ইজিচেয়ার - জয়দীপ মুখোপাধ্যায়
কাঠের একটা ইজিচেয়ারের বড় শখ ছিল আমার। বিরাট ইজিচেয়ারটা পাতা থাকবে ঘরের একপাশে, ওপরে সিলিং ফ্যান বোঁ বোঁ করে ঘুরবে আর আমি আধশোয়া হয়ে গল্পের বই নিয়ে স্বপ্নের জগতে ডুব দেব। এই ইচ্ছেটার কথা মিতাকে মানে আমার বউকে আর আমার মেয়ে ঈপ্সিতাকে আমি প্রায়ই শোনাতাম। কিন্তু উনপঞ্চাশটা বসন্ত পেরিয়ে গেলেও সেই স্বপ্ন আমার আর পূরণ হলো না। ছোট ভাড়ার দুই রুমের ফ্লাট ছেড়ে একসময় উঠে এলাম তিন কামরার বড় ফ্ল্যাটে। গৃহপ্রবেশের দিন ড্রইং কাম ডাইনিং রুমটার প্রশস্ত কোনার জায়গাটা দেখে মনটা হু হু করে উঠেছিল আর ভাবছিলাম ইশ যদি ওখানে একটা ইজিচেয়ার বসানো থাকতো।
খুব ছোটবেলায় জামশেদপুরের দাদুর বাড়ির বিশাল বাইরের ঘরটায় ঠিক মার্বেলের ডাইনিং টেবিলের পাশেই রাখা থাকতো আমার দাদুর সেই বিখ্যাত পুরোনো ইজিচেয়ারখানা। দাদুর মতোই রাশভারী ছিল চেয়ারখানা। আমি যবে থেকে সব কিছু বুঝতে শুনতে শিখছি তবে থেকেই দেখেছি ইজিচেয়ারখানা ওখানেই বসানো। কোনোদিন একচুলও এদিকে ওদিকে সরতে দেখিনি। আমার প্রায় পাঁচ বছর বয়সে এক গরমের ছুটিতে দাদুর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে খেয়াল করলাম, বাঃ এটা তো ভারী সুন্দর একটা জিনিস। মাঝখানে বসার থেকে চওড়া কাঠের হাতলগুলোতে বসতেই বেশি মজা। মামাতো ভাইবোনদের সাথে খেলার সময় মার্বেলের টেবিল থেকে ইজিচেয়ারে লাফিয়ে পড়ার মজাটাই কিছু আলাদা ছিল। আবার ওটা করলেই মামীরা আর দিদিমা যেন অসন্তুষ্ট হতো আর বলতো "কি গেছো ছেলেরে বাবা। কিছুতেই চুপ করে বসে থাকতে পারে না।"
রোজ সকালেই স্নান সেরে আমার প্রচন্ড রাশভারী দাদু নিজের কিছু দরকারি কাগজপত্র নিয়ে সেই ইজিচেয়ারে বসতেন। ডান দিকের হাতলে ধূমায়িত কফি রাখা থাকতো। দাদু একটু করে কফিতে চুমুক দিতেন আর গভীর মনোযোগ সহকারে দরকারি কাগজগুলোটে ডুবে যেতেন। একটু পরে জলখাবার খেয়ে যখন কিছু লেখালেখি করতে ইজিচেয়ার ছেড়ে মার্বেলের টেবিলের পাশে রাখা সাধারণ চেয়ারে বসতেন তখন সুযোগ বুঝেই টুক করে আমি সেই ইজিচেয়ারে গিয়ে শরীরটাকে এলিয়ে দিতাম আর দাদুকে নকল করার চেষ্টা করতাম। চেয়ারটা ছিল এক প্রমাণ সাইজ মানুষের বসার জন্য। তাই আমার পুরো শরীরটাই ওটার ওপরে এঁটে গিয়েও কিছুটা জায়গা বাকি থাকতো। আবার পা ঝুলিয়ে বসতে গেলে প্রায় শুয়ে পড়তে হত। দুটোর কোনটাতেই ঠিক আরাম তো হতোই না বরং একটু অস্বস্তিই হতো। তখন আমি দুপাশের চওড়া হাতল গুলোর একটাতে উঠে বসার চেষ্টা করতাম। হাতলে বসে বেশ রাজকীয় ভঙ্গিতে চোখ বুজে আরাম করছি ওমনি তিন্নি, মানে আমার মামাতো বোন এসে আমাকে সরিয়ে নিজে সেই হাতলে বসে পড়তো।
গরমের ছুটি, পুজোর পর বা কোনো অনুষ্ঠানে যখনই দাদুর বাড়িতে যেতাম, দেখি দাদু ছাড়া অন্য কেউ সেই ইজিচেয়ার এ বসে না। জামশেদপুর খবরের কাগজ বেলা এগারোটায় আসতো। শীতের দুপুরে খবরের কাগজ হাতে ইজিচেয়ারে শরীরটাকে এলিয়ে বসা দাদুকে দেখতাম আর ভাবতাম আমি কবে বড়ো হয়ে এরকম বসে আরাম করবো।
