অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
বৈশাখী শুভেচ্ছা - অনিরুদ্ধ আলম

বৈশাখ এলে চারদিকে এক নতুনের ঘ্রাণ পাই
বৈশাখ এলে আদুরে আমেজে আনকোরা প্রাণ পাই। 
বৈশাখ যেন ঝলমলে ছায়াছবি
আলোছায়াজুড়ে দোলে মায়া-মায়া ছবি 
বৈশাখ এলে আনচান-করা মনটাতে টান পাই। 

আহ্‌ বৈশাখ! বাহ্‌ বৈশাখ! সারা বন-পাড়াগাঁয়  
প্রজাপতি ওড়ে। তাদের সাথীরা থাকে কোন পাড়াগাঁয়? 

বৈশাখ যেন টাপুরটুপুর খেলা
এ-পাড়া ও-পাড়া ঢোলকের বোল সারাটা দুপুর বেলা
দুয়ার জাঁকিয়ে জংলা রোদের জমকালো রোশনাই। 
বৈশাখ হল পিঁপড়ের সারি ফড়িঙের বাড়ি রঙে-রঙে খোলতাই  
চিত্রার বুকে চিত্রল জল করে যায় আইঢাই। 

শত শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতেই শালপিয়ালের দেশে
বৈশাখ এলে ঝড়ো হাওয়া ছোটে ডাকপিয়নের বেশে।

বৈশাখ এলে সকালসন্ধে রাতে
আমোদী ছন্দে বাতাসের বাঁশি নদী নিরবধি মাতে
মেলা হালখাতা নাগরদোলায় প্রাণ অফুরান পাই।
গৃহত্যাগী মেঘ হঠাৎ আবেগে এই আছে এই নাই – 
ডাকাবুকো বিল থেকেথেকে তাকে খুব কাছে ডাকে। ভাবে, ‘ডুব দিয়ে যাই!’

ধুধু রোদ্দুরে যদ্দূর চোখ যায়
তুলতুলে আলো আকাশের আঙিনায় 
কুসুমকুসুম উদ্দাম উমে নতুনকে ফিরে পাই।
বৈশাখ এলে নানা আয়োজন সবুজের ভিড়ে পাই
গ্রামান্তর কী দিগ্‌দিগন্তে প্রান্তর ঘিরে পাই। 

বৈশাখ যেন রঙিন ফানুস লাটিম নাটাই ঘুড়ি
টুকটুকে লাল ঝিলমিলে নীল হলদে রেশমি চুড়ি। 

বৈশাখ এলে শাখায়-শাখায় কত 
গাঢ় গাছে নাচে পাতার পাখিরা প্রফুল্ল অবিরত  
ঘাসবন আর বাঁশবনে জাগে উচ্ছ্বাস সহসাই। 
বাহারি দিনের উপহার নিয়ে বৈশাখ আসে, তাই 
মলিনতা সব উবে গিয়ে দূর-অজানায় নেয়  ঠাঁই। 

বৈশাখ এক মিষ্টি গন্ধে ঠাঁসা বর্ণিল বই 
পাতায়-পাতায় আল্পনা-আঁকা আনন্দটা অথই।

অনিরুদ্ধ আলম 
টরন্টো, কানাডা