড়াই
যতদূর চোখ যায় নাকাল আকাশ ভাঙচুর রামধনু, 
কেবল গাছে কচি পাতা সংকেত বোঝে পাখিদের গান---
সংকট সময়ে দোল খায় কাশফুল ঝরে কুয়াশায় শিউলি, 
সময়ের শরীরে ও ভয়ের চিহ্ন কঙ্কালেও বেহিসেবি দেশ--
ধান গাছে সবুজের ঢেউ দেখে আসন্নপ্রসবা গৃহস্থ বউ। 

সকল তরঙ্গে এখন বিশ্বময় সংকেত পরিবর্তনের
অরণ্য ছাড়িয়ে অন্য কোথাও বাসা বাঁধে হরিণ হরিণী
কাল রাত্রি বহুবার দেখেছে ভূবনে বদলেছে মানুষ চরিত্র, 
কেউ কেউ শৌখিন এখনও জ্বালাতেই পারে রোশনাই। 
অগণিত মানুষ সামাল দিতে ব্যাস্ত ভাঙা বাস্তু ভিটেবাড়ি
শরৎ আকাশ জানে ভাসাবে পেঁজা তুলোয় মেঘের পানসি
শ্যাম বর্ণ সকালের ডাকে সূর্য আজও ভাসে চোখের তারায়। 

বেঁচে আছি হৃদয়ে কুসুমে
তুন দিনের শব্দাবলী এলে থমকে থাকে পুরনো স্বাক্ষর
অবশিষ্ট স্মৃতি যা ছিল অন্ধকারে বিলীন
তবুও জীবন মণ্ডলে নিভু নিভু কেরোসিন বাতি, 
মাটির হাঁড়িতে ফোটে ভাত জীবনের গন্ধ ভেসে আসে
বাসি জীবনের পান্তা ভাতে বাঁচার উৎস শিরা উপশিরা
সমস্ত ঋতু কালে আটকে বসুন্ধরা দৃষ্টি ধূসরতা। 

তিন পুরুষের মাটির ভিটে ঝাঁঝরা করেছে মেঠো ইঁদুর, 
এখন মাঠে প্রাণের দুলাল দোলে সোনা ধান ফসল---
ধারে কাছে সদ্য সজনে ফুলের গন্ধে নামে কুয়াশা সকাল, 
কল কল আনন্দ শিউলি তলা চেনা সব পাখিদের গান কথা---
কী যে পোড়া রোগ শোক বাক্য বিনিময় অতি মারি হিসেব
শ্রীখোল খঞ্জনী ছুঁয়ে যায় কারো চলে যাওয়ার অসম সকাল। 

মাথার উপর সূর্য শ্মশান পুকুরে নেমে স্নান সারে প্রতিদিন---
সমস্ত সহজ গতি থমকে আছে জীবনের ঘেরা টোপে
অখণ্ড সময়ের গতি পথে নদিও বিবসনা অরূপ সবুজ দু’কুলে
শুধু দোলে শূন্য নৌকো ব্রজধাম কই কোথায় পারানি মানুষ---
ষোলোআনা কড়ির হিসেব নিতে সকল ঘরে এখন ছদ্মবেশী, 
চেতনার আত্মকথা বহু শতাব্দী প্রাচীন সকল উপাসনা স্বর---
সকাল সূর্যের  কুমকুম রঙে দেখো বেঁচে আছি হৃদয় কুসুমে। 

বিকাশ চন্দ 
কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর
পশ্চিম বঙ্গ, ভারত