অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
স্বাধীনতার মানে - সামসুজ জামান

যে ছেলেটা  নেংটা পোটা ঘুরে বেড়ায় একা একা স্বাধীন তো সে ও,
স্বাধীনতার বোঝে না মানে তবে কিনা স্বপ্ন অনেক তার জীবনেও।
পেট ভরানোর একটু ভাত আর, একটা কাপড়  লজ্জা ঢাকার,
তাও যদি সে না পায় বলো, কি মানে এই স্বাধীনতার?
চায়ের দোকান রেস্টুরেন্টে ধোয়া মাজার কাজ করছে যে ছেলেরা,
জীবনে যারা বিদ্যাসাগর নাম শোনেনি, শিক্ষার স্বাদ পায়নি যারা,
রোগব্যাধিতে জরো জরো পঙ্গু হয়ে পড়ে থাকে ঘরের কোণে,
বলো দেখি স্বাধীনতা তোমার কথা এরা কি ভাই কিছুই জানে?
দুখিনী মায়ের বুক ফেটে যায় অশ্রু ঝরে অঝোর ধারায়।
কেঁদে কেঁদে অবশেষে নিরাশ হয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন হারায়।
যে মেয়েটা নিখোঁজ হল ক'দিন আগে কাল বিকেলে জঙ্গলেতে
মিলল দেহ ছিন্নভিন্ন । মা কি এখন স্বাধীনতার সেই খুশিতে উঠবে মেতে?
রোগ এলো এক বিশ্বজুড়ে কোভিড ১৯ জীবাণুরা সূক্ষ্ম বটে সত্যি সেটা।
তবে কিনা আমীর, গরিব,  সংক্রমিত, বাঁচছে না কো কোনই ব্যাটা।
তাই বলে কি ধনীর ঘরে রোজ দুবেলা ভালো-মন্দ খানা হবে?
স্বাধীনভাবে নিজের ঘরে ফিরতে গিয়েও পরিযায়ী শ্রমিক যে, তার প্রাণটা যাবে?
স্বাধীনতার মানে হলো স্বপ্ন দেখা নিজের মত, নিজের করে বাঁচতে পারা।
স্বাধীনতা বলে নাকো মন্দির মসজিদ ভেঙে দিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে ধর্ম নিয়ে বিরোধ করা।
হরণ  হবে স্বাধীনতা বলা কওয়ার, হরণ  হবে নিজের মত পথটি চলার,
খাবার খেলেও মানতে হবে অন্যের মত সেই স্বাধীনতা সহ্য করা সত্যিই ভার।
স্বাধীনতার আন্দোলনে জীবন ঢেলেও করলো লড়াই যে মানুষ তাঁর কাহিনী-গাথা,
ধন-দৌলত হাসি মুখে সঁপে দেওয়া, স্বামী-সন্তান বিসর্জিতা মায়ের ব্যথা,
কে ভাবে বল? যদিও ভাবে, শুধু ভাবে পনেরোই আগস্ট কেবলমাত্র একটা দিনে।
এমন হলে বিশ্বমানব স্ফীত বুদবুদ, এই স্বাধীনতা নেবে না চিনে!

সামসুজ জামান। পশ্চিমবঙ্গ