কোনো আলো কথা রাখেনি - প্রবীর রঞ্জন মণ্ডল
দিকে দিকে অন্ধকার হাঁটতে হাঁটতে
কোথায় নেমে যাচ্ছে আমার এ দেশ!
একটা গর্ভবতী মা হাতির মৃত্যু দুচোখে আঙুল ঢুকাল
শিহরিত হলো এই সমাজ!
সমাজ কী শিহরিত হলো?
কোনো আলো সেদিন কথা রাখেনি।
যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে ঘরে ফেরার তাড়ায়
ছাগলের তৃতীয় বাচ্চার মতো পরিযায়ী শ্রমিকের দল
একান্ত নিরুপায় অসহায় হয়ে
কোমর, পা আর মনের উপর বলিষ্ঠ জোর রেখে
হাজার হাজার মাইল সামনে রেখে
পা বাড়ালো বাড়ির পথে
একান্ত মৃত্যু এসে কারও কারও দুয়োরে কড়া নাড়ল
কোনো আলো সেদিন কথা রাখেনি।
অসহায় দুধের শিশুর মায়ের শেষ যাত্রার ছবি
শিশুটি তখনও মায়ের আঁচলে রেখেছিল টান!
ঈশ্বরের কোন পাষণ্ড বুক কেঁদেছিল সেদিন
চোখের জলে বুক ভেজানোর দৃশ্যে
নেমে এসেছিল এক অদ্ভুত আঁধার!
সেদিনও কোনো আলো কথা রাখেনি।
স্টেশনে ফিরে আসা শ্রমিকের দলে
প্রয়োগ হলো সুনিশ্চিতভাবে কীটনাশক
এ যেন গরু ছাগলের গায়ে এঁটুলি বিনাশ!
করেছিল একদল সুশিক্ষায় শিক্ষিত মানুষের দল।
সেদিনও কোনো আলো কথা রাখেনি।
রাস্তায় হেঁটে চলা ট্রলি ব্যাগে
আধা শোওয়া ঘুমে আচ্ছন্ন একটি শিশু
অচৈতন্য হৃদয় মা টেনে চলেছে তারে
বাড়ির পথে পায়ের কদম কমাতে ;নিরুপায়!
সেদিনও কোনো আলো কথা রাখেনি।
বিচ্ছিন্ন ঘটনা জুড়ে জুড়ে অদ্ভুত আঁধারে
ঢেকে গেছে আমার এ দেশ;
এসো সবাই অন্ধকার ঘুচিয়ে আলো তুলে ধরি
একটা দিগন্তজোড়া আলোর বড্ড বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
প্রবীর রঞ্জন মণ্ডল
দঃ২৪ পরগনা
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
-
ছড়া ও কবিতা
-
17-09-2020
-
-