অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
আঁধার - তাইজুল আরেফিন

নিস্তব্ধ রাতের মতো অন্ধকার  এখানে এখন
রাজনীতি,ধর্ম-অধর্ম আর অজ্ঞতার ঘাড়ে চেপে
পৃথিবীর সব অন্ধকার জড়ো হয়েছে এখানে
যেন বহুকাল সূর্যদয় হয়নি পৃথিবীর এই প্রান্তে,
একটি জোনাকি পোকাও জন্ম নেই নি
কোনো দিন এই জনারণ্যে
পূর্ণিমার চাঁদ ম্লান মুখে ফিরিয়ে নেয় মুখ
আঁধারের কালো চাদরে ছেয়ে যায় পৃথিবীর এ প্রান্ত
সে আঁধার মিশে যায় আমাদের রক্তে, রক্তের কণিকায়
বুকপকেটে জমিয়ে রাখা স্বপ্নগুলো সব ভেসে যায়-
আষাঢ়ের প্লাবন যেমন ভাসিয়ে নিয়ে যায়, পিঁপড়েদের সভ্যতা।

কতটা আঁধারের রাত শেষ হলে আসে জ্যোৎস্না?
পঞ্জিকার হিসেব যেন ভুলেই গেছি আমরা সবাই-
অবহেলায়, উদাসীনতায়।
কতটা নিস্তব্ধতায় নিঃশ্বাসের শব্দ মনে হয় কোলাহল!
আমাদের নিস্তব্ধতা বধির করে রেখেছে আমাদের সকল কণ্ঠস্বর
আমাদের আর কোনো সুর নেই-নেই গান
পেঁচার ডাক হয়ে উঠেছে প্রিয় সুর, প্রিয় গান।

এ আঁধারেও কি স্বপ্ন দেখা যায়, প্রিয়তমা?
যে স্বপ্নে আসে প্রেয়সীর মুখ,অপার্থিব সুখ
যে স্বপ্নে যুবক যুবতিরা বিশ্ব ঘুরে আনে মানিক, রতন
নতুন দুনিয়াকে সাজায় নতুন নতুন সাজে
যে স্বপ্নে মানবজাতি হয়ে ওঠে মানুষ আবার,
শান্তি আর ভালোবাসায় পূর্ণ হয়ে ওঠে জনজীবন।

এ আঁধারের অবসান হবে, প্রিয়তমা-
সে স্বপ্ব দুচোখ মেলে জেগে দেখা যায়,
যদি আলোর প্রদীপ জ্বেলে রাখা যায় মনে
কালো পাথরের সাথে শ্বেত পাথরের আঘাত করে
আমি আলো জ্বালাবো
অসুন্দর কুৎসিত এ সভ্যতার স্রোত থেমে যাবে
স্রোতের বিপরিতে স্রোত তুলে,
আধাঁরের বিপরিতে আলো জ্বেলে
বহুদূর পথ পারি দেব স্রোতের প্রতিকূলে
তুমি ঘুমন্ত যাত্রী আর আমি মাস্তুলে
বহুদূরের ডাক তুমি শোননি, আমি তো শুনেছি
জোছনাবিলাসে রাত জাগবে সবাই, 
আঙুলের সাথে আঙুল, ঠোঁটের সাথে ঠোঁট
মেলাবে সবাই- নতুন উল্লাসে।

তাইজুল আরেফিন
বরিশাল, বাংলাদেশ