অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
অমিতা মজুমদার এর দু"টি কবিতা

ঘাসফুল জীবন
মার নিজের কথা কীইবা বলার আছে?
 কবে কোনো এক গাঁয়ে, 
জন্মেছিলেম ঘাসফুল হয়ে।
শুকিয়ে যাওয়া ঘাসফুল ভাসতে ভাসতে, 
কখন যেন ইট বালু সিমেন্টের সাথে মিলে, 
মহানগরের অট্টালিকার এক কোণে ঠাঁই পেয়েছি। 
ভুলেই গেছি গাঁয়ের মাটির ভিজে গন্ধ, 
হারিয়ে ফেলেছি নিজের পরিচয়। 
হয়ে গেছি নাম গোত্রহীন, 
দীর্ণ প্রাচীরের একটুকরো পলেস্তারা। 
হয়তো একদিন খসে পড়ব, 
তারপর মিশে যাব মাটির সাথে। 
এরই নাম হয়তো বা জীবন !!!

সন্তানসম্ভবা মা ও মৃত্যু
মৃত্যু সব সময়েই কষ্টের,
যার পরে আর কিছু নেই।
অনন্ত শূন্যতা!
তবু সে কষ্টের তারতম্য ঘটে জাগতিক নিয়মেই।
জরা বার্ধক্যে পর্যুদস্ত জীবন চায় মুক্তি,
পৃথিবীতে সে তখন হয়ে পড়ে পরিত্যাজ্য।
জন্মের পরে যে যাত্রা শুরু হয় তার পথ শেষ হয়,
শৈশব,কৈশোর, তারুণ্য,প্রৌঢ়ত্ব পেরিয়ে বার্ধক্যে।
পথের শেষে পৌঁছালে আর, থাকে না ছোটার তাড়া।
অলস অকর্মণ্য সময়ের নাগপাশ থেকে, 
তখব মুক্তি চায় জীবন।
তাই সে মৃত্যুতে থাকে মুক্তির আনন্দ,
কিন্তু....
মৃত্যু যদি হয় 
সন্তানসম্ভবা কোনো মায়ের!
একটি জীবন অঙ্কুরিত হয়েছিল তার গর্ভে,
নতুন আর একটি প্রাণ আসবে পৃথিবীতে। 
সেই মা যখন মৃত্যুর কাছে পরাজিত হয়, 
তার সমস্ত ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করেও.. 
তখন!
তখন হয়তো, 
বিধাতাকে অভিশাপ দিতেই মন চায়।

অমিতা মজুমদার। বাংলাদেশ