কোনো বিয়ে বা পুজোতে আমরা ভাইবোনেরা যখন লুকোচুরি খেলতাম তখন ওই ইজিচেয়ারের পিছনে বা নিচে লুকানোটাই আমার প্রধান আকর্ষণ ছিল। লুকিয়ে লুকিয়ে ওটার গায়ে হাত বোলাতাম আর মনে মনে ফিসফিস করে বলতাম তুইই এইবাড়ির আমার একমাত্র বন্ধু।
বেশ কিছুদিন ভুগে প্রায় আশি বছর বয়সে দাদু চলে গেলেন। শ্মশান থেকে ফিরে দাদুর সেই বিশাল বাইরের ঘরের কোনে রাখা একটা মোড়ায় বসে আছি আর ইজিচেয়ারটাকে দূর থেকে লক্ষ করছি। ওটা কি বুঝতে পারছে যে দাদু আর ওতে কখনো বসবে না। আমি মানসচক্ষু দিয়ে যেন দেখতে পারছি ইজিচেয়ারটা চোখের জল ফেলছে। উঠে আমার বন্ধুকে একটু স্বান্তনা দিয়ে যাবো এমন সময় সেই অভূতপূর্ব ব্যাপারটা ঘটলো। দেখি বড়মামা সেই ইজিচেয়ারে এসে বসে পড়েছে। আমার চোখে সে এক অদ্ভুত ঘটনা। দাদু ছাড়া কেউ যে সেই চেয়ারটাতে বসতে পারে সেটা আমার ধারণার অতীত ছিল। ওটা যেনো কেবল দাদুরই বসার জন্য ছিল। কিন্তু দেখলাম বড়মামা দাদুর মতো করেই সেই চেয়ারে বসে আছেন। আমি উঠে গিয়ে চেয়ারের পিছনে দাঁড়িয়ে ওটাকে হাত বুলিয়ে আদর করতে লাগলাম।
ছোটমামার বিয়েতে প্রায় চারদিন দাদুর বাড়িতে থাকবার জন্য মায়ের সাথে এসে হাজির হলাম। এসে থেকেই ভিড় বাড়িতে আমি ঐ ইজিচেয়ারের পাশে ঘুরঘুর করে বেড়াচ্ছি। একবার বড়মামা তো পরে মেজমামা বা ছোটমামা চেয়ারের দখল নিয়ে থাকে আমি আর বসার সুযোগই পাই না। একটু পরেই আমাদের ভাইবোনদের খেলা শুরু হলো। তখন প্রায় সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। সেই সময় ওখানে প্রায়ই লোডশেডিং হতো। লোডশেডিং এ লুকোচুরি খেলার মজাই কিছু আলাদা। দিদিমা সন্ধ্যা দিয়ে প্রদীপ হাতে ঘরে ঘরে ঘুরছে। আমিও যথারীতি সেই ইজিচেয়ারের নিচে লুকিয়েছি। মেঝেতে পড়ে থাকা কিছু সূচালো জিনিসে হাঁটুটা লাগলো। তুলে দেখি একটা ছোট লোহার পেরেক। হটাৎ মাথায় একটা দুস্টুবুদ্ধি খেলে গেল। পেরেকটা দিয়ে কাঠের হাতলের তলার দিকে আমার নামের আদ্যক্ষর বাংলায় লিখে রাখলাম যেন জিনিসটা আমার বলে চিহ্নিত করে দিলাম।
এর প্রায় দুবছর পর মামাতো ভাইয়ের পৈতেতে সকাল বেলায় হাজির হয়ে ঘরে ঢুকেই চমকে গেলাম। অবাক কান্ড। ইজিচেয়ারটায় নতুন পালিশ করা হয়েছে। বেতের বুনুনিগুলোও নতুন হওয়াতে চেয়ারটার যেন রূপ খুলেছে। দাদুর বাবার বানানো ইজিচেয়ার টাকে পঞ্চাশ বছরে যেন নতুন যৌবন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরে যারাই ঢুকছে তারাই ওটার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিন্তু আমার মনের কোনায় একটা শঙ্কা দেখা দিল। আমার করা চিহ্নটা কি পালিশে চাপা পড়লো। চেয়ারটা খালি দেখে আমি দৌড়ে গিয়ে ধপাস করে বসে পড়লাম। বাঁ দিকের হাতলের নিচেই কাঠ চিরে আমার নামের আদ্যক্ষরটা চিহ্নিত করা ছিল। আমি বাঁ দিকের হাতলের নীচে হাত বোলালাম। কিছু বুঝতে পারলাম না। আমাকে নিজের চোখে চিহ্নটা দেখতে হবে। কিন্তু এতো ভিড়ে যেটা করা অসম্ভব। তাছাড়া আমি আর সেই ছোট্টটিও নেই। নাকের তলায় গোঁফের রেখা আর গালে অল্প অল্প দাড়ি দেখা দিয়েছে। উচ্চমাধমিক দেব। চিহ্নটা দেখতে গেলে মাটিতে বসা ছাড়া কোনো উপায় নেই। মনে মনে মতলব ভাঁজতে লাগলাম। উপযুক্ত সময় খুঁজতে হবে।
