অটোয়া, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪
আশিস চক্রবর্তী-র দু’টি কবিতা

জন্মান্তর
কটা এলোপাথারি বেখাপ্পা  বেমানান প্রেম।
তারুণ্যের চৌকাঠে -আড় চোখ, বাঁকানো ঠোঁট
আর পায়ের উঠে যাওয়া নেল পলিশ দেখে
বুকের ভেতর কাটা কুটি খেলে গেল ছেলেটার।
ঘুষঘুষে জ্বরের মতো গোটা শরীরে ধরে গেলো মেয়ে টাকে।
রাত ভোর চোখ কালি করে জেগে, তীব্র অরুচি
এসে গেলো পাকস্থলীতে।

প্রায়, ওরা প্রাগৈতিহাসিক বোঝা পড়ায় মেতে উঠতো আড়ালে।
অশনি খেলে যেত, যখন একটু স্পর্শে মাতোয়ারা হত দুজনে।
ঘন ভালোবাসার স্তুপ ঘেঁটে উঠে আসত ওদের অঙ্গীকার।
প্রকৃতি জুড়ে তখন মন ভালো করা অভ্যাসেরা
আড়িমুড়ি ছেড়ে উঠে তাকাতো দু চোখ মেলে।
ছেলেটা হৃদয় জুড়ে বুকের ওপর উল্কি আঁকলো গোলাপ ফুল- উপহারের মতো।

চিরকাল যে ভাবে অভিশাপ নামে, সে ভাবেই
ভেঙে গেল দুপক্ষের ভরসার অবলম্বন।

ধমনী কেটে সেই বাঁকানো আড়ি দেয়া চোখ ঢলে পড়লো মৃত্যুর কোলে।
ছেলেটার প্রাণ থাকলেও, ভারসাম্য থাকলো না।
প্রায় একযুগ পর, মেয়েটি পরজন্মে প্রজাপতির বেশে এসে,
বসলো তার পূর্ব জন্মের প্রেমিকের গোলাপ আঁকা বুকের ওপর।

যুবতী
সমানে, জ্বলন্ত শুক্র গ্রহ।
হাতে কম্পমান বিধ্বস্ত লণ্ঠন।
সামান্যতম আলো পড়েছে রাস্তায়।
সমস্ত কথা বলা হয়ে গেছে,
রঙীন ঝিনুকের মতো।
শেষটাই, তোমার সাথে যখন দেখা হলো।
অবসন্ন শরীরে, উন্মাদনা নিমেষে দূর।
দেখলাম, মোরামের রাস্তার ওপর, নগ্ন
তোমার উন্মুক্ত দুটি চরণ।
তখন, বর্ষায় ক্রমশ দুলে ওঠা
ময়ূরাক্ষী বলিনি তোমায়,
বলিনি  তো কংসাবতী!
যুবকের গন্ডির সামনে সেবার আমি,
বালির বাঁধের মতো তুমি যুবতী।

আশিস চক্রবর্তী
পশ্চিমবঙ্গ