সুমন বনিক এর তিনটি কবিতা
শুধু দীর্ঘশ্বাস হেঁটে যায়
মৃত্যু এসে নিয়ে গেলো আকাশের খুব কাছে
এ দেহটা লীন হলো নীল হয়ে গেলো আশা
কান্না জলে ডুব দিলো চিরচেনা মুখ গুলো
বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে আকাশের ভালোবাসা।
কারো কারো আহাজারি আকাশের ছাদ ছুঁলো
ডানা মেলে ওড়ে গেলো একঝাঁক বুনোহাঁস
কান্না শুষে খরাফাটা মাটি করে ফিসফাস
কিছু কালো আঁধারেরা ঘরে এসে খিল দিলো।
কোন এক ঘাস ফুল টুপ করে ওঠে আসে
নিথর এ দেহটাকে ছুঁতে চায় ভালোবেসে
টিয়ে পাখি শিস দিয়ে কী বলতে চেয়েছিলো
সুরমার আর্তনাদ কানে ঠিক বেজেছিলো!
কয় দিন সুনসান অতপর উবে যায় শোক
সুখ-সারি উড়ে এসে জুড়ে নেয় ভালোবাসা বুক
গোলাপেরা কেবলই মৌন ধ্যানে নীরবে যে কাঁদে
আকাশের তারা গুলো মমতার জালে শুধু বাঁধে।
ফ্রেমে সাঁটা ধুলো মাখা ছবিখানা ঝুলে থাকে দেয়ালের গায়ে
প্রজন্মের হাত ধরে দীর্ঘশ্বাস হেঁটে যায় মৌন পায়ে পায়ে
বীক্ষণে হতাশার ডালপালা
টেলিস্কোপ দিয়ে এখন
চাঁদ দেখি না
খুঁজি-না নক্ষত্রকুঞ্জ
কিংবা মহাকাশের অলি-গলি
এখন শুধুই মানুষ খুঁজি
আলোয় ধোয়া--রোদে স্নান করা মানুষ।
মানুষ নাকি ডায়নোসারের মতো
লুপ্তজাতি হয়ে যাচ্ছে!
সন্দেহ ঘুরপাক খায় ইথারে ইথারে
উটপাখির মতো বালুতে মুখ গুঁজে
মানবতার মহাকাব্য লেখা হচ্ছে দেদারসে।
টেলিস্কোপে চোখ সেঁটে
কেবলই মানুষ খুঁজি, অথচ
পৃথিবীময় চষে বেড়ায়
মানুষের সাদৃশ্য প্রাণি।
বসন্ত বিলাপ
পলাশ এসে শিমুল এসে বললো কানে কানে
এই ফাগুনে আগুন কী-যে লাগলো সব খানে?
দরজা খুলে উড়াল দিলো মনের যতো পাখি
এই ফাগুনে রঙটি মেখে খুললো কার আঁখি!
ঐ ললনার হলদে শাড়ি আজ বাতাসে দোলে
কার মনেতে ফাগুন এসে স্বপ্ন দুয়ার খুলে।
ভর দুপুরে কোকিল এসে গান শুনিয়ে যায়
কার হৃদয়ে শিমুল এসে প্রেমের পিছু ধায়।
বাসন্তি রঙ শাড়ির ভাঁজে মনের কথা নিয়ে
কে যে খোঁপায় গাঁদা ফুলের সুবাস গেলো দিয়ে
কৃষ্ণচূড়ায় মন ভিজিয়ে উদাস হলো ক্ষণ
ভালোবাসার রঙ ছিটিয়ে প্রেমিক কতো জন।
সুমন বনিক। সিলেট
-
ছড়া ও কবিতা
-
09-03-2021
-
-