অদ্ভুতভাবে সুযোগটা এসে গেল। বিকালবেলায় দিদিমা এসে ইজিচেয়ারে বসে আমাদের মানে নাতি নাতনিদের সাথে গল্প করছে। সন্ধ্যে দেবার সময় উঠতে গিয়ে ওনার শাড়ির পাড়টা সেই চেয়ারের খাঁজে আটকে গেলো। কেউ দুস্টুমি করেও আটকে দিয়ে থাকতে পারে। দিদিমা সেই আধশোয়া অবস্থা থেকে কিছুতেই উঠতে পারে না। আমি দেখলাম এই সুযোগ। মাটিতে বসে পড়লাম। শাড়ির খুঁটটা ছাড়াতে ছাড়াতে দেখলাম নাহ এখনো আমার নাম পড়া যাচ্ছে। পালিশটা কেবল ইজিচেয়ারের হাতলের ওপরে করা হয়েছে, নীচে করেনি। ভীষণ খুশি হলাম। আমি তাহলে এখনও ইজিচেয়ারের সাথেই রয়ে গেছি।
আমি কলকাতায় পড়াশোনা করতে চলে এলাম। পড়াশোনা, চাকরি, বিবাহ, সন্তান এসবে কখন যে সময় নদীর স্রোতের মতো বয়ে গেল তা বুঝতে পারিনি। কলকাতাতেই আস্তানা গেড়েছি। কালে কালে আমার চুলেও পাক ধরলো। কাঁচাপাকা গোঁফের জন্য পুরো গোঁফটাকে বিসর্জন দিয়েছি। কলকাতায় থাকাও প্রায় তিরিশ -একত্রিশ বছর হয়ে গেল। দিদিমাও বহুদিন মারা গেছেন। আমি যেতে পারিনি। মাঝে একদিন খবর পেলাম দাদুর সেই বিশাল বাড়িটা নাকি প্রমোটারকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ওটা নাকি ছয়তলা ফ্লাট আর নীচে দোকান হবে। মনটা খারাপ হয়ে গেল। সব ভাইরা জামশেদপুর ছেড়ে চাকরি করতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। দিদি আর বোনেদের বিয়ে ও তারপর সন্তানাদি হয়ে তারাও বিভিন্ন জায়গায় সংসার জালে জড়িয়ে পড়েছে। বয়স্ক মামা মামীরা ছেলেমেয়েদের কাছে বা অন্যত্র ভাড়া বাড়িতে উঠে গেছেন। ফোনে মাঝে মাঝে ক্ষীণ যোগাযোগ। আমার মাথায় কেবল একটাই চিন্তা- ইজিচেয়ারটার কি হলো?
বড়মামাকে একদিন রবিবার সকালে ফোন করলাম।একথা, সেকথার পর ইজিচেয়ারের কথাটা পাড়লাম। বড়মামা বললেন" আমরা সব ছোট ফ্ল্যাটে থাকি, ওখানে অতো বড় ইজিচেয়ার রাখার জায়গা কোথায়?"
"তাহলে ওটা কোথায় গেল?" আমার গলায় উৎকণ্ঠার সুর।
"তুই ইজিচেয়ারটা খুব ভালোবাসতিস না?"
আমার চোখে প্রায় জল এসে যাবার উপক্রম হলো। তারমানে মামারাও জানতো আমি ঐ ইজিচেয়ারের জন্য পাগল ছিলাম। চেয়ারটার সাথে যে আমার কি সখ্যতা ছিল তা কাকে আমি বোঝাই। যাকেই বলতে যাবো সেই আমাকে পাগল বলে সন্দেহের চোখে দেখবে। অসম বয়সের একটা জীবন্ত লোকের সাথে একটা মৃত কাঠের আসবাবের যে কি নিবিড় বন্ধুত্ত তা বোঝার সামর্থ কতজনের থাকবে সেটাতে আমারই সংশয় দেখা দিল।
আমি আবার বড়মামাকে জিজ্ঞাসা করলাম
"বড়মামা, ইজিচেয়ারটার শেষ পর্যন্ত কি হলো?"
