দেওয়ান সেলিম চৌধুরীর দু'টি কবিতা
এমন কেন হয়
তুমিই যদি করিবে দান,করো শুধু মঙ্গল যত,
খেলা ছলে কেন করো জীবনকে অনর্থ?
যেদিন বুঝিলো রমণী মাতৃত্বের প্রথম সূচনা,
সন্তানের মঙ্গল লাগি, তব কাছে করিলো প্রার্থনা।
তোমাকে বসাইলো সে সর্বোচ্চ আসনে
মাগিলো শত বর সন্তানের কল্যাণে।
নিজেই ভুলে গেল জীবনের সমস্ত চাওয়া
একটা সুসন্তানই যেন এক মাত্র পাওয়া
দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর বেদনার করে অবসান
মা খুলিলো আখি দেখিবে সন্তান,
একটা মায়ের লাগি মুহূর্তটা কত মূল্যবান।
চোখ খুলে চেয়ে দেখে স্বপ্নের অমূল্য ধন
মুহূর্তে স্তব্ধ হল, জীবনের সব আয়োজন।
খেলা ছলে করিয়া দান, বিকলাঙ্গ সন্তান
মাতৃত্বের সমস্ত স্বপ্ন করিলে খান খান
মায়ের মন মোটেও বুঝনি তুমি হে বিধাতা
স্বৈরাচারী শাসকের মতো করে গেলে যা ইচ্ছা তা
তবুও মানুষ তোমাকেই ডাকিছে অবিরত
তুমি কি দেখনা তার হৃদয়ের ক্ষত?
তুমি তো অন্ধ নও প্রকৃতির মতো।
দেবতার হারিয়ে যাওয়া
কুমার মূর্তি গড়ে, ব্রাহ্মণ দেয় প্রাণ
এভাবেই গড়ে ওঠে জীবন্ত ভগবান
পূজারী ব্যবসা করে, মানুষ করে ভয়
যত ভয় তত হয় বিধাতার জয়
ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে বিশ্বাসীর মেলা
কুমারও ভুলে যায় মূর্তি গড়ার খেলা।
বিশ্বাসীর কাফেলায় কুমারও হারিয়ে যায়
সব কিছু বুঝেও যেন বুঝতে না পায়
শুধু দেখে জীবন্ত দেবতায় দাঁড়িয়ে সেথায়।
একদিন,যে মূর্তি গড়েছিল অতি যত্ন করে
নিজের সৃষ্টির কাছে নিজেই মাথা কুড়ে মরে।
সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষের মনে
বিশ্বাসের বিচিত্র ঢেউ, ওঠে ক্ষণে ক্ষণে
যুগে যুগে মানুষের ভীতিপূর্ণ মন
এই ধরণীতে অগনিত দেবতার করিলো সৃজন।
প্রয়োজন শেষে, দেখি অবশেষে,
দেবতাও হারিয়ে যায় অজানা দেশে।
দেওয়ান সেলিম চৌধুরী। কানাডা
-
ছড়া ও কবিতা
-
04-03-2021
-
-