অটোয়া, রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
বিশ্ব নারী দিবসের ভাবনা – শামীমা কালাম

জ আটই মার্চ। বিশ্ব নারী দিবস। পৃথিবীর সকল নারীকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা অফুরান।

যা কিছু প্রথম ঘটে পৃথিবীতে তাই ইতিহাসে স্থান পায়। যা কিছু শুরু হয় বহু কষ্টে তা একসময় সহজ হয়ে যায়। কিন্তু নারী পুরুষের বৈষম্যতা যে ইতিহাসের নিয়ম ভেঙ্গে আজো টিকে আছে ঐতিয্য হয়ে।

সেই নৈপথ্যের ১৮৫৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুতা কারখানার শত নারীরা রাস্তায় নেমেছিলেন, বেতন বৈষম্য, কর্মঘন্টা ও কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে।   

আজো দেশে দেশে নারীরা সেই বৈষম্যের শিকার।

পৃথিবীতে প্রানী পাখি ফুল লতা পাতার লিঙ্গ নির্ধারনে কোন ক্ষেত্রেই বাছবিচার করা হয় না। পৃথিবীর সকল প্রানী একসঙ্গে বড় হয়, একসঙ্গে বেড়ে ওঠে, স্বজাতির দ্বারা কোন বৈষম্যের শিকার হয় না। একমাত্র মানুষ জাতী নিজেদের মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হয়।

মানুষের পৃথিবীতে মানুষে মানুষে কোন তফাৎ নেই, কেন তফাৎ হবে? লিঙ্গ বৈষম্যের নামে নারীকে অবজ্ঞা অবহেলা করা হবে? একজন পুরুষ যে পোষাক পরতে পারবে, একজন নারীও সেই পোষাক পরতে পারবে। 

একজন পুরুষ যেখানে যেতে পারবে একজন নারী ও সেখানে যেতে পারবে। এভাবে, চাকরি, পেশা, শিল্প, সাহিত্য, প্রশাসন সর্বক্ষেত্রেই নারী এবং পুরুষের সমান অধিকার।

 তৃতীয় বিশ্বের দিকে তাকালে নারী পুরুষের বৈষম্য বুঝা যায়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার যাতে পরিবর্তন না ঘটে সেই অজুহাতে নারীকে বাধ্য করে দুর্বল রাখা হয়। নারীকে ছোটবেলা থেকে শিখানো হয় তুমি অবলা, তুমি অক্ষম। সার্কাসে পালিত হাতির মতো, নারীরাও ভুলে যায় তারাও মানুষ। দাদি-মা যেমন করে নির্যাতিত হয়ে সংসার করে এসেছেন যুগ যুগ থেকে তারাও মনে মনে মানিয়ে নেন এমন রীতি।

মানুষের সৃষ্টি কুসংস্কার এক সময় নিয়ম-নীতি হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। 

নারী দিবসে আজ কয়েকটি ধারনার কথা বলবো-

(এক)
পরিবারের অজ্ঞতা, দারিদ্রতা নারীদের প্রথম শত্রু :  

গ্রামের একটি মেয়ে যদি মাধ্যমিক পাশ করে সৌভাগ্যবশত শহরতলির কোন কলেজে ভর্তি হয়, তাহলে প্রথমেই নিজ পরিবারের বয়োজ্যাষ্ঠ অভিভাবক শত্রু হয়ে যায়। মা কিংবা বাবা যদি স্বপ্ন দেখেন মেয়েটাকে কলেজে পড়াবেন, তাহলে মেয়েটির দাদা-দাদী, ফুফা-ফুফু, চাচা-চাচী, সব আত্মীয়রা নিষেধ করে বসেন। আমাদের ঘরের কোন মেয়ে বাড়ীর বাইরে কোন দিন পড়তে যায়নি, তোমার মেয়ে কলেজে গিয়ে পরিবারের ঐতিয্য ভেঙ্গে ফেলবে। বাড়ী, পাড়া-প্রতিবেশী কী বলবে, এসব ভয় ভীতি দেখিয়ে সদ্য মাধ্যমিক পাশ করা মেয়েটির মা-বাবার মনে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। মা চিন্তা করেন গ্রামের কোন ছেলে যদি কলেজে যাওয়া আসার সময় যুবতি মেয়ের সঙ্গে কোন অঘটন করে ফেলে?

