অটোয়া, বৃহস্পতিবার ২ মে, ২০২৪
বেলা শেষের গান - সুনির্মল বসু

সূর্য ডোবার পর নদীর উপর সন্ধ্যা নামে,ঘরে ফেরা পাখির ডানায় লেগে থাকে রোদ্দুর, সুখের পৃথিবী আর কতদূর,
আকাশে তারা, আকাশে চাঁদ,
সুপারি গাছে ঝুলে থাকে মায়াময় জ্যোৎসনা,
রাত আসে, ঘুম আসে, স্বপ্ন আসে, তুমি আসো,
আমার পাশে বসো,
কেন এলে,
তুমি যে আমায় ডাকছিলে,
ও, তাই।
হ্যাঁ, জ্যোৎসনার সৌন্দর্য একা দেখতে নেই,
কত জন্ম ধরে এই জ্যোৎসনায় হাঁটছি,
আর,
আর, অরণ্য পাখির গান শুনছি,
পাহাড় দেখছে,
আকাশ দেখছে,
নদী দেখছে,
দেখবেই তো,
কেন,
স্বপ্নের রাত,
জীবনটা কেন স্বপ্নের মত হয়না,
জানিনা। বলতে পারবো না,
চলো, জ্যোৎসনায় হাঁটি,
চলো, জ্যোৎসনায় ভিজি,
দ্যাখো, তালবন দুলছে,
দ্যাখো, সুপারি গাছের ছায়া দীঘিতে,
পাশে হলুদ বন,
সবুজ পাতা, ওটা কি গাছ,
মনে হয়, দোলনচাঁপা,
আর ওটা,
শিমূল বন,
পাখি ডাকছে,
বিলের ওপারে বাঁশি বাজছে,
কে বাজায়,
মামুদ চাচা,
এত ভালো বাজায়,
হ্যাঁ, ও তো শিল্পী,
সবাই বলে, অকর্মা,
ওর কাজটা সবাই বোঝে না,
যদি বুঝতো,
তাহলে পৃথিবীটা সুন্দর হোত,
সামনে নদী,
সামনে বালিয়াড়ি,
বড্ড কুয়াশা,
আমি যদি রবি ঠাকুর হতাম,
কি যে বলো,
নইলে, বিভূতিভূষণ,
তাহলে,
তাহলে বর্ণনা দিতাম,
কিসের,
এই রাতের,
দূরে পাহাড়,
পাহাড় ঘুমোচ্ছে,
ঝাউবন,
ঝাউবনের উতল হাওয়া,
ইউক্যালিপটাস গাছ,
ঝিরিঝিরি হাওয়া,
সমুদ্র বন্দর,
থেমে থাকা জাহাজ,
এটা কোথায়,
ইস্তাম্বুল,
না না, এটা ঢাকা,
মনে হয়, খিদিরপুর ডক,
হবে হয়তো,
ভোর হচ্ছে,
পথে কারা,
গা থেকে শাকপাতা বেচতে যায় যারা,
চায়ের দোকানে আঁচের ধোয়া,
পাখি ডাকছে,
রাত্রির অন্ধকার সরে যাচ্ছে,
ভোর হচ্ছে,
ফুল গাছে ফুল ফুটেছে,
ভোরের কুয়াশার আস্তরন,
কর্মমুখর দিন শুরু,
তাই হোক,
অলৌকিক রাতটা তো চিরকালের জন্য মনের মধ্যে বেঁচে থাকুক।

সুনির্মল বসু
নবপল্লী, বাটানগর
দক্ষিণ 24 পরগনা 
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত