অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
চন্দ্র জবার হাসি – ফরিদ তালুকদার

প্রাক যৌবনীয় আকাশের রঙ গুলো সব এখন 
স্মৃতির কক্ষে মরচে পড়া অচল পয়সার গন্ধ ছড়ায়
পাখিদের কন্ঠে এক মুক্ত আকাশের পদাবলী লিখে দেয়ার চেষ্টা 
ছেড়ে দিয়েছি অনেকদিন হলো
সময়ের কিছু ক্ষত তবুও সাত পুরুষের উত্তরাধিকার হয়ে
জড়িয়ে থাকে মধ্য নিশীথের ঘুম ভাঙা নিঃশ্বাসে
বিভ্রমের বিলাসী দানীতে পোড়া চন্দনের সুবাস হয়ে—
উসকে দেয় এক বনেদী ব্যাথার শোক!

ভালোবাসা নিখোঁজ—
পপির ঘ্রাণ মাখা এক স্মৃতি শরীর তবু বেঁচে থাকে শতায়ু তপস্যায়
তার চন্দ্র জবা হাসির ঠোঁটে হই পথভ্রষ্ট
হই বিরহীর শিরোনাম ভূমধ্যসাগরীয় অলিভের বনে
মায়াময় চন্দ্রালোকের পৃথিবী তার বিষণ্ণতায় খানিকটা আব্রু টেনে বলে
জানো না নাকি—
সে এখন ঘুঙুরের তাল বুনে কোন এক বেদুঈন বণিকের তাঁবুতে---!?

নিশার সুখ মাখা বালিহাঁসের মত্ত স্নানে, বেহুলার শোকও ভুলে যায় জলাঙ্গীর বুক
ঊষার নূপুর পায়ে একেকটি অলৌকিক ভোর জাগে রাঢ় পাহাড়ের চূঁড়ায়  
আর আমি—
প্রত্নতাত্ত্বিক নিষ্ঠায় খুঁড়তে গিয়ে সেই অতলান্ত হৃদয়ের পাঠ
কান্তিময়ী এক প্রস্তরে বারবার শুধু লিখে দিয়ে আসি এই জীবনের ক্ষয়
আরও দহনের এক দরখাস্ত হাতে—
উবু হয়ে পড়ে থাকি নির্বাণ শ্মশানের পথে!

সদা নির্দোষ সময় তার ভ্রুকুটি নিক্ষেপে বলে—
তুমি আরও কতোটা বিবর্ণ হবে বিভ্রান্ত পথিক?
তুমি তো হতে পারলে না কিছুই—
না বিপ্লবী, না প্রেমিক, কিংবা মানুষ বা অন্যকিছু…! 
মগজের অগ্নি সত্ত্বার দস্তখত তুলে দিয়ে বলি, এই নাও জবান বন্দী—

রক্তাক্ত জনপদে পা রেখে সাহস ছিলোনা কোন মুক্তির নিশান উড়াই, 
অগুনিত আর্তনাদকে সংগী করেও তাই চেয়েছিলাম,
কেবল ভালোবাসাই ফুটুক উল্লসিত ধূলায়—
কিন্তু—
যার পদমূলে এ অর্ঘ্যের আয়োজন 
কান্তির সেই অবয়বে—
যতোটা সে রয়েছে নারী
ততোটা যে নয় সে এক প্রেমাসক্ত প্রেয়সী!! 

ফরিদ তালুকদার। কানাডা