বাবা চিন্তা করেন দু-বেলা ভালো করে ভাত খেতে পারি না, কলেজের এত খরচ-পাতি কী করে চালাবো?

যদি ছেলে হত তাহলে আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে লজিং রেখেও পড়ানো যেত। এভাবেই পরিবার থেকে ছেলে-মেয়ের বৈষম্য শুরু হয়। 

শৈশব কৈশরের খেলাধুলা, মাছের মাথা, টেবিলে বসে বাবা-ভাইয়ের সঙ্গে খাবারের প্রসঙ্গের কথা আর নাইবা বললাম।

শহরের কোন মেয়ে যদি ডাক্তারি পড়তে এক শহর থেকে অন্য শহরে যায়, কিংবা যে ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাবে, সেই ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে চায় আজোও সেই গ্রাম্য মা-বাবার মতো বখাটে ছেলে আত্মীয় স্বজন, মান-সম্মান, হোষ্টেল, লজিং, একা মেয়ে, অপরিচিত জায়গা এই সেই সমস্যার কথা ভাবা হয়। একমাত্র মেয়েদের ক্ষেত্রেই তাই ঘটে।

নারীর শত্রু প্রথমেই পরিবার থেকে আরম্ভ হয়। নারীকে উত্যক্ত করলে পরিবার মেয়েকে চুপ থাকতে বলেন। মেয়েকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে পোশাক আশাকের পরিবর্তন করেন। অথচ একটি মেয়ের প্রথম ও পরম বন্ধু হলো তার পরিবার, সচেতন শিক্ষিত পরিবারের মা-বাবারা ছেলে ও মেয়ে কে কখনো দু চোখে দেখেন না।

ছেলে যা করবে মেয়েও তা করতে পারবে। ছেলেরা যা করলে দোষের মেয়েরা তা করলে দোষের। ছেলেরা বিয়ে করে স্ত্রী তালাক দিলে যেভাবে সহজে মেনে নেন, মেয়েও কারনবশত স্বামীর বাড়ী থেকে তালাকপ্রাপ্ত হয়ে ফিরে এলে মেনে নেন। সমস্যা, অসুবিধা, পছন্দ, শুধু ছেলেদের নয় মেয়েদেরও আছে, এটা অসচেতন মা-বাবারা বুঝতেই চান না।

(দুই) 
অযোগ্যতা, সহজে মেনে নেওয়া নারীদের প্রধান বাধা : 

একজন শিক্ষিত নারী কখনো অন্য দশটা গৃহিনীর মতো নির্যাতন সহ্য করে না। স্বামী কিংবা মা-বাবারা অপারগ হলে নিজে চাকরী-বাকরী করে নির্ভরশীল হয়ে উঠেন। একজন নারী যদি শিক্ষিত না হয়ে ও অন্য ক্ষেত্রে কোন যোগ্যতা অর্জন করেন, যেমন খামাড়, কৃষি, ট্রেইলার্স, কুটিরশিল্প, ব্যবসা এমনকি দিন মজুরের ও কাজ করেন, তবে তিনি শুধুমাত্র খাবারের জন্য পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে থাকেন না। একজন রিকশাওয়ালার চতুর্থ স্ত্রীও স্বামীর ঘর থেকে ফিরে যেতে চায় না শুধুমাত্র বাচ্ছাদের নিয়ে কী খাওয়াবে, কীভাবে পালবে এই ভয়ে। অথচ অনেক অনেক নারী আছেন যারা নিজে স্বাবলম্বী। নিজে নিজের চিন্তা ভাবনার নির্ধারক। এর প্রধান কারন হলো তারা স্বনির্ভর। নিজেরা উপার্জন করেন।

