অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
গোলাম কবির ।। কবিতা

আমার স্বীকারোক্তি
কিছু একটা লিখার জন্য মনটা ভীষণ
তড়পাতে থাকে জালে ধরা পড়া
কৈ মাছের মতো, প্রাণ যায় না চলে 
কিন্তু ভীষণ তড়পাতে থাকে। 
মনেহয় আমি যেনো কী বলতে চাচ্ছি 
অথচ বলতে পারছিনা, লিখতে চাচ্ছি 
কিন্তু লিখা আসছে না! 

এ এক ভীষণ অব্যক্ত এবং অদেখা কষ্টের
খাঁড়ায় পড়ে খাঁচায় বন্দি পাখির মতো
নিরুপায় বসে থাকা! একটা ভীষণ
অতৃপ্তির কষ্ট গ্রাস করে আমার 
আলোকিত সকালের স্নিগ্ধতা, 
বিষণ্ণ দুপুরে প্রখর রোদে ভেজা 
সময়ের ঘর্মাক্ত শরীরের ক্লান্তি, 
চাঁদের আলো জ্বেলে দেয়া সন্ধ্যায় 
নদীতে চিকচিক করতে থাকা ঢেউ 
বুকের মধ্যে কেমন একটা ঝিম মেরে 
বসে থাকা বালকের অনুভুতি আমাকে 
আচ্ছন্ন করে রাখে! আর রাত? 
সে তো ভীষণ অসহনীয়, একাকীত্ব 
গ্রাস করে এমনভাবে যেমন গ্রহণলাগা সূর্য, 
চারিদিকে ভীষণ অন্ধকারের মধ্যে 
একজন অন্ধজনের লাঠি হাতড়ে বেড়ানো। 

আমি তো আসলে কোনো কবিই নই! 
আমি শুধু আমার দেখা সত্যিটা,  
আমার রক্তাক্ত ক্ষতের কথা গুলো, 
ভাবনা এবং স্বপ্ন গুলোকে আমার দূর্বল 
এবং অপটু হাতে অক্ষরের মালায় গেঁথে রাখি। 
ভবিষ্যতই জানে এগুলো কোনো কবিতা
হয়েছে কীনা, তাই ভবিষ্যতের হাতেই 
ছেড়ে দিলাম সেগুলোর বিচার।

দিকশূন্যপুরে হারিয়ে যাবার পর
রুহের জগতে তাঁর সাথে হয়েছিলো দেখা,
সেদিন অন্য রুহ গুলোর সাথে সমস্বরে
তাঁকে বলেছিলাম ভালোবাসি এবং তাঁরই
বশ্যতা সেদিন মেনে নিয়েছিলাম শর্তহীন! 
কিন্তু তারপর! তারপর এই পৃথিবীতে এসে
আর কোনো দেখা নেই, কথা নেই -
তবুও তাঁকেই ভালোবাসি একথা বলতে
পারি বুকে রেখে হাত ! এখনো তাঁর কথা 
মনে হতেই চোখে নামে বৃষ্টি ভীষণ!
একটানা বৃষ্টিতে তখন ভিতরবাহির 
সবখানেই ভেসে যায় প্রবল বন্যায়! 
জানি আবারও দেখা হবে, কথা হবে 
কোনো একদিন দিকশূন্যপুরে যেদিন
হারিয়ে যাবো তারপরে! মহামিলনের
সেই সেদিনের অপেক্ষায় আমি বসে থাকি
হাপুস নয়নে রাত্রিদিন, প্রতিদিন।

গোলাম কবির। বাংলাদেশ