অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
সিদ্ধেশ্বর হাটুই এর কয়েকটি কবিতা

এ এক অন্য চেতন
শোনো শোনো দেশবাসী, শোনো দিয়া মন
পরের হিতে জীবন দেয় কতিপয় মানুষজন।
কে যে ভাবে অন্যের কথা, তেমন পাগল কই?
চিতায় জ্বলছে মানবিকতা, পাকা ধানে মই।
নীতি আদর্শ গাছের ডগায়, খাচ্ছে খোলা হাওয়া
দুর্নীতি আর গুন্ডামিতে করছে সবারে ধাওয়া।
ফুলগুলো সব যাচ্ছে ঝরে, মালির দেখা নাই,
কোথায় গেলে কী করলে মালির দেখা পাই!
বাঁশ বনেতে ডোম কনা ভাই, কত রকমের বাঁশ
ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হবে, করবে হাঁসফাঁস।
শকুনের দৃষ্টি ভাগাড়েই থাকে, মাছধরার জলে
কিছু পাখির লক্ষ্য স্থির  ঐ গাছের পাকা ফলে।
মাকড়সা জাল বোনে বেশ- দেখতে লাগে ভালো,
যে জড়াবে ঐ জালেতে,  ভাই তার জীবন গেলো।
আগুনের তাপ পুড়িয়ে দেবে, সামনে যেওনা তাই,
জীবনের মায়া ত্যাগ করে তবেই লাফ মারবে ভাই।

চিতা
জ্বলছে চিতা পুড়ছে কত- শত মানুষ
আকাশে ঐ দেখো -উড়ছে প্রেমের ফানুস।
কান্নায়, কান্নায়   বিধ্বস্ত শহর থেকে গ্রাম
ডাকছে সকলে কেউ আল্লা, কেউবা  জিশু, কেউবা হরির নাম।
কেউ দেখছে চিতার শিখা ব্যঙ্গ ভরা চোখে,
আবার কেউ গিলছে বিদেশি খাবার ঐ সোনার মুখে।
খুদকুঁড়োটাও জোটেনা যাদের , পেটে জ্বলে আগুন
তাদের বুকের জ্বালা হার মানায়, শ্মশানের চিতার দ্বিগুণ।
সহায়তার দরজায় ঝুলছে  প্রকাণ্ড তালা, বাইরে পোড়া গন্ধ
যৌবন আজ মরছে পুড়ে-পুড়ে, জীবনের পথ বন্ধ।
শৃঙ্খল ভাঙার প্রচেষ্টা চলুক বন্ধু , এই জীবনের পথে
দাবানলের আগুনে পুড়বে সমাজ, দেখবে অদূর ভবিষ্যতে।

কেউ বোঝেনা মনের কথা
পাঁচমিশালি ব্যঞ্জনেতে যদি ঝিঙে হয় অত্যন্ত তেতো
এক ড্রাম দুধে এক ফোঁটা কেরোসিন,  বা-রে সেতো রাঁধুনিরই দোষ।
পঞ্চাশ পেরোলে যদি আসে যৌবন,  আবার আঠারোতে বার্ধক্য
ছ্যা ছ্যা একি উল্টো পাল্টা ,হচ্ছেটা কি , হয়না আফসোস।
দিনের বেলায় যদি চাঁদের আলো ,রাত্রে দেখি সূর্য
কলিযুগে এটাও দেখতে হবে, পোড়া কপাল ভাই ,আবার কেউ যেন নাহয় অভ্যস্ত।
শিক্ষক যদি ভুল করে ‘ক’ কে বলে ‘র’ মানবে সবাই?
দাদা -ও দিদি , মানলে সূর্য মামা এবার থেকে পূর্বে যাবে অস্ত।
বললে কথা দোষ হবে তোমার, হবে মূর্খামি ঐ গুনিজন্ –দের কথা,
এরা যদি  সমাজের গুরুজন হন, ও দাদা প্রাণে লাগে কত ব্যথা।
আঙুল ফুলে কলাগাছ হলে , হ্যাঁ  -হিতাহিত জ্ঞান কমে,
এই লোকগুলো সমাজে থাকলে  হালুম করে -খাবেই সবার মাথা।

স্বভাব
পালের গোরু ফসল খেলে
হয় কুড়ে বাগালের দোষ।
গোরুর মালিক রাখে বাগাল,
আর বাগাল রাখে গোরুর হুঁশ।
ফসল যখন গেছেই ভুখা পেটে
বদ-হজম হলে নিশ্চিত হবে বমি।
চুরির  ফসল হজম করলেও মোটাবে শরীর
ছাড়বে এ সুদর্শন মাতৃভূমি।
আবাদ মালিক বেজায় চটে
তাই  লম্বা লগুড় নিয়ে হাতে,
ফসল মাঠে গোরু দেখলেই তাকে পিটিয়ে
কানটি ধরে খোঁয়াড়ে যাবে দিতে।
খোঁয়াড়ের মালিক  পুষিয়ে- নেবে টাকা-কড়ি,
গোরুর মালিক বিলাপ করে দেবে গুনাগারি।
ছাড়া পেলেই আবার অবাধ্য গোরু , আবার খাবে…..
হ্যাঁ হ্যাঁ জানি  দোস্ত, লোকের ফসল খাবেই করে চুরি ।

সিদ্ধেশ্বর হাটুই
বাঁকুড়া, পশ্চিমবঙ্গ