অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
রূপকথা অভিলাষ - ফরিদ তালুকদার

(‘নক্ষত্রহীন রাতের আকাশ' এর একটি উপস্থাপন) 
রূপকথায় ফিরে যেতে চাই
আমার পড়শীরা কেউ কেউ এখনো ঘুমান রূপকথার দেশে
প্রকাশ্য দিবালোকে তারা ঘোর নিদ্রায় যান সেখানে!

আমি নিরন্তর আকাশ পানে তাকিয়ে ভবিতব্যের নক্ষত্রকে খুঁজে ফিরি, আর—
আলো-আঁধারির গোলকধাঁধায় দূর্দান্ত তারা তৈরী করে ফেলেন একেকটি নিজস্ব পুলসিরাত
উত্তপ্ত নরকে কেমন বেশুমার গড়ে তোলেন স্বর্গীয় উদ্যান! 
তারা রূপকথার জন্ম দেন আমার মগজের ফুটন্ত উনুনে! 

আমি তাই রূপ কথার দেশে ফিরে যেতে চাই!

এখানে বৃষ্টি ঝরে না মাস, তবুও মানুষ ভাসে বানভাসিতে
কখনো চোখের কোণায়, কখনো ভাগ্যের নিমজ্জিত ভেলায়!

একদিন স্বাধীনতা এসেছিলো!?
স্বপ্নের রাঙা সিঁদূর চক্রবালে পরম পরশ এঁকে দিয়ে—
স্বাধীনতা এসেছিলো একদিন 
সেই হরিদাসী, জমিলার অকাল বৈধব্যকে এপিটাফ করে, স্বাধীনতা এসেছিলো

বোনের নিথর দেহে, ছিন্নভিন্ন নগ্ন বুকের আর্তচিৎকারকে সাক্ষী রেখে আসা, সেই কোনো এক স্বাধীনতা---
যাকে আমি দেখেছিলাম বলেশ্বরের স্রোতে ভাসমান লাশে
রাত জাগা ভোরে, লক্ষ যুবার উঁচিয়ে ধরা রাইফেলের অসম সাহসে
সে ও যে এখন খুব বেশি রূপকথা!

আমি রূপ কথায় ফিরে যেতে চাই!

এখানে চৌচির বিরানায় পুকুর ভরা মাছের গল্প শোনানো হয়!
গল্প শোনানো হয় স্বর্গীয় সুধা নহরের
এখানে ভুঁইফোড় বর্গীরা ক্যাটারপিলারের (Caterpillar) মতো সবটুকু সবুজ গ্রাস করে বুকের মানচিত্রে রাখেন শুধু এক রক্তাক্ত গোলক!

আহ্ পতাকা---!
আহ্ স্বাধীনতা---!?

বিজ্ঞানেই অনুরক্ত ছিলাম কিছুটা মনে পড়ে
কোনো ফ্যান্টাসি (Fantasy) গল্প নয়
সেখানেই মাথাগুঁজে ঠাঁই নিবো, এমন-ই তো কথা ছিলো শিশিরের আয়ূমাখা টলোমলো স্বপ্নে
অথচ ‘পাওলি এক্সুলশন প্রিন্সিপাল’ (Pauli Exclusion Principle) এর পাতাকে গুলে খেয়ে এখন আমি—
ভাগ্যের তলানিতে বেঁধে রাখি শেষ নিঃশ্বাস!
তবুও---
আকাশে হারানো ঐ দৃষ্টি পথে আমি কেবলই রূপকথায় ফিরে যেতে চাই!

কোনো কোনো সেই পড়শীরা বলতে থাকেন—
রূপকথা তো এখানেই রয়, এখানেই তো তার বাস!
কিন্তু---
আমি যে তার কিছুই দেখি না
দেখা পাইনি কোনোদিন-ই কোথাও!!

ফরিদ তালুকদার
টরন্টো, ক্যানাডা