অন্যের হাতের উপর তাকিয়ে থাকেন না। অন্যের উপর নির্ভর হলে যে কোন মানুষই নিজের পছন্দ অপছন্দ নিজে নির্ধারন করতে পারে না। কারন তার নিজের ভাগ্য অন্যের হাতে। ভাগ্য নির্মাতা যাই হুকুম দেন তাই পালন করেন। তৃতীয় বিশ্বের নারীরা প্রতিদিন কোন খাবার, কোন পোশাক, কোন স্থান পর্যন্ত পা ফেলতে পারবেন তা নির্ধারন করে পুরুষেরা। কারন কট্টর পুরষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নারী একটি প্রানী মাত্র।

সহজে মেনে নেওয়া নারীদের একটি সহজাত অভ্যাসে পরিনত হয়ে গেছে। সামান্য বাধা এলেই কোন প্রতিবাদ না করে ভয় পেয়ে, নিজেকে দুর্বল, বদনাম, অপবাদ গুঞ্জন এসবের কথা ভেবে অন্যায়টুকুও মেনে নেয়। ধর্ষণের মতো জঘন্যতম অপরাধকেও নারীরা মেনে নেয়, মুখ খুলে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়টুকুও প্রকাশ করতে পারে না। কারন ছোট ছোট অন্যায় নারীরা মেনে নিতে নিতে বড় অপরাধও সহজে মেনে নিতে শিখে গেছেন। সমাজ বব্যস্থাই বাধ্য করেছে এমন মেনে নেওয়াকে।

(তিন)
কোমলতা, সরলতা, কুসংস্কারে আচ্ছন্ন নারী : 

নারীকে শিল্প-সাহিত্যে কোমল, সরলা, সহজ, দয়ালু, অবলা, দুর্বলা, রমনী, মেয়ে মানুষ এমন উপমা দিতে দিতে নারীকে বাস্তবেই যেন এমন রূপ ধারন করে দিয়েছেন। এজন্য অবশ্যই কবি-সাহিত্যিক, লেখকরা কম দায়ী নয়। তাছাড়া পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবী লেখকের সংখ্যা কম নয় এ পৃথিবীতে। অতি অনুরাগী সাহিত্যিকরা শৈল্পিক রূপ বর্ণনায় নারীকে করেছেন বৈষম্যের শিকার। 

ফরাসী ভাষার প্রতিটি শব্দের আগে লিঙ্গ নির্ধারন আছে। যেমন বাড়ী, ডাস্টাবিন, সুটকেস, রান্নাঘর বলতে গেলে ও এসব শব্দের পূর্বে কোন লিঙ্গের তা লিখতে হবে। ধরুন আপনি কলম বলবেন। কলমের ফরাসী ভাষা হলো- Stylo, কিন্তু  Stylo বললে হবে না। বলতে হবে - le Stylo, (the stylo) le হলো Masculing.  La হলো Femini.   এর মানে হলো কলম হলো পুরুষ লিঙ্গ।

তাহলে শুরুতে বলা বাড়ী, ডাষ্টবিন, সুটকেস্, রান্নাঘর বলতে, 

বলতে হবে- বাড়ী = la Maison, ডাস্টবিন =  la Poubelle, সুটকেস = la valise, রান্নাঘর =  la Cuisine

ফরাসী ভাষার এমন এমন শব্দ  Feminin যে পড়তে গেলে গলা কন্ঠ থমকে যায়। একটি ভাষার সঙ্গে লিঙ্গ বৈষম্যের এমন করুন অবস্থা যে, যে কোন সুস্থ্য মানুষ সহজে বুঝতে পারবেন নারী পুরুষের তফাৎ। ফরাসী ভাষায় অনুদিত ও লেখা পৃথিবীতে সকল  সাহিত্যের শ্রেষ্ট গল্প উপন্যাস। সেই ফরাসী ভাষায় যদি সকল মন্দ শব্দ স্ত্রী লিঙ্গ হয়। তাহলে বাংলা ভাষার দুর্বল, অবলা, কোমলমতি, সরলা উপমায় রচিত গল্প উপন্যাস কবিতায় কী দোষ?