"ওটা প্রমোটারই নিয়ে নিয়েছে। নিজের কাছে কি আর রাখবে? দেখ, কাউকে বিক্রি করে দিয়েছে।"
আমি বড়মামার থেকে প্রমোটারের ফোন নম্বর নিয়ে পরের দিন ফোন করলাম। সে মারওয়াড়ি প্রমোটার ইজিচেয়ার এর নামে আকাশ থেকে পড়লো। "কৌন চেয়ার?"
" আরে, কুরসী কুরসী। লম্বা চেয়ার।" আমি বোঝাতে চেষ্টা করছি।
" হামারা ফ্লাট কি বিজনেস হ্যায়। চেয়ার কা নেহি।"
ফোন কেটে দিলো।
আমাদের নতুন ফ্ল্যাটে আমার জন্মদিন পালন হবে। মেয়ে আর বউ বেশ কয়েক জন লোককে নিমন্ত্রণ করেছে। জন্মদিনের আগের দিন দুপুরে বেলায় বউয়ের ফোন "একবার ডালহৌসি আসতে পারবে। তোমার জন্মদিনে দেব বলে অকসানে একটা ভালো ইজিচেয়ার নিচ্ছি।"
" আমি তো কাজে আটকে আছি। যেতে পারবো না। নিয়ে নাও। কাল বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলে দাও।"
পরের দিন মেয়ে আর বউ দেখি খুব ঘর সাজাচ্ছে ।সন্ধ্যে হলেই জনা দশেক বন্ধু বান্ধব আসবে। এগারোটার সময় ডোরবেলের আওয়াজ। দরজা খুলতেই দুটি ছেলে ইজিচেয়ারটিকে নিয়ে এসে ঘরের ফাঁকা জায়গাটিতে বসিয়ে দিয়ে বিদায় নিল। বেশ সুন্দর পালিশ করা হলেও, বেতের কাজটি পুরোনো। দেখেই মনে হয় পুরোনো ইজিচেয়ার, কারণ আধুনিক ইজিচেয়ার এর গড়ন একটু পরিবর্তিত হয়েছে।
ইজিচেয়ারটিকে ঘিরে সবাই দাঁড়িয়ে। বাবা, মা, বউ এবং মেয়ে। চেয়ার দেখে মায়ের চোখেও বিস্ময় "এত বড়ো দুমবো চেয়ার রাখলে মানুষ চলাফেরা কিকরে করবে"। চেয়ারটাও যেন আমাকে দেখে হতভম্ব হয়ে অবাক দৃষ্টিতে আমার পানে চেয়ে আছে। আমি বাঁ দিকের হাতলের পাশে মাটিতে বসে পড়লাম। আমার বুকটা দুরুদুরু শুরু করেছে। হাত পা কেমন যেন একটু কাঁপছে। বউ ভয় পেয়ে জিজ্ঞাসা করলো "কি হলো, মাটিতে বসে পড়লে কেন? শরীর খারাপ?"
আর শরীর। পঞ্চাশ বছরের টেনে আনা শরীরটা আজ সেই ছোটবেলায় ফিরে গেছে। আমি লুকোচুরি খেলা শুরু করেছি। শরীরটাতো বড় হয়ে গেছে, মনটা হয়নি। বড়ো শরীরটাকে তো আর ইজিচেয়ারের পিছনে লুকোতে পারিনা। আমি মাটিতে শুয়ে পড়লাম। বাঁ দিকে হাতলের নীচে তাকালাম।হাঁ, ঐতো, আমার নামের আদ্যক্ষর এখনো জ্বলজ্বল করছে। আমি আনন্দে ইজিচেয়ারটাকে জড়িয়ে ধরলাম। এবার ওটার সামনে দাঁড়ালাম। আবার একটু দূরে সরে এলাম। কত কিছু পুরোনো স্মৃতি মনের জানালা দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ছে। দূরে দাঁড়িয়ে একদৃষ্টিতে চেয়ারটার দিকে চেয়ে দেখি কেমন যেন ফিনফিনে বাতাসের মতো আমার রাশভারী দাদু ইজিচেয়ারে বসে একটু উসখুস করছেন। খবরের কাগজটা ভাঁজ করে হাতে নিয়ে হালকা শরীরটাকে দোলা দিয়ে উঠে পড়লেন আর সেই বজ্রগম্ভীর গলায় আমাকে ডেকে বললেন "আয় তোর ইজিচেয়ারে বসে পড়।"
জয়দীপ মুখোপাধ্যায়
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ
-
গল্প//উপন্যাস
-
28-09-2020
-
-