অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
অমিতা মজুমদার এর দু'টি কবিতা

কিছু অসংলগ্ন আত্মজিজ্ঞাসা
নিরুপায়  মেয়েটি ধর্ষিত  হলো,  
তাই তাকে  মরতে  হবে।
কারণ সে  নিরুপায়  বলে  নয়,  
সে মেয়ে বলে।
বিয়ের আশ্বাসে  প্রেমিকের  আহ্বানে,
বিছানায় গেল মেয়েটি।
স্বাভাবিক  নিয়মে তার  গর্ভাশয়ে,   
গর্ভসঞ্চার হলো।
প্রেমিক প্রবর যথারীতি,  পালিয়ে গেল।
বিয়ের আগে  বিছানায়  যাওয়া মেয়ে,
কারো বউ হতে পারে না।
অবৈধ গর্ভধারণের  লজ্জা এড়াতে,
মেয়েটিকেই  মরতে হয়।
নপুংসক ছেলেটি  বীরদর্পে,  বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়ে। 
বছর না   ঘুরতেই মা'হতে না'পারার লজ্জায়,
মেয়েটিকেই  মরতে হয়।
এরকম  হাজারবার  মরার,
"মৃত্যু সনদ" নিয়েই একটি মেয়ে ভ্রুণ অঙ্কুরিত হয়।
একজন  পুরুষের, 
অহং থেকে।
তাই প্রশ্নটা এসেই যায়,
মেয়েরা কি  পারবে না ?
সমাজের দেওয়া   মৃত্যুসনদকেই,
মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার  ছাড়পত্র বানাতে? 
কখনো কি  এমন দিন  আসবে না?
যেদিন উলটে যাবে হিসাব।
লজ্জায়  আত্মহত্যা করবে ধর্ষক,
ধর্ষিতা নয়।
ধরিত্রী মাতার  মতো সসম্মানে, ফুলে ফলে পূর্ণ  বিকশিত হবে নারী।
স্বর্ণলতা হয়ে নয়,
সম্পূর্ণ মানুষ হয়েই বাঁচবে।

শরতের আহ্বান
রৎ যেন ডাকছে আমায়,
বলছে এসো চড়ি মেঘের ভেলায়।
যাই গো ভেসে  যাই মেঘের ভেলায়,
দূর আকাশের গায়।
নীল আকাশের বুকে ভাসে সাদা মেঘমালা যত,
ঝরে পড়া পাখির সাদা পালকের মতো।
ঘন নীলের মাঝে সাদা মেঘরাশি,
মনকে করে নিমেষেই উদাসী।
তাইতো মায়াময়, শিশিরস্নাত,
স্নিগ্ধ শরৎ এলে,
মনের মাঝে এক অবুঝ স্বপ্ন অকারণেই পাখা মেলে।

অমিতা মজুমদার। বাংলাদেশ