এসব বৈষম্যের কারনে ও নারীকে পুরুষ থেকে আলাদা করে দেখে সমাজ। নারী নিজে নিজে তা ভাবতে শিখেছে।

(চার)    
নারী নারীর শত্রু কথাটি পুরাপুরি মিথ্যে নয় :

পুরুষেরা কঠিন বিষয়কে ও সহজে চাপা দিয়ে রাখতে পারে। মানসিক চাপের মধ্যে বড় হওয়ার কারনে নারীরা অল্পতেই অস্থির হয়ে যায়। সামান্য কোন কিছু হলেই মাথায় তুলে নেয়। একজন অন্য জনের সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি অপ্রয়োজনীয় খাতির বাড়ায়। কিন্তু তারা বুঝে না অতি মিষ্টিতে পোকা আসে। এরপর শাড়ীর রঙ নিয়ে তর্ক করতে করতে বন্ধুত্ব নষ্ঠ করে। তাছাড়া বৃদ্ধ নারীরা তার চেয়ে কম বয়সী নারীদের সহজে মেনে নিতে পারে না। নিজেদের অক্ষমতা, নিজেদের দুর্বলতা, নিজেদের অপারগতার ক্ষেত্রে যদি অন্য কোন নারী  তা পারে তবেই হিংসা করে। নারী নারীদের শত্রু কথাটা পুরাপুরি মিথ্যা নয়, আবার পুরাপুরি সত্যও নয়। তা নির্ভর করে স্থান, কাল, পাত্র ভেদে। একজন নারী যখন মা তখন ছেলের স্ত্রীকে আপন ভাবতে অনেক মা সহজে পারেন না। আবার একজন নারী যখন নিজে স্ত্রী তখন স্বামীর মাকে আপন ভাবতে দ্বিদ্বা হয়। এগুলো ও পুরাপুরি সত্য নয়। তা নির্ভর করে ঐ শাশুড়ী – বউমার পরিবারের পরিবেশের উপর।

(পাঁচ)
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা :

যেসব রাষ্ট্রে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা রয়েছে, সেসব রাষ্ট্রে কখনো নারীকে একজন মানুষ হিসাবে স্বীকার করে না। সর্বদা নারী হিসাবে সম্মানের নামে অবহেলা করে। কাজের ক্ষেত্রে নারীদের মজুরী কম দেওয়া হয়। দেখা যায় সারাদিন কাজ করে একজন পুরুষ দিনমজুরের বেতন ৩০০ টাকা দেওয়া হলে একজন নারী দিনমজুরের হাতে ২০০ টাকা দেওয়া হয়। কারন সে নারী।

বাংলাদেশে কয়েকদিন পূর্বে একজন নারী কাজী পেশার জন্য আবেদন করলে তাঁকে নারী হওয়ার অজুহাতে তাকে অযোগ্য ঘোষনা করা হয়। ঐ নারী আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত তার মামলা খারিজ করে দেন।  

একজন নারী কোন বিপদে পড়ে কিংবা চাকরীর প্রয়োজনে অথবা ভ্রমণে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গেলে, কোন হোটেলে উঠতে গেলে তাকে হোটেলে রুম দেওয়া হয় না সঙ্গে যদি পুরুষ মানুষ না থাকে।

রাত ১০ টার পর কোন ভদ্র পরিবারের নারী গাড়ীতে কোথাও গেলেই রাষ্ট্রের পুলিশ পর্যন্ত নারীকে বেশ্যা বলে ধারনা করে। গাড়ীতে উঠলে ড্রাইভার থেকে শুরু করে সাধারন চায়ের স্টলের বেকার যুবকটি পর্যন্ত ঐ নারীকে মন্দ দৃষ্টিতে দেখে।

