অটোয়া, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪
বিকাশ চন্দ’র দু’টি কবিতা

বন বাসর শয্যায়
জ্যোৎস্না রাতের মায়ায় মেতেছে হরিণ জল ছায়ায়
কুশলী বাঘেরা এখনো জানে আহারে বিহারে স্বভাব,
বাঘিনী হরিণী সকলেই জানে শরীর জুড়ে ---
বেড়ে ওঠে উষ্ণ রক্তে রঙ মাখায় জোনাকি হলুদ মায়া, 
রাত পাখিদের নিসর্গ ডাকে রক্তে ফোটে গোলাপ---
মায়া অরণ্য জানে বাঘিনী হরিণী জানে রাতের সংলাপ। 

আদিবাসী অরণ্য আবাসে গাছেরা জানে আদি কথা সব---
মাদলে বাদলে সবুজ বাবুই ঘাসে কেন্দু পাতার শ্বাসে,
পুরুষে নারীতে মিলনে কি একাত্ম একাকী ---
বুনোফুল জানে সংসারের উঠোনে হাঁটে নন্দদুলাল, 
অপলক দেখেছে মহুয় ফুলের গন্ধ মালায় রাই---
সব বনে কুঞ্জ থাকে বুনো ঘাসে সেজেছে নীল বনানী মন্দির। 

অরণ্য জানে বাতাসে ভাসে দীর্ঘশ্বাস বোঝে মাটির জননী ----
বর্ষ শেষ নীল উৎসব মেতেছে গাজন সমুদ্র বাতাসে,
একই আকাশ সমুদ্র ছুঁয়ে আদর গাছের পাতায়---
দিনের রোদ ছায়া দিব্যি বোঝে চাঁদ কলা বিনিদ্র মুদ্রায়,
আশ্চর্য সংসার ভেজে মেঘের বৃষ্টিতে শ্রাবণী গাছের সারি---
মেঘের কাছে গাছেরা দু'হাত তুলে চলেছে বন বাসর শয্যায়। 

ছিন্ন মূলে জাগে প্রেম প্রহর 
পাকা ধানের গন্ধ মাখে সকাল দুপুর
সন্ধ্যা রাত্রি বিদগ্ধ পৌরুষ কাল,
এসব বোঝে প্রাত্যহিক ভালোবাসা
অশ্রুত ভাষণ বিলাপ ছুঁয়ে যায়, 
প্রেম কথা লিপি অরণ্যের অকাল কুয়াশায় 
লুপ্ত ছায়া মুখ হৃদয় পোড়ায়। 

নিজের জন্য কেউ জ্বালেনি আকাশ প্রদীপ 
চিতা কুণ্ড সব মারি কালের, 
রঙ লেগেছে মনের কোণে বোঝে প্রেম পরিণয় 
ঘর গেরস্ত মন্দির মাচান খাপছাড়া, 
মধু মঙ্গল বাসর ভালোবাসা মন্দ হাসার---
আড়ালে লুকিয়ে বিদায় সংকেত,
ভূমিষ্ট সময়ের কান্নায় কুয়াশা চরাচর---
আলো আঁধারিয়া কুঁড়েঘর গুলি ভাসে। 

হিম সময়ের ঘরের গুমোট নিরন্তর ---
ভাসে শ্বাসে প্রশ্বাসে মায়া আলিঙ্গনে, 
সজাগ মানুষ ও কখনো মরে বাঁচে সংলাপে সংরাগে
শরীর ছেঁড়া ছিন্নমূলে জাগে প্রেম প্রহর। 

বিকাশ চন্দ 
কুমারপুর, কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর
পশ্চিম বঙ্গ, ভারত