অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
সূর্যহীন পৃথিবীর আবডালে - স্বপঞ্জয় চৌধুরী

সূর্যহীন পৃথিবীর আবডালে 
প্রত্যহ লেখা হয় কতশত হরিণীর কাব্য 
সাগরে, ডিবিতে, জংগলে 
হলুদত্বে ভরে দেয় অগণিত হিংস্র বাঘ।
দু'খানা শুকনো বাকরখানি নিয়ে
সমুখে বসে আছে তিনটে কুকুর 
অনাহত বিষের হাসফাসে 
তাদের লালায়িত জিহবার অগ্রভাগ
ছুয়ে দেখেনি তৃষিত খাদ্যের দেহ।
চারিদিকে হলুদ, চারিদিকে ঘোর অন্ধকার 
চিরহরিৎ বনে চুপচাপ জ্বলছে 
জোনাকের নিষ্পাপ আলো।
নুন লাগা জলের আভাস শুনি ওই
হাংগরের দিন শেষ হলে বুঝি
এখানে ছুটে আসবে শত শত জলজীব,
ফ্লাইং ফিস, রাজ কাকড়া
আর জেলিফিশের স্বচ্ছতা। 

সূর্যহীন পৃথিবীর আবডালে প্রত্যহ 
এখানে চলে মৃতদের সংগীত, 
প্রাচীন গুহার ভেতর বাসা বেধেছে ডায়নোসর 
মাকড়সার জালে আটকে আছে আদম সভ্যতা,
ফসিলের গায়ে লেগে আছে ফসিল 
ধ্বংসপ্রাপ্ত কয়লার গায়ে লেগে আছে
পৃথিবীর জন্মস্বাক্ষর, ইউরেনিয়াম, মিথেন গ্যাস।
এখানে চলছে এখন রাত্রির মওসুম 
দেবিদের প্রেতনৃত্য শেষ হলে
এখানেও সহসা জ্বলে কিছু জোনাক
জ্বলে কিছু প্রলয়ের আভাস। 
বাঁশিতে জন্মে কী প্রলয় নাকি
সমুদ্রের অগণিত বুদবুদে
ঘুমন্ত সব আগত অনাগত প্রাণের বুকে
লেখা আছে প্রলয়ের বাণী 
সব কণ্ঠ, সব হাত, সব আত্মা
মিলে মিশে একাকার হলে
এখানেও নেমে আসবে আলোকিত মহাপ্রলয়।

স্বপঞ্জয় চৌধুরী
প্রভাষক, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ, 
সাউথ পয়েন্ট কলেজ
ঢাকা, বাংলাদেশ