অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
যে খানে পথের শেষ - মুহাঃ হাবিবুর রহমান

মাটির দেয়ালে গড়া নড়বড়ে ঘর আর নোনা ধুলোয় বিধ্বস্ত মেঠো পথ
গোলপাতার চাউনিতে নাড়ার মটকা দেয়া চালে নিষ্ঠুর বুলবুলের আঘাত,
সারাদিন চলে হুমকি ধামকি গোমড়া মুখো আকাশে মেঘের দল
বাজে সাইরেন বিপদ সংকেত জীবন বাঁচাতে চল নিরাপদ আশ্রয়ে চল,
বুকের মধ্যে শঙ্কার ডঙ্কা চোখে ভাসে হায়েনার থাবা
এই বুঝি এলো নরকের ছোবল বাঁচার আশা নেইরে বাবা,
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্নি বায়ু রক্ত চোখের ভয়ে কাঁপে উপকূল
মরা গাঙে ভরা জোয়ারের বান বাঁধ ভেঙে নোনা জলে ভেসে এলো মরন শূল,
দিন ভর জলধারা ফোটায় ফোটায় অবিরাম ঝরে গাছের পাতায়
বাড়ির আঙিনা আগান বাগান হলো সিক্ত জল-কাদায়,
বেলা বেড়ে চলে রাত্রির কোলে ঘুমায়ে পড়ে সারা ধরাতল
অজানা ভয়ে কাঁপে (পদ্মপুকুর গাবুরা বুড়িগোলিনী আটুলিয়া) উপকূল বাসী-চিত্ত চঞ্চল,
আসমান থেকে নামবে জমদূত ঘটবে কেয়ামত
কে রুধিবে তারে বুকের মধ্যে আছে কতশত হিম্মত?
আইলা ফনী সিডরের আঘাতে এই লোকালয় কালে কালে বিপন্ন প্রায়
সহায় সম্বল হারা জায়া ও জননী শূন্য বুকে করে হায় হায়,
সেই স্মৃতি চোখে ভাসে কার্তিকের হিম বাহে রুদ্ধ শ্বাসে
সাজানো জীবন-ফুলের বাগান -ছবির মতো. গ্রাম হবে কি ছিন্ন জলোচ্ছাসে?
শত বর্ষী পিতার চোখে ভয়ের থাবা-প্রকৃতির নগ্ন নৃত্য মরন খেলায়
চারিদিকে হাকাহাকি দিন পার হলো ভালো কি হবে গো রাত্রি বেলায়?
দূরে মসজিদে শুনি কে যেন বলিছে কাতর কন্ঠে রাতে হানিবে মরণ ঘাত
জানমাল নিয়ে যাও আশ্রয়ে সবাই নইলে জীবন পাত
চোখে ভাসে মৃত্যুর হাতছানি কি যে অসহায় সেই ক্ষণে
তুলি দুই হাত করি মোনাজাত প্রভু নিরাপদে রেখ নিজ গুণে
গোয়ালের গরু ভয়ে বিহ্বল ছাগোল ভেড়া তেমনি প্রায়
খুটি ধরে কাঁদে অবুঝ শিশু চারদিকে শুধু হায় হায়
রাত বাড়ে ভয়ের সাথে বাতাসের বেগ বাড়ে দিয়ে পাল্লা
খোলপেটুয়ায় জল বাড়ে দুকূল ছাপিয়ে দিয়ে হল্লা....(অসমাপ্ত)

মুহাঃ হাবিবুর রহমান
নওয়াবেঁকী, শ্যামনগর
সাতক্ষীরা