হাজার হৃদয়ের দেশ - সুমন্ত দে
সকালের বেঘোর ঘুমের শেষে ঠান্ডা কনকন ,
জলের লাইনে দাঁড়িয়ে স্নান সেরে নেয় সাইমন।
ব্রেকফাস্টে জোর করে খাওয়ায় দুটো পোড়া রুটি।
মনে জাগে প্রশ্ন ,কে জানে? আজ তাঁর কি হয়?
কিবা তাঁর ত্রুটি।
সব অন্ধকার! চোখ বেঁধে নিয়ে যায় প্রহরী ।
কিছুক্ষণ পর , শোনা যায় কতগুলি পদধ্বনি।
বোঝে সে একা নয় ,বহু জন যায়।
তারাও কি সব নিরপরাধী?
ঘোর যেন কাটে না ,তবুও সে বোঝেনা -
কিবা তাঁর ত্রুটি?
দুপুরে তাদের কোথায় যে বসতে দেয়! কি যে খেতে দেয় !
কিছুই তারা বোঝে না। চোখ তখনও খোলেনি।
চোখ বাঁধা অবস্থায় সকলে যে কি খায় ?
খাবার খুব সুস্বাদু ,মন তাদের ভরে যায়।
বহু প্রশ্নের জবাব হদিস নাই
তবুও সাইমন সকলকে সাহস যোগায়।
স্টিভ ভাবলেসহীন ভাবে বসে রয় ।
এরপর কি যে হয় ? তারই অপেক্ষায়!
সে শোনে ধীরে ধীরে কোলাহল কমে যায়।
অনেকের কথা বলা থেমে যায়।
দূরে দুই প্রহরী ফিসফিস করে ,
এখন খানিক বিশ্রাম ।
বিকেলে আবার সকলকে নিয়ে যাব লাটের মতো করে।
যেখানে প্রচুর মানুষের ভিড়ে এদের প্রচার হবে।
স্টিভ সব শুনেও চুপচাপ চেয়ারে ,
গা এলিয়ে হ্যান্সীর কথা ভেবে -
স্মরণ করে মাত্র ১২ বৎসর বয়সে ওঁর কি প্রচার হবে?
মনে পড়ে হ্যান্সীর সাহসে ওঁদের গ্রাম রক্ষা পায় গত বছরে।
তাঁরই দেওয়া খবরে সকলে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাংকারে।
এরপর দেখে চারিদিকে আলো ঝলমলে।
তাদের সকলের জন্য পাতা চাদর মখমলে ।
এখানেই হবে তাদের প্রচার?
অথচ আয়োজন করা হয়েছে এত আপ্যায়ন আদর।
ভুবন কাঁপানো শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে ঘোষিত হল -
আজ এখানে হবে হাজার হৃদয়ের আহ্বান।
হবে তাদের সুবিচার, পাবে পুরস্কার নানান -
কেউ আত্মত্যাগের কেউ বা সাহসিকতার।
কারো বিশ্বাস নেই এই ঘোষণার।
সকলেই অবাক!
তাঁরা হাজার হৃদয়ের দেশের নাগরিক ?
এটা কিভাবে সম্ভব?
তবে তারা কি হয়েছেন শব!
তাতে প্রাণ অবশিষ্ট নেই আর?
সুমন্ত দে
জলপাইগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ
-
ছড়া ও কবিতা
-
12-12-2022
-
-