একজন নারী যদি গাড়ী, মোটর সাইকেল কিংবা সাইকেল চালায়, তার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকে লোকজন যেন সে আকাশ থেকে পড়েছে। যেন অস্বাভাবিক কিছু করে ফেলেছে। একজন নারী যদি সিগারেট খায় তাহলে সে নষ্ঠা হয়ে গেলো। অথচ এসব কাজ, এসব চলা, এসব খাবার পুরুষরা খায় তা একদম সহজে সমাজ মেনে নেয়। কারন কী?

(ছয়)
শিক্ষিত নারীদের নির্লজ্জ ভাবা হয় :  

একজন শিক্ষিত সচেতন নারী তার প্রয়োজনে সে চলে, বলে, করে।

কিন্তু একজন চাকুরীজীবী নারীকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা মুর্খ কূপূমন্ডকেরা পাপী, নষ্ঠা, নির্লজ্জা এই সেই মন্দ আখ্যায় ভূষিত করে সাধারন মানুষের ভেতর কুসংস্কার শিক্ষা দেয়। নারীদের স্কুল কলেজে যাতে না পড়ানো হয় এর জন্য ওয়াজ- নছিয়ত করে বুঝানো হয়। নারীদের ঘরের ভেতর বন্দি করে রেখে, বছর বছর বাচ্ছা পালন করতে বলা হয়। ঐ সব ভন্ড কূপূমন্ডকের ধারনার বাইরে যখন শিক্ষিত নারীরা চাকরী-বাকরী এমন কি রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে সমাজের সকল গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডে দায়িত্ব পালন করে। যখন একজন নারীর নির্দেশে সমাজের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড চলে, তখন তথাকথিত পুরুষ প্রভুরা মেনে নিতে পারে না। তারা শুরু করে নানা প্রপাগাণ্ডা। এমন তথাকথিত পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার জন্য নারীরা নির্লজ্জ, নষ্ঠা হলেই ভালো।

সাত
নারী সুস্থ মানুষ :

একজন নারীর পরিচয় সর্বপ্রথম সে মানুষ। তারপর সব কিছু। এর বাইরে যা কিছু আছে সব অজুহাত। অন্যের অপরাধের জন্য নারী কখনো দায়ী নয়। নারীর জীবন নারীর। সে কি করবে এটা তার ইচ্ছা। নারীর পছন্দ নারীর। সে নিজেই তা বাচাই করবে। নারীর সমস্যা ও ভুলও নারীর। নারীর বিষয়ে বলার আগে নিজের দিকে দৃষ্টি ফেরাও। নারীর জীবনগল্প তোমার বলার বিষয় নয়। তুমি তোমার জীবনগল্প বলো।

(আট)
নারীর জয় চিরকালের : 

আদিম যুগ থেকে নারী সংগ্রাম করে নিজের পথ মত বেঁধে নিয়েছে। আজো করছে। নারী পারে। পারছে। নারীকে লিঙ্গ বৈষম্য দিয়ে দাবানোর থামানোর দুর্বল করে রাখার যুগ শেষ হয়ে গেছে। নারী জেনে গেছে হাত, পা, চোখ, নাক, কান পুরুষের সমান। নারী মঙ্গল গ্রহ জয় করেছে। পৃথিবীর রাষ্ট্র পরিচালনা করে নারী। নারীকে মানুষ ভাবার দায়িত্ব শুধু নারীর নিজের। 
নারী কিছু বলতে চাইলে মুখ খুলবে, নারী হাটতে চাইলে পা ফেলবে, নারী দেখতে চাইলে চোখ খুলবে। নারীর ইচ্ছা-অনিচ্ছা সব তার নিজের। নারীর জীবন শুধু নারীর। কারন নারীর প্রথম পরিচয় হলো নারী মানুষ। মানুষের যা অধিকার, নারীর ও তা।

শামীমা কালাম। কানাডা