সিদ্ধেশ্বর হাটুই এর দু’টি কবিতা
যাযাবর জীবন
গাছের নিচে বা ফাঁকা মাঠে
স্কুল ঘরের বারান্দাতে ওরা,
ওদের নেই কনো স্থায়ী ঠিকানা
দুঃখ কষ্ট বেদনায় ওদের জীবন ভরা।
হয়তোবা কনোদিন তাদের
ছিল স্থায়ী ঠিকানা ও পরিচয়
কনো এক ঝড়ে উড়ে গেছে সব
আজ হয়েছে রাস্তার লোক যাযাবর নিশ্চয়।
অস্থায়ী আচ্ছাদনের ভেতর জীবন যাপন করে
ওটাই ওদের বাড়ির সমান,
ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে চলে
গেয়ে যায় জীবনের জয় গান।
ভিক্ষাবৃত্তি করে খাবার জোটায়
ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাগুলো থলেতে ভরে নিয়ে
পিঠে ঝুলিয়ে ভিক্ষার জন্য দ্বারে দ্বারে যায়
ফিরে এসে দিনের শেষে পেট ভরায় ভিক্ষার অন্ন দিয়ে।
প্রকৃতিকে ওরা জয় করেছে
যন্ত্রনাভোগ আর কঠোর পরিশ্রম দিয়ে,
একতা তাদের দিয়েছে শক্তি
বাঁচতে তাদের যাযাবর জীবন নিয়ে।
উন্নত সমাজের লোকেরা তাদের অচ্ছুত জ্ঞানে দেখে
ওদের সাথে বললে কথা দশ হাত যায় পিছিয়ে,
তৃষা মেটানোর জলটাও ওরা পায়না পাড়ার কনো কলে
পুকুরের জল বা অন্য কোথাও জল আনে বয়ে।
যাযাবরের জীবন যাপন কেন করে ওরা
দেশটা আজ এত উন্নত যাযাবরে ভরা ?
ওদের কেন হয়নি ঠিকানা, হয়না কেন বাড়ি
তাদের জীবনেকি একটাই অধিকার ভিক্ষাবৃত্তি করা।
ভিখারি গড়ার জন্য এ সমাজ দায়ী
যেওনা সেকথা ভুলে
উন্নত সমাজ পারবেনা ওদের
ফিরিয়ে আনতে উন্নত সমাজে তুলে?
বিফল জনম
আমিত্বে কাটালে জীবন
সে তো জীবন নয়,
রাতের আকাশে চাঁদের আলো
সবার আপন হয়।
সূর্যের মতো ছড়িয়ে দিতে
পারো যদি আলো,
দীন ঐ মানুষ গুলোর
করতে পারো ভাল।
বিলাসিতায় উর্ধ্বে তুমি
কাটালে জীবন খানি।
নিচুতলার সমাজটাকে
করলেনা তুমি ঋণী।
হবেনা তুমি সূর্য-চন্দ্র
সকলে যাবে ভুলে,
থাকবে নাতো কনো স্মৃতি
যাবে যখন চলে।
তোমায় নিয়ে কাহারো মনে
হবে না কনো ব্যথা।
আমিত্বে তুমি কাটালে জীবন
এটাই কী জীবনের স্বার্থকতা।
সিদ্ধেশ্বর হাটুই,
বাঁকুড়া, পশ্চিমবঙ্গ
-
ছড়া ও কবিতা
-
11-02-2021
-
-