আবদুল্লাহ আল আহনাফ এর কয়েকটি কবিতা
অনুরূপা
আজি মধুর লাগে সকল বিহ্বলতা
বাণীহারা যবনিকা আলোছায়ার জাগানিয়া আশালতা;
আমি আপনার চোখে দেখেছিলেম,
নিরুদ্দেশ লিখা ছিল তাতে
তুমি সুন্দর মম বকুল-ঝরার প্রাতে।
রঙ্গভূমির আভাসটুক
প্রণয়ের শব্দেরা তোমারে লয়ে খেলুক,
আমি দূর হতে চাহি চোখের পানে
স্নিগ্ধ সুভাস লেগে আছে তাতে ঢের;
আহারে! মুখখানা যেন সুভাসিত গোলাপের।
চৈত্রসন্ধ্যায় জাগানিয়া গানের মরমে,
উঠেছে বাজি সকল রাগিনী
অরণ্যের বিজন তীরে তাহারই স্নিগ্ধ চরণখানি।
অকারনে সুরের আবরণে
নিয়েছিনু কিনে;
একখানি নাম দোলায় করিনু অভিধান
মম প্রণিধান।
অরুনা, বরুনা সুরঞ্জনা কিংবা বিরহবিধুর অবকাশ
ভাঙার গান করে খেলিছে বাতাস,
ধরে একখানি নাম-শুধু একখানি নাম অনুরূপা।
মৃন্ময়ী
মৃন্ময়ী,তুমি কোথায় যাবে বলো?
নরম আলোর কাছাকাছি এসে তুমি বিহ্বল হলে
হারাতে চাও কি, যেখানে আঁধার খেলে?
বোধোদয় হয় না কি তোমার?
আমরা ছিলাম কাছাকাছি, সন্নিকটে
যেমন'টি থাকে ডোবার জলে দু'টো শক্ত খোলসের শামুক।
শরীরী সব চাহিদা কি চিরকাল থাকে?
জীর্ণ হয়ে আসে তো নরম স্নিগ্ধ স্তন কিংবা সুঠাম উরু!
প্রেম থাকে ছড়িয়ে কালের অববাহিকায় চিরদিন,
আমৃত্যু প্রেম থাকে মনে, শরীর নয়।
মৃন্ময়ী, সেখানে যেয়ে আর লাভ নেই বিশেষ
চলো প্রেমে মত্ত হই দু'জনে,
শরীরী ছোঁয়া লেগে আছে ফসিলে
থাকুক না-হয় আরো কয়েক আলোকবর্ষ।
শান্তিপুরী
মেনি ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রিটেশান অথবা
সমান্তরাল মহাবিশ্বে আমি জেগে থাকা ছোট্ট চড়ুই ;
জেগে উঠি আর ঘুমাই কিংবা ভালবাসি সুদীপ্ত চোখ।
আমাকে সঙ্গমের জোয়ারে ভাসিও না এবং
দু'বেলা দুমুঠো আশা দিও।আমি রাজা হব তথাকথিত সমাজের
ভাত মেঙে খাওয়া যায়, লোকেরা দেয়ও কিন্তু
প্রেম ঐশ্বরিক পরিকল্পনায় তৈরি। সাধনায় মেলে।
আমি তোমাদের মহাবিশ্বের ধারণার বাইরে বিস্তৃত ;
এখানে রোজ স্বপ্ন আহত হয় নারীর অস্পষ্টতা আর
ছলনার জন্য। তোমরা যাকে প্রেম বলে অভিহিত করো সেটা
আমি বা আমাদের লোকেরা কখনো দেখেনি। মৃন্ময়ী মূর্তির সঙ্গে আমরা খেলা করি নিত্য দিন
অথচ আমরা অপ্রেম নিয়ে বেঁচে থাকি।
আমাদের মহাবিশ্বের নাম শুনবে? হিংসা অথবা অহমিকায় পূর্ত পেট আমাদের। নাম শান্তিপুরী 'তে
লিখা আছে, প্রেমের আনন্দ থাকলে সেখানে তোমাদের স্বাগতম।
আবদুল্লাহ আল আহনাফ। বাংলাদেশ
-
ছড়া ও কবিতা
-
25-06-